Social Icons

Thursday, November 24, 2016

তিন শ্রেণীর ব্যক্তিকে আঘাত করলে আল্লাহর আরশ কেঁপে ওঠে


ইসলাম সকল শ্রেণীর মানুষের অধিকারের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা প্রদান করেছে। সমাজের যারা প্রতিবন্ধীদের অবহেলা ও অবজ্ঞার চোখে দেখে, তাদের মনে রাখা দরকার, (আল্লাহ না করুন) বিভিন্ন দুর্ঘটনা ও অসুস্থতার কারণে একজন সুস্থ-সবল মানুষও যে কোনো সময় শারীরিক সক্ষমতা হারিয়ে প্রতিবন্ধী হয়ে যেতে পারে।
তাই প্রত্যেক সুস্থ মানুষের উচিত, শারীরিক সুস্থতার জন্য আল্লাহর কৃতজ্ঞতার পাশাপাশি প্রতিবন্ধীদের প্রতি সহমর্মিতার হাত বাড়ানো। কারণ তাদেরও অধিকার রয়েছে স্বাভাবিক জীবনযাপনের।
ইসলাম প্রতিবন্ধীদের প্রতি সচেতন হওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। এ প্রসঙ্গে পবিত্র কোরআনে কারিমে ইরশাদ হয়েছে, ‘তাদের (বিত্তশালী)
ধনসম্পদে অভাবগ্রস্ত ও বঞ্চিতদের অধিকার রয়েছে।’ –সূরা জারিয়াত : ১৯ প্রতিবন্ধী, পাগল, অবলা বা নারীদের শরীরে আঘাত করলে আল্লাহর আরশ কেঁপে ওঠে।
হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) সমাজের সব শ্রেণীর মানুষকে সমান চোখে দেখতেন।
মৃদু বাকপ্রতিবন্ধী সাহাবি হজরত বেলালকে (রা.) মসজিদে প্রথম মোয়াজ্জিন নিয়োগ দিয়েছিলেন। দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী সাহাবি হজরত
আবদুল্লাহ ইবনে উম্মে মাকতুমকে (রা.) নবী করিম (সা.) দু’দু’বার মদিনার অস্থায়ী শাসনকর্তা নিযুক্ত করেন।
এমনকি হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) যখনই তাকে (আবদুল্লাহ ইবনে উম্মে মাকতুম) দেখতেন, তখনই বলতেন, ‘স্বাগতম জানাই তাকে, যার সম্পর্কে আমার আল্লাহ আমাকে ভর্ৎসনা করেছেন।’
উল্লেখ্য যে, নবী করিম (সা.) সাহাবি আবদুল্লাহ উম্মে মাকতুমকে (রা.) কোনো এক বিষয়ে অগ্রাধিকার না দেয়ায় আল্লাহতায়ালার সতর্কীকরণের মুখে পড়েন।
ঘটনাটি হলো- একদা নবী করিম (সা.) কোরাইশ নেতাদের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনারত ছিলেন। এমতাবস্থায় অন্ধ সাহাবি
আবদুল্লাহ ইবনে উম্মে মাকতুম (রা.) সেখানে উপস্থিত হয়ে নবী করিমকে (সা.) দ্বীন সম্পর্কে শিক্ষা দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। এতে আলোচনায় ব্যাঘাত সৃষ্টি হলে নবী করিম (সা.) কিঞ্চিৎ বিরক্তি প্রকাশ করেন।
নবী করিম (সা.) মক্কার জাত্যভিমানী কোরাইশদের মন রক্ষার্থে অন্ধ সাহাবি আবদুল্লাহ ইবনে উম্মে মাকতুমের প্রতি তখন ভ্রুক্ষেপ করলেন না। কিন্তু আল্লাহর কাছে এ বিষয়টি পছন্দনীয় হলো না।
সঙ্গে সঙ্গেই প্রতিবন্ধীদের অধিকারবিষয়ক পবিত্র কোরআনে কারিমের আয়াত নাজিল হয়; যাতে তাদের প্রতি ইসলামের কোমল মনোভাবের প্রকাশ পেয়েছে।
ওই আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, ‘সে ভ্রুকুঞ্চিত করল এবং মুখ ফিরিয়ে নিল, কারণ তার কাছে অন্ধ লোকটি এল। তুমি কেমন করে জানবে, সে হয়তো পরিশুদ্ধ হতো অথবা উপদেশ গ্রহণ করত।
ফলে উপদেশ তার উপকারে আসত।’ -সূরা আবাসা : ১-৪ এরপর থেকে নবী করিম (সা.) প্রতিবন্ধীদের বিষয়ে সতর্ক হয়ে যান। তাদের প্রতি ভালোবাসা বাড়িয়ে তাদের বিশেষ গুরুত্ব দিতে থাকেন।
প্রতিবন্ধীদের প্রতি ভালোবাসা প্রদর্শন নবী করিমের (সা.) সুন্নতও বটে।
যেখানে নবীকে (সা.) আল্লাহ সতর্ক করেছেন, সেখানে সাধারণ মানুষ প্রতিবন্ধীদের প্রতি উদাসীনতা দেখালে নিশ্চয়ই আল্লাহ অসন্তুষ্ট হবেন, এটা বলাবাহুল্য।
মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব। সমাজে সেই মানুষেরই একটা অংশ প্রতিবন্ধী। তারা আমাদের সমাজের অবিচ্ছেদ্য অংশ। তাছাড়া প্রতিবন্ধীদের প্রতি সহমর্মিতা পরকালে মুক্তির উসিলা।
মানুষ হিসেবে বেঁচে থাকার ন্যূনতম মৌলিক অধিকারগুলো তাদেরও ন্যায্যপ্রাপ্য। তাই প্রতিবন্ধীদের প্রতি আন্তরিক ভালোবাসা প্রদর্শন ও সহানুভূতিশীল হওয়া অত্যাবশ্যক।
যেমননি হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা ক্ষুধার্তকে খাদ্য দাও, অসুস্থ (প্রতিবন্ধী) ব্যক্তির খোঁজখবর নাও এবং বন্দীকে মুক্ত করে দাও।’ –সহিহ বোখারি

No comments:

Post a Comment

 

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি

সম্পাদকীয় কার্যলয়

Rua padre germano mayar, cristo rio -80040-170 Curitiba, Brazil. Contact: +55 41 30583822 email: worldnewsbbr@gmail.com Website: http://worldnewsbbr.blogspot.com.br

সম্পাদক ও প্রকাশক

Jahangir Alom
Email- worldnewsbb2@gmail.com
worldnewsbbbrazil@gmail.com
 
Blogger Templates