Social Icons

Tuesday, November 14, 2017

প্রবাসী নারী শ্রমিকদের ফিরে আসার হার বাড়ছে

 বিদেশে প্রতিনিয়ত বাড়ছে নারী শ্রমিকের চাহিদা। আর এ চাহিদা পূরণে গত পাঁচ বছরের ব্যবধানে প্রবাসী নারী কর্মীর সংখ্যা বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। তবে নানা হয়রানি আর নির্যাতনের কারণে নির্ধারিত সময়ের আগেই ফিরে আসতে বাধ্য হচ্ছে অনেক নারী কর্মী। বিশেষজ্ঞদের মতে, বিমানবন্দরে তথ্য সংরক্ষণের মাধ্যমে কর্মীদের ফিরে আসার কারণ খতিয়ে দেখে দায়ী এজেন্সি এবং নিয়োগকারী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া দরকার। আর এ সমস্যা সমাধানে উদ্যোগ নেয়ার কথা জানিয়েছেন বিএমইটির মহাপরিচালক ড. সেলিম রেজা।
বিদেশে বাংলাদেশী নারী শ্রমিকের চাহিদা ক্রমান্বয়ে বাড়তে থাকায় স্বল্প সময়ের প্রশিক্ষণ নিয়েই তারা স্বপ্ন পূরণে পাড়ি জমাচ্ছেন বিভিন্ন দেশে। সরকারি হিসেব মতে, এ পর্যন্ত প্রবাসী বাংলাদেশী নারী কর্মীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় ৬ লাখ ৬২ হাজার। যা পাঁচ বছরের ব্যবধানে দ্বিগুণ হয়েছে। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রায় এক লাখ আশি হাজার সৌদি আরবে, আরব আমিরাত ও জর্ডানে এক লাখ ২৫ হাজার করে, লেবাননে এক লাখ তিন হাজার এবং ওমানে গেছেন প্রায় ৬২ হাজার কর্মী। তবে, হয়রানি, নির্যাতন আর পারিবারিক সমস্যাসহ নানা কারণে এদের একটি বড় অংশ নির্ধারিত সময়ের আগই দেশে ফিরতে বাধ্য হন। ভুক্তভোগী এক প্রবাসী নারী শ্রমিক জানান, ভিসার মধ্যে লেখা বাংলাদেশি টাকায় ১৪ হাজার টাকা দিবে। গিয়ে দেখি সাড়ে ১৩ হাজার টাকা। বাড়ির মহিলা মারত, তাদের ছেলেরা শুনলে তারাও মারত। শরীর খারাপ একটু শুয়ে থাকার কথা বললে তারা বলতো, টাকা দিয়ে কিনে এনেছে কোন শুয়ে থাকা হবে না।
বেসরকারি এক গবেষণা মতে, নারী কর্মীদের ওপর শারীরিক, মানসিক ও যৌন নির্যাতন, নির্ধারিত বেতন না দেয়া, দিনে ১৬ থেকে ১৮ ঘণ্টা কাজে বাধ্য করা, অসুস্থ হয়ে পড়াসহ নানা কারণে তারা ফিরে আসতে বাধ্য হন। তবে, সরকারি পর্যায়ে এ বিষয়ে সঠিক কোন তথ্য নেই। ব্যক্তি খাতের ব্যবসায়ী ও বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, প্রবাসী কর্মীদের ফিরে আসার প্রকৃত কারণ খতিয়ে দেখে নারী শ্রমিকের সুরক্ষায় ব্যবস্থা নেয়া দরকার। বোমসার পরিচালক সুমাইয়া ইসলাম বলেন, এখন পর্যন্ত ফিরে আসার নারীদের কোন ডাটাবেজ তৈরি হয়নি। ডাটাবেজ তৈরি করে দেখা দরকার আমার কতটা শ্রমিক সময় পূরণ হওয়ার পর ফিরে এসেছে। কতজন নির্যাতনের স্বীকার হয়ে আসছেন। এ অবস্থায় স্বল্প সময়ের ব্যবধানে দেশে ফিরে আসা কর্মীদের অভিযোগের ভিত্তিতে উদ্যোগ নেয়ার কথা জানান, বিএমইটির মহাপরিচালক।
জনশক্তি রপ্তানি পরিচালক মোহাম্মাদ গিয়াসউদ্দিন বাবুল বলেন, এখান থেকে যদি লেবাননে ১০০ জন যায়, ৮০ জন নির্যাতনের কারণে ফিরে আসে। এছাড়াও সৌদি আরব থেকেও অনেকে নির্যাতনের কারণে বাধ্য হয়ে ফিরে আসেন। তাদের তথ্য যদি বিমানবন্দর থেকেই নেয়ার ব্যবস্থা থাকতো তাহলে দেখা যেত তিনি কত তারিখে বাইরে গেলেন এবং কত তারিখে ফিরে আসলেন তার সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যেত। আর ওই ডাটাবেজ দেখলে সে কী তার চুক্তি শেষ করে আসল না আগে চলে আসলো তা বোঝা যাবে।
বিদেশে বাংলাদেশ মিশনগুলোতে আইনজীবী নিয়োগের মাধ্যমে প্রবাসী নারী শ্রমিকের এ সংকট সমাধানে উদ্যোগ নেয়ার কথাও বলেন তিনি। বিদেশে নারী শ্রমিকের চাহিদা বাড়ছে। সেখানে বাংলাদেশি নারী শ্রমিকের চাহিদা দিনদিন বাড়ছে। আমরা যদি মনে করি এতে নারী শ্রমিকের উন্নয়ন হচ্ছে তাহলে সেটা তাদেরকে ক্ষতির মুখে ফেলবে। তাই যে পরিমাণ নারী বিদেশে যাচ্ছে তাদের ফেরত আসার পরিমান আমাদের জানা দরকার। একই সাথে কি কারণে এতো পরিমানের নারী শ্রমিক দেশে ফেরত আসছে তারও সঠিক কারণ বের করতে হবে। তাহলে নারী শ্রমিকদের আসল চাহিদা তৈরি করা সম্ভব হবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

No comments:

Post a Comment

 

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি

সম্পাদকীয় কার্যলয়

Rua padre germano mayar, cristo rio -80040-170 Curitiba, Brazil. Contact: +55 41 30583822 email: worldnewsbbr@gmail.com Website: http://worldnewsbbr.blogspot.com.br

সম্পাদক ও প্রকাশক

Jahangir Alom
Email- worldnewsbb2@gmail.com
worldnewsbbbrazil@gmail.com
 
Blogger Templates