মাছ, রুপ ও বৈচিত্রে প্রকৃতির সবচেয়ে সুন্দর সৃষ্টিগুলোর মধ্যে অন্যতম। মাছ দেখতে যেমন সুন্দর তেমনি কিছু আছে খুবই ভয়ংকর, বলা যায় ভয়ংকর সুন্দর। বিরল এইসব জিনিসের কথা জানতে আমরা সবাই আকর্ষণ অনুভব করে। আসুন আজ আমরা জেনে নেই সুন্দর কিন্তু মারাত্মক প্রকৃতির কিছু মাছের কথা।
১। পিরানহা
“পিরানহা হেভিং স্মল ফিশেস অ্যাটাকিং দ্যা বিচারস” ছবিটির কথা মনে আছে? হ্যাঁ সেই মাছটির কথাই আমরা বলছি। দক্ষিণ আমেরিকা ও ব্রাজিলে পিরানহা অর্গানাইজেশন আছে। এদের আকার খুব ছোট হয়। এরা বিষাক্ত এবং এদের ধারালো দাঁত থাকে যা দিয়ে এরা শিকারকে কামড় দেয়।
২। পায়ারা
পায়রাকে 'ভ্যাম্পায়ার ফিশ' কিনবা 'রক্তচোষা' মাছ বলা হয়। এরা খুবই বিপদজনক ও বদমেজাজি মাছ। এরা ৪ ফুট দীর্ঘ হয়। এদের আকারের মাছকেও এরা ধরে ফেলতে সক্ষম। এদের দাঁতগুলো তীক্ষ্ণ এবং সমানের দিকে ২টি বড় দাঁত থাকে। এরা পিরানহাকেও গ্রাস করতে পারে যা থেকে বোঝা যায় যে এরা পিরানহা এর থেকেও বিপদজনক মাছ।
৩। টাইগার ফিশ
নাম শুনলেই বোঝা যায় এরা খুব সাহসী মাছ। এদের ধারালো ও তীক্ষ্ণ দাঁত থাকে। এরা সমুদ্রের আসল শিকারি হিসেবে পরিচিত। কঙ্গো নদীতে এদের প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়। এরা পানিতে বসবাসকারী অন্য প্রজাতিদের মারতে পারে এমনকি মানুষকেও মেরে ফেলতে পারে।
৪। পাফারফিশ
এখন পর্যন্ত পাওয়া বিষাক্ত মাছ গুলোর মধ্যে পাফারফিশ সবচেয়ে বিষাক্ত মাছ। এই মাছের যকৃতে, ডিম্বাশয়ে, অন্ত্রে ও ত্বকে টেট্রোডটক্সিন নামক বিষের ভান্ডার থাকে। টেট্রোডটক্সিন বিষ মস্তিষ্কে প্রভাব বিস্তার করে যার ফলে দুর্বলতা, পক্ষাঘাত এবং এর সামান্য পরিমাণ গ্রহণের ফলে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
৫। ভেন্ডেলিয়া কিরহোসা
এই মাছটি হচ্ছে “আকার কোন ব্যাপার নয়” এই উক্তিটির সঠিক প্রতিমূর্তি। এটি লম্বায় ২.৫ সেন্টিমিটার এবং প্রস্থে ৩.৫ মিলিমিটার। এই মাছটিকে “দ্যা টুথপিক ফিশ” ও বলা যায়। এটি রক্ত ও ইউরিনের প্রতি আকৃষ্ট হয়। এই মাছ খুব সহজেই পায়ু পথে প্রবেশ করে রক্ত শোষণ করা শুরু করে যার ফলে প্রচণ্ড ব্যথা শুরু হয়। অনেক ক্ষেত্রে ব্যবচ্ছেদ করাই এর থেকে মুক্তি পাওয়ার একমাত্র উপায় যা অনেক বেশি আতংকের।
৬। স্টোনফিশ
এই মাছটি কেবল বিপদজনকই নাহ এটি সমুদ্রের একটি বৈচিত্রময় মাছও বটে। স্টোনফিশ দেখতে অনেকটা পাথরের মতোই। স্টোনফিশ পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে বিষাক্ত মাছ যার কামড়ের ব্যথা নিরাময়ের অযোগ্য এবং শিকার কয়েক ঘন্টা যাবত ব্যথায় ভুগতে থাকে। কারো কারো মতে এই মাছের দংশনে শিকার ২ ঘন্টার মধ্যে মারা যেতে পারে।
৭। গঞ্চ ফিশ
ভারত ও নেপালের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত কালী নদীতে পাওয়া যায় গঞ্চ মাছ। এই মাছ ক্যাটফিশ পরিবারের মাছ যার আছে বিপদজনক তীক্ষ্ণ দাঁত। এই মাছ ৭ ফুট পর্যন্ত লম্বা হতে পারে। মানুষের মাংসের স্বাদ এই মাছকে আরো বিপদজনক ও ভয়ংকর করে তোলে। এই নরখাদক মাছটি উদ্বেগজনক সংখ্যায় কালী নদীতে আছে।
৮। ইলেকট্রিক ইল
বিজ্ঞানের ক্লাসে অনেকেই এই মাছটির নাম শুনে থাকবেন। এই মাছটি সত্যিকার ভাবে বৈদ্যুতিক শক দিতে পারে। প্রকৃতি এই মাছকে আত্মরক্ষার জন্য এই ক্ষমতা প্রদান করেছে। ইলেকট্রিক ইল ৬০০ ভোল্ট বিদ্যুৎ উৎপন্ন করতে পারে যা একজন মানুষকে বা যেকোন জীবন্ত প্রাণীকে মারার জন্য যথেষ্ট। আরো কিছু বিপদজনক মাছ হচ্ছে – স্নেকহেড ফিশ, বক্স জেলিফিশ, লায়ন ফিশ, ফায়ার কোরাল, অ্যাটলান্টিক মান্টা, মোরেয় ইল, গ্রেট হোয়াইট শারক, কেন্ডিরু ইত্যাদি।
Wednesday, September 28, 2016
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment