বেশিরভাগ মানুষের ধারনা, লাতিন আমেরিকা থেকে ইউরোপে বিপুল সংখ্যক অভিবাসী যান। সে তুলনায় ইউরোপ থেকে লাতিন আমেরিকা ও ক্যারিবিয়ান অঞ্চলে আসেন খুব কম সংখ্যক অভিবাসী। কিন্তু সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে উল্টোটা। ইউরোপে নয়, বরং সেখান থেকেই বেশি সংখ্যক অভিবাসী লাতিন আমেরিকায় আসেন। আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম)-এর ‘মাইগ্রেটরি ডাইনামিক্স ইন লাতিন আমেরিকান অ্যান্ড দ্য ক্যারিবিয়ান অ্যান্ড বিটুইন লাতিন আমেরিকা অ্যান্ড দ্য ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন’ শিরোনামের গবেষণা প্রতিবেদনে সেটাই উঠে এসেছে।
লাতিন আমেরিকায় সবচে’ বেশি সংখ্যক অভিবাসী গেছেন স্পেন থেকে। ২০১২ সালে স্পেন থেকে যাওয়া অভিবাসীর সংখ্যা ছিল ১৮১,১৬৬ জন। এর পরপরই আছে ইতালি, ফ্রান্স এবং জার্মানি।
তিনি উল্লেখ করেছেন, এই সমন্বয়টা হচ্ছে লাতিন আমেরিকার দেশগুলোতে অভিবাসনের মাধ্যমে। ২০১৩ সালে আর্জেন্টিনায় সবচে’ বেশি সংখ্যক অভিবাসী এসেছে- ২৩৮,৭০০ জন। যা মোট অভিবাসীর ২৮ শতাংশ। এর পরেই আছে ব্রাজিল ভেনেজুয়েলা, কোস্টারিকা এবং ডমিনিকান রিপাবলিক।
ব্রাজিলের কী অবস্থা?
ব্রাজিলে অভিবাসী ইস্যু’র গুরুত্ব বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশটি অভিবাসনের ক্ষেত্রে ট্রানজিট এবং গন্তব্য হিসেবে গন্য হয়ে থাকে। আইওএমের গবেষণায় দেখা গেছে, ব্রাজিলিয়ানরা নিজেরাও অন্যান্য দেশে অভিবাসন নিচ্ছেন।তবে সংখ্যায় অনেক কম।
আইওএমের তথ্য মতে, লাতিন আমেরিকার দেশগুলো থেকেই সবচে’ বেশি সংখ্যক মানুষ ইউরোপে অভিবাসী হন। দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে কলম্বিয়া, পেরু এবং ইকুয়েডর। তাছাড়া ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে ব্রাজিলই সবচে’ বেশি পরিমাণ রেমিটেন্স পেয়ে থাকে (১.৫৯৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার)। যা লাতিন আমেরিকার মোট রেমিটেন্সের ২২ শতাংশ (২০১২ সালের তথ্য)।
২০১৩ সালে লাতিন আমেরিকায় বসবাসকারী আন্তর্জাতিক অভিবাসীর সংখ্যা ছিল ৮.৫ মিলিয়ন (এর ১.১ মিলিয়নই ইউরোপীয় ইউনিয়নের)। যা ২০১০ সালের চেয়ে ৫০০,০০০ এবং ২০০০ সালের চেয়ে ২.৫ মিলিয়ন বেশি।
ইউরোপ থেকে লাতিন আমেরিকায় অভিবাসন প্রসঙ্গে আইওএম-এর অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর-জেনারেল লরা থমসন বলেছেন, “সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ইউরোপ এবং লাতিন আমেরিকার মধ্যে অভিবাসন আমাদেরকে আর্থ-সামাজিক অস্থিরতার চিত্র তুলে ধরে। পাশাপাশি তারা অর্থনৈতিক মন্দাকে কীভাবে মোকাবেলা করছে, এর সাথে নিজেদেরকে কীভাবে সমন্বয় করে নিচ্ছে তা দেখায়।“
তবে বর্তমানে ইউরোপ থেকে বেশি মানুষ ব্রাজিলে পারি জমাচ্ছেন। কারণ তারা মনে করেন ব্রাজিলের শ্রম বাজার অনেক ভালো।
দূরত্ব বা ভৌগোলিক দিক দিয়ে ব্রাজিল আমেরিকার কাছাকাছি হলেও ভাষা এবং সংস্কৃতিতে আমেরিকার থেকে অনেকটাই আলাদা। লাতিন আমেরিকার দেশগুলো মানুষ চেনে ফুটবলের বদৌলতে। অনেক বিখ্যাত ফুটবলারের জš§ দিয়েছে লাতিন আমেরিকা। ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, পেরু, মেক্সিকো, পর্তুগাল সবই লাতিন আমেরিকার দেশ। ফুটবলের অন্যতম পরাশক্তি ব্রাজিল। আমাদের দেশেও ব্রাজিলের ভক্তের সংখ্যা নেহাত কম নয়। যারা একটু ভিন্ন ধরনের সংস্কৃতি দেখতে চান, জানতে চান বিচিত্র কিছু, তাদের জন্য ব্রাজিল হতে পারে ভ্রমণের উপযুক্ত স্থান।
No comments:
Post a Comment