Wednesday, November 30, 2016
সিরিয়ায় গণহত্যা চলছে ----- জাতিসংঘে বৈঠকের আগমুহূর্তে ফ্রান্স
সিরিয়ায় রুশ বিমান বাহিনীর সহযোগিতায় বাশার বাহিনীর চার মাস ধরে চলমান অবরোধ ও বোমা হামলার মুখে আলেপ্পোতে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সবচেয়ে বড় গণহত্যা হতে পারে বলে সতর্ক করেছে ফ্রান্স। গতকাল বুধবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি বৈঠকের আগ মুহূর্তে এ হুঁশিয়ারি দেয় দেশটি। এদিকে মঙ্গলবার জাতিসংঘ জানিয়েছে, হাজার হাজার বাসিন্দা আলেপ্পো ছাড়ার চেষ্টা করলেও কোথায় নিরাপত্তার দেখা মিলবে তা অনিশ্চিত। প্রতিবেশী এলাকাগুলো হয় বিদ্রোহীদের হাতে, নয়তো বাশার বাহিনীর প্রচণ্ড হামলার মুখে। তাই মানবিক বিপর্যয় এড়ানো অসম্ভব হয়ে পড়ছে। খবর ইন্ডিপেনডেন্টের।
জাতিসংঘে নিয়োজিত ফ্রান্সের দূত ফ্রাঁসোয়া দেলাত্রে বলেন, 'বেসামরিক মানুষ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সম্ভবত সবচেয়ে ন্যক্কারজনক গণহত্যার মুখে পড়তে যাচ্ছে। ফ্রান্স এবং তার অংশীদার দেশগুলো এ পরিস্থিতিতে চুপ করে থাকতে পারে না।' তবে এরই মধ্যে রাশিয়া পাল্টা দাবি করেছে, বাশার বাহিনীর বিমান ও স্থল হামলার কারণেই পূর্ব আলোপ্পো 'মুক্ত' করা সম্ভব হয়েছে। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মেজর জেনারেল আইগর কোনাশেঙ্কো জানান, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পূর্ব আলেপ্পোর অর্ধেক এলাকাই জঙ্গিদের দখলে ছিল, তা সম্পূর্ণ মুক্ত করা সম্ভব হয়েছে। সবচেয়ে বড় কথা, ৮০ হাজার সিরীয় আর দশ হাজারের বেশি শিশু জঙ্গিদের হাত থেকে মুক্ত হয়েছে। অথচ পশ্চিমা প্রতিদ্বন্দ্বীরা শুধু অন্ধভাবে বিস্ময় প্রকাশ করছে। তারা আলেপ্পোর সত্যিকার পরিস্থিতি নিয়ে ভাবছে না। এদিকে আলেপ্পো প্রশ্নে যুক্তরাষ্ট্র নতুন করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগেই আসাদ বাহিনী তুমুল বোমা হামলা চালিয়ে এলাকা পুনরুদ্ধারে দৃঢ়চিত্ত। টানা হামলার ফলে বলতে গেলে আলেপ্পোর অধিকাংশ এলাকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। অবরুদ্ধ এলাকা থেকে এক চিকিৎসক জানান, অলিতে-গলিতে সবখানেই এখন শুধু লাশ আর রক্তের দুর্গন্ধ।
এমন নারকীয় পরিস্থিতিতেও পশ্চিমা শক্তিগুলো চুপ মেরে আছে বলে অভিযোগ করছেন সেখানকার মানবাধিকার কর্মীরা। বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির মুখপাত্র বলেন, ধীরে ধীরে নরকে প্রবেশ করছে আলেপ্পো। চিকিৎসক আবদুল জানান, সেখানকার চিকিৎসা পরিস্থিতি একেবারে ভেঙে পড়েছে। মঙ্গলবার রাতে যারা বোমা হামলায় পড়ে নিহত হয়েছেন, তাদের লাশ এখন দিনের আলোতেও পথেঘাটে পড়ে রয়েছে। আর সাধারণ নাগরিকদের মধ্যে দিনরাত মৃত্যু আতঙ্কের পাশাপাশি সরকারের গোপন পুলিশের নজরদারি ও নির্যাতনের আতঙ্কও তাড়া করছে। সেনা ও পুলিশ বাহিনী তল্লাশি ও জিজ্ঞাসাবাদের মুখে বিদ্রোহী অধ্যুষিত এলাকা থেকে সরকার নিয়ন্ত্রিত এলাকায় যেতে আগ্রহী আড়াই লাখ অসহায় মানুষ আটকা পড়ে আছে।
আলেপ্পো একসময় দেশের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা ছিল। দেশের প্রধান এ বাণিজ্যিক এলাকাটির একাংশ সরকার বাহিনীর হাতে। আর এর পূর্ব এলাকা বিদ্রোহীদের হাতে। ২০১২ সাল থেকেই এ অবস্থা চলছে।
Labels:
আন্তর্জাতিক
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment