Social Icons

Sunday, November 27, 2016

ক্যাস্ট্রোর প্রতি কিউবানদের অশ্রুসিক্ত শ্রদ্ধা

কিউবার বিপ্লবী নেতা ফিদেল ক্যাস্ট্রোকে অশ্রুসিক্ত শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন দেশটির জনগণ। তার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়েছে। রাষ্ট্রীয়ভাবে ঘোষণা করা হয়েছে ন’দিনের শোক কর্মসূচি। কিউবার স্থানীয় সময় শুক্রবার রাতে ফিদেল ক্যাস্ট্রো মারা যান। এদিকে ফিদেল ক্যাস্ট্রোর মৃত্যুর পর যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের গভর্ণর রিক স্কট দেশটিতে গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে সহায়তা করার অঙ্গীকার করেছেন।
 
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, ছাত্ররা ‘আমি ফিদেল’ লেখা প্ল্যাকার্ড নিয়ে স্লোগান দিচ্ছেন। তার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে বিভিন্ন প্রদর্শনী এবং কনসার্ট ও সব ধরনের অ্যালকোহল বিক্রি স্থগিত। বড় ধরনের খেলাধুলার আয়োজনও স্থগিত করেছে দেশটির ক্রীড়া সংস্থা। অনেক ছাত্র-ছাত্রীকে ফিদেলে ছবি পাশে রেখে কাঁদতে দেখা গেছে। সমস্ত পত্রিকা কালো অক্ষরে মহান এই বিপ্লবী নেতার মৃত্যু সংবাদ প্রকাশ করেছে। রাফায়েল উরবি নামের ৫ সন্তানের জনক বলছেন, আমি আমার মা, সন্তান এবং বাবার পর সবচেয়ে বেশি ভালবাসি ফিদেলকে। ফিদেলকে মনের মধ্যে ধরে রাখতে তার একটি ছবিও বাধাই করছি। তিনি বলেন, আমরা কেবল গরীব ছিলাম না, আমরা পঙ্গু হয়ে গেছিলাম। অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ফিদেল এসে আমাদের সেই দু:খ ঘুচিয়ে দিয়েছে। এখন আমাদের সবকিছু আছে। হাভানা ইউনিভার্সিটির ছাত্ররা চিত্কার করে বলছেন, ফিদেল মরে নাই। কারণ কিউবার সবাই ফিদেল। রাউল আলেহান্দ্রো পালমিরোস নামের এক ছাত্র বলেন, ফিদেল কিউবাকে বিশ্বের মানচিত্রে স্থান করে দিয়েছেন এবং মানুষকে দিয়েছেন বাঁচার আশা।
 
ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম বিবিসি জানায়, আগামী সোমবার থেকে লোকজন তার দেহ-ভস্মের প্রতি সম্মান জানাতে পারবেন। সেদিন থেকেই শুরু হবে মূল কর্মসূচি। এজন্যে রাষ্ট্রীয় প্রস্তুতিও সম্পন্ন করা হয়েছে। হাভানা ও সান্টিয়াগো শহরে বড়ো রকমের সমাবেশের পরিকল্পনা করা হয়েছে। রাজধানী হাভানায় লোকজনের প্রতি আহবান জানানো হয়েছে রেভ্যুলিউশন স্কয়ারের সমবেত হওয়ার জন্যে। পরে তার ভস্ম নিয়ে যাওয়া হবে সান্তিয়াগো দে কিউবাতে, যেখান থেকে তিনি ক্ষমতার জন্যে তার বিপ্লবী আন্দোলন শুরু করেছিলেন। ক্যাস্ট্রোর নেতৃত্বে তার গেরিলা দল যে পথ ধরে অগ্রসর হয়েছিলো সেই পথ ধরেই নিয়ে যাওয়া হবে তার দেহ-ভস্ম। কিউবায় পশ্চিমা কূটনীতিকরা জানিয়েছেন, মঙ্গলবারের মধ্যে বিদেশি প্রতিনিধিরা কিউবায় আসবেন এবং রেভ্যুলিউশন স্কয়ারে সমবেত হবেন। আগামী ৪ঠা ডিসেম্বর পর্যন্ত রাষ্ট্রীয় শোক পালন করা হবে দ্বীপরাষ্ট্রটিতে।
 
একদিকে লোকজন যখন তার মৃত্যুতে শোক পালন করছে, তেমনি অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের মিয়ামিতে কিছু মানুষ তার মৃত্যুতে আনন্দ উল্লাসও প্রকাশ করছে। ফিদেল ক্যাস্ট্রোবিরোধী এইসব কিউবানরা যুক্তরাষ্ট্রে পালিয়ে এসেছে মিয়ামিতে সপরিবারে বসবাস করছেন। বিংশ শতাব্দীর প্রতীক হয়ে উঠে এই নেতার প্রতি শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন বিশ্ব নেতারাও। তবে যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাকে ‘নিষ্ঠুর স্বৈরশাসক’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন ফিদের ক্যাস্ট্রোর শাসনামলে কিউবায় শিক্ষা ও স্বাস্থ্যখাতে অগ্রগতির প্রশংসা করেছেন। তবে তিনি আশা করছেন, ‘দেশটি এখন সংস্কারের পথে অগ্রসর হবে।’
 
ক্যাস্ট্রো ক্ষমতায় আসেন ১৯৫৯ সালে এবং যুক্তরাষ্ট্রের নাকের ডগায় বসে সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের সূচনা করেন। তার সমর্থকরা তাকে দেখেন শীতল যুদ্ধের সময়কার এক বীর নায়ক হিসেবে। আর সমালোচকদের চোখে তিনি একজন একনায়ক। শীতল যুদ্ধের ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ১৯৬১ সালে কিউবার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে। জারি করে অর্থনৈতিক বিধিনিষেধ। এক শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে কিউবার উপর এই নিষেধাজ্ঞা জারি রয়েছে। প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার আমলে দুটো দেশের মধ্যে সম্পর্ক কিছুটা উষ্ণ হয়েছে। ২০১৫ সালে স্থাপিত হয়েছে কূটনীতিক সম্পর্কও।

No comments:

Post a Comment

 

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি

সম্পাদকীয় কার্যলয়

Rua padre germano mayar, cristo rio -80040-170 Curitiba, Brazil. Contact: +55 41 30583822 email: worldnewsbbr@gmail.com Website: http://worldnewsbbr.blogspot.com.br

সম্পাদক ও প্রকাশক

Jahangir Alom
Email- worldnewsbb2@gmail.com
worldnewsbbbrazil@gmail.com
 
Blogger Templates