ভারতে নোট বাতিলের সিদ্ধান্তে প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ রাশিয়া কার্যত হুমকি দিয়েছে ভারতকে। আচমকা নোট বাতিলের সিদ্ধান্তের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে মস্কো বলেছে ‘এটি আন্তর্জাতিক চার্টারের বিরোধী।’
নোট বাতিলজনিত কারণে ভারতে রাশিয়ার দূতাবাসের দৈনন্দিন খরচ চালানোই এখন সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। মস্কোর কয়েকটি সূত্রে প্রকাশ, অবিলম্বে পরিস্থিতি পরিবর্তন না হলে ভারতীয় রাষ্ট্রদূতকে তলব করে রাশিয়া প্রতিবাদ জানাতে পারে।
অবিলম্বে ভারতে নোট সমস্যা মেটানো না হলে রাশিয়ায় ভারতীয় দূতাবাস কর্মীরা সমস্যায় পড়তে পারেন। তাদের নগদ টাকা তোলার পরিমাণও বেধে দেয়া হতে পারে। সেক্ষেত্রে পররাষ্ট্র নীতিতে জটিলতা সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
ভারতে নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেকজান্দার কাদাকিন গত ২ ডিসেম্বর ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়ে সাফ জানিয়েছেন, ‘সপ্তাহে মাত্র ৫০ হাজার টাকা দিয়ে তাদের পক্ষে দূতাবাস চালানো সম্ভব নয়।’ দিল্লির মতো জায়গায় এত কম টাকায় কীভাবে এত বড় দূতাবাস চালানো সম্ভব সেই প্রশ্নও তুলেছেন তিনি।
দিল্লিতে রাশিয়ার দূতাবাসে কমপক্ষে ২০০ কর্মী থাকায় নোট বাতিলজনিত উদ্ভূত পরিস্থিতিতে তারা ব্যাপক সমস্যায় পড়েছে। রাশিয়া জানিয়েছে, ‘সমস্ত বিধিনিষেধ পেরিয়ে যে টাকা তাদের হাতে এসে পৌঁছাচ্ছে তাতে একটা নৈশ ভোজের খরচও ঠিকমত চালানো যাচ্ছে না।’
এর আগে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের উপ-মুখপাত্র মার্ক টোনার নোট বাতিলের সিদ্ধান্তকে প্রশংসা করে বলেছিলেন, ‘আমরা মনে করি অবৈধ ও অনৈতিক কাজ রোখার লক্ষ্যে এটা একটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ।’
রাশিয়া কিন্তু এক্ষেত্রে আমেরিকার বিপরীত অবস্থানে গিয়ে নজিরবিহিনীভাবে কূটনৈতিক স্তরে বিষয়টি তুলে ধরায় এবং ভারতের বিরুদ্ধে পাল্টা পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি দেয়ায় কেন্দ্রীয় মোদি সরকারের কাছে তা অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এর আগে ইউক্রেন এবং কাজাখস্তানের দূতাবাস থেকেও নোট বাতিলজনিত সমস্যা নিয়ে ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়।
নোট বাতিলজনিত উদ্ভূত সমস্যার জেরে সবার আগে ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি লিখে নয়াদিল্লিস্থ পাক হাইকমিশন হুঁশিয়ারি দিয়ে অন্যদের পথ দেখিয়েছে। তাদের দাবি, কর্তৃপক্ষকে হস্তক্ষেপ করে ব্যাংকের দেয়া শর্ত প্রত্যাহার করতে হবে, নইলে ইসলামাবাদে ভারতীয় দূতাবাসের কূটনীতিক, কর্মীদের ক্ষেত্রেও একই ধরনের শর্ত চাপানো হবে।
ভারতে নয়াদিল্লিস্থ পাক দূতাবাসের দাবি, যে ব্যাংক থেকে তাদের বেতন তোলা হয় সেখান থেকে শর্ত যোগ করে বলা হয়েছে, দূতাবাসের লোকজনকে বাধ্যতামূলকভাবে অতিরিক্ত ফর্ম পূরণ করে জানাতে হবে, কীসে বেতনের অর্থ ব্যয় করা হবে। তাছাড়া তারা ডলারে যে বেতন তুলছেন, সেটা ওই ব্যাংকেই এক্সচেঞ্জ করতে হবে। এতেই ক্ষুব্ধ হয়েছে পাকিস্তান।
ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা অবশ্য বলছেন, পাক হাইকমিশনের কূটনাতিক, কর্মকর্তা ও কর্মীদের বেতন তোলার ক্ষেত্রে ব্যাংকের শর্ত জারির পেছনে বিশেষ কোনও উদ্দেশ্য নেই।#
No comments:
Post a Comment