কোচ গোলাম রব্বানি ছোটন জানিয়েছেন এএফসি অনূর্ধ্ব-১৬ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের বাছাই পর্বে বাংলাদেশের জন্য অঘোষিত ফাইনালে পরিণত হওয়া খেলাটিতে তারা চাইনিজ তাইপের বিরুদ্ধে জয়ের জন্যই মাঠে নামবেন।
আজ শনিবার সন্ধ্যা ৬টায় শুরু হবে স্বাগতিকদের বাঁচা-মরার এ লড়াই। এতে জিতলে অনেকটাই নিশ্চিত হয়ে যাবে আগামী বছর থাইল্যান্ডে অনুষ্ঠিতব্য চূড়ান্ত পর্বে খেলা।
ঢাকার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে প্রতিযোগিতার ‘সি’ গ্রুপের খেলাগুলো মাঠে গড়ানোর আগেই স্বাগতিক কোচ ছোটন ও অধিনায়ক কৃষ্ণা রানী দাস জানিয়েছিলেন বাংলাদেশের লক্ষ্য চূড়ান্ত পর্বে খেলা। টুর্নামেন্ট-পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে উভয়েই গ্রুপের পাঁচ দলের মধ্যে চাইনিজ তাইপেকে সবচেয়ে শক্তিশালী প্রতিপক্ষ মেনেও গ্রুপ সেরা হয়ে মূল পর্বে খেলার আশাবাদ ব্যক্ত করেছিলেন উভয়েই। বাংলাদেশ দল এ লক্ষ্যে ইরানকে ৩-০ গোলে হারিয়ে দুরন্ত সূচনাই করেছিল। এরপর একে একে সিঙ্গাপুরকে ৫-০ ও কিরগিজস্তানকে ১০-০ গোলে হারিয়ে মুখোমুখি হচ্ছে তাইপের। বাংলাদেশের করা গোল ১৮টি। অতিথি দলটিও কম যায় না। তারা আগের তিন খেলায় গোল করেছে ২১টি।
তিন খেলায় নয় পয়েন্ট করে পেয়ে দল দুটি একে অপরের মুখোমুখি হচ্ছে বলে বাংলাদেশকে আজ জিততেই হবে। জিতলে বাংলাদেশের গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পথে বাধা থাকবে কেবল দুর্বল সংযুক্ত আরব আমিরাত। বিপরীতে চাইনিজ তাইপে শেষ খেলায় বিপক্ষ হিসেবে পাবে শক্তিশালী ইরানকে।
এই সমীকরণের মধ্যেই আজকের বিপক্ষ সম্পর্কে কোচ ছোটনের মূল্যায়ন: ‘চাইনিজ তাইপে সবসময়ই শক্তিশালী ছিলো, এখনও শক্তিশালী। কিন্তু আমরা এই টুর্নামেন্টে প্রমাণ করেছি, টুর্নামেন্টের আগে আমরা এত শক্তিশালী ছিলাম না। আমাদের মেয়েরা খেলে প্রমাণ করছে। তারা প্রমাণ করছে যে আমার ভালো দল। কালকে একটা ভালো, উত্তেজনাকর ম্যাচ হবে। দর্শকরা ভালো খেলা দেখবে। আমরা জয়ের জন্য মাঠে নামব।’
কোচ অবশ্য তার খেলোয়াড়দের কোনো চাপ না নিয়ে স্বাভাবিক খেলা খেলতে বলেছেন। এও বলেছেন- তারা যেন তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে কোনো সুযোগ নষ্ট না করে। বিপক্ষের শক্তি-সামর্থ্য সম্পর্কে তার মত, তাইপেই একমাত্র দল যারা এখানকার আবহাওয়ার সঙ্গে মানিয়ে নিয়েছে। তাছাড়া দলটির শারীরিক শক্তিও ভাল। অনেক দৌড়িয়ে খেলে, সেজন্য সতর্ক থাকতে হবে। চাইনিজ তাইপের শক্তি সম্পর্কে বাংলাদেশ কোচ বলেন,‘তারা উইং দিয়ে খেলে, বল ধরে খেলে। তাদের ১১, ৫, ২০, ২২ জার্সিধারী খেলোয়াড় খুব ভালো খেলে। এদের রুখে দেয়ার চেষ্টা থাকবে আমাদের।’
কোচের আরেকটা দুশ্চিন্তা হলো আগের তিন খেলায় নিজেদের রক্ষণভাগ সেভাবে পরীক্ষায় পড়েনি। সেজন্য ডিফেন্ডাররা যেন অতি আত্মবিশ্বাসী না হয় কিংবা চাপে পড়ে ভড়কে না যায়। এরপরও তিনি মনে করেন,‘আমাদের শক্তির জায়গা হলো, আমাদের মেয়েদের মধ্যে ভালো বোঝা-পড়া আছে। অনেকদিন যাবত্ খেলছে। শেষ ম্যাচেও সেটা তারা প্রমাণ করছে। মোটামুটি ফরোয়ার্ড লাইনে সবাই গোল পাচ্ছে।’
উল্লেখ্য, গত আসরের বাছাইয়ে পাঁচ দলের মধ্যে তৃতীয় হয় বাংলাদেশের মেয়েরা। সেজন্য মূল পর্বে ওঠা হয়নি তাদের। এবারের চ্যাম্পিয়নশিপে চার গ্রুপে মোট ২৪টি দল খেলছে। প্রতি গ্রুপের সেরা দল পাবে ২০১৭ সালে থাইল্যান্ডে অনুষ্ঠিতব্য মূল পর্বে খেলার যোগ্যতা। গত আসরের সেরা চার দল: উত্তর কোরিয়া, চীন, জাপান ও থাইল্যান্ড সরাসরি মূল পর্বে খেলবে। তবে টুর্নামেন্টের স্বাগতিক থাইল্যান্ড ‘এ’ গ্রুপের বাছাইয়ে খেলছে। ফলে থাইরা গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হলে সেক্ষেত্রে রানার্সআপ পাবে মূল পর্বে খেলার সুযোগ।
No comments:
Post a Comment