উত্তর কোরিয়া ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে চলমান বিরোধে যুদ্ধের মহড়া থেমে নেই। উভয় পক্ষই শক্ত অবস্থানে থাকায় টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে। যে কোনো মুহূর্তে যুদ্ধ লেগে যেতে পারে বলেও ধারণা করা হচ্ছে।
এমন পরিস্থিতিতে উত্তর কোরিয়া হুঙ্কারের পাশাপাশি তাদের বিশাল সেনাবহর প্রদর্শন করেছে। এ সেনাবহরের একটি বিশাল অংশ নারী বলে জানা যাচ্ছে।
উত্তর কোরিয়ার সেনাবাহিনী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মূল ভূখণ্ডের পাশাপাশি এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে মোতায়েনকৃত মার্কিন সামরিক ঘাঁটিগুলোতে অনায়াসে আঘাত হানতে সক্ষম, এমনটাই দাবি দেশটির।
এদিকে উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন বিশ্বকে ধ্বংস করে দিতে চান বলে মন্তব্য করে এক্ষেত্রে তার হাতের খেলনা না হয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়েছেন ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট রড্রিগো দুতের্তে। ওদিকে উত্তর কোরিয়া পরিস্থিতিকে অত্যন্ত উত্তেজনাকর বলে আখ্যায়িত করেছেন পোপ ফ্রাঁসিস। এক্ষেত্রে উত্তর কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সমঝোতার জন্য নরওয়ের মতো তৃতীয় কোনো দেশের প্রতি এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। এ খবর দিয়েছে রয়টার্স।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবরে জানা যাচ্ছে, উত্তর কোরিয়া যুদ্ধে সকল প্রস্তুতিই সম্পন্ন করেছে। যেকোনো পরিস্থিতিতে আক্রমণ করার জন্য প্রস্তুত করেছে পুরুষ সেনাবাহিনীর পাশাপাশি তাদের প্রায় পাঁচ লাখ নারী সেনাকে। এক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করেছে দ্য সান।
উত্তর কোরিয়ার নেতা উনের পুরো নারী সেনাবাহিনী যেকোনো মুহূর্তে যুক্তরাষ্ট্রর সঙ্গে লড়াইয়ে অংশ নিতে মানসিকভাবে প্রস্তুত রয়েছে। এ জন্য গত সপ্তাহে দেশটির সেনাবাহিনীর ৮৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে নারী সেনারা পিয়ংইয়ংয়ে একটি বিশেষ প্যারেড প্রদর্শন করেছে। এ ছাড়া তারা গোলাগুলি ও রকেট ছোড়ার অনুশীলনও করেছে।
প্রশিক্ষণের ধরন দেখে মনে হয় যেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যুদ্ধের পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি নিচ্ছে কিম জং-উনের নেতৃত্বাধীন উত্তর কোরিয়া। সামরিক সক্ষমতার দিক থেকে ১২৬টি দেশের মধ্যে উত্তর কোরিয়ার অবস্থান ২৩ এ। তবে সক্রিয় সেনা সংখ্যার দিক থেকে উত্তর কোরিয়ার অবস্থান বিশ্বে পঞ্চম।
২০১২ সালের হিসাব অনুযায়ী, দেশটির সেনাবাহিনীর সদস্য সংখ্যা ১১ লাখের বেশি। এ ছাড়া রিজার্ভ ফোর্সে আছে আরো ৬ লাখ সেনা।
দক্ষিণ কোরিয়া অভিযোগ করেছে, উত্তর কোরিয়া পূর্ব উপকূবর্তী বিশাল এলাকায় সামরিক মহড়া চালিয়েছে ।
সম্প্রতি কোরীয় উপদ্বীপে যুদ্ধাবস্থার মধ্যেই ১৫৪টি ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রসহ মার্কিন সাবমেরিন দক্ষিণ কোরীয় উপকূলে অবস্থান নিয়েছে। এ ছাড়া দক্ষিণ কোরিয়ায় মোতায়েন করা হয়েছে মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা।
এদিকে শনিবার প্রেসিডেন্ট দুতের্তে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, উত্তর কোরিয়ার সর্বশেষ ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার পর ধৈর্য প্রদর্শন করুন। কিম জং উনের হাতের খেলনা হওয়া এড়িয়ে যান। কারণ, কিম জং উন বিশ্বকে ধ্বংস করে দিতে চান।
এ সময় তিনি উল্লেখ করেন, যুক্তরাষ্ট্র ও উত্তর কোরিয়ার মধ্যে যে ভয়াবহ, উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে তা নিয়ে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় দেখা দিয়েছে মারাত্মক উদ্বেগ। তিনি আরো বলেন, একটি ভুল পদক্ষেপই ঘটিয়ে দিতে পারে বিপর্যয়। আর তাতে একটি পারমাণবিক যুদ্ধের প্রথম শিকার হবে এশিয়া।
যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া ও চীন এমন এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে সময় নষ্ট করছে, যে কিনা ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়েই আনন্দ পায়।
No comments:
Post a Comment