এশিয়ার অন্যতম শিল্পোন্নত দেশ দক্ষিণ কোরিয়া। উন্নত এই দেশটিতে বর্তমানে প্রায় ১৫ হাজার বাংলাদেশী বসবাস করছে। তবে দক্ষিণ কোরিয়াতে প্রায় এক হাজার বাংলাদেশী ভূয়া রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা করায় দেশটিতে বাংলাদেশের শ্রমবাজার হুমকির মুখে পড়েছে। এমপ্লয়মেন্ট পারমিট সিস্টেম (ইপিএস) স্কিমের আওতায় নির্ধারিত সময়ের কাজের কন্ট্রাক্টে বাংলাদেশীরা এখানে আসার পর যথাসময়ে ফিরে না যাওয়ার কারণে সৃষ্টি হয়েছে এই সংকট। মিথ্যা ‘পলিটিক্যাল এসাইলাম’ সিক করার প্রবণতা গত কয়েক বছর ধরেই লক্ষ্য করা গেলেও ইদানিং তা আশংকাজনক হারে বাড়ার অভিযোগ করেছে দেশটির কর্তৃপক্ষ।
ফলে দক্ষিণ কোরিয়ায় শ্রমবাজার হারাবার ঝুঁকির মুখে এখন বাংলাদেশ। কোরিয়াতে এরই মধ্যে প্রায় এক হাজার বাংলাদেশী মিথ্যা রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা করেছেন, যাদের শতকরা ৯৯ ভাগই বাংলাদেশে থাকাকালীন বিএনপি-জামায়াতের কর্মী দূরে থাক, কোন রাজনৈতিক দল বা সংগঠনের যে কোন প্রকার কার্যক্রমের সাথে জড়িত ছিলেন না। কোরিয়ায় ইপিএস স্কিমের আওতায় আসা বাংলাদেশি মো: সেন্টু ভয়েস বাংলাকে বলেন, বাংলাদেশীদের এই ভূয়া আবেদনের হিড়িকের বিষয়টি কোরিয়ান কর্তৃপক্ষ পুরোপুরি অবগত থাকায় হাজার খানেক বাংলাদেশীর মাঝে সত্যিকারের ‘রিফিউজি স্ট্যাটাস’ পেয়েছেন ১০ জনেরও কম।’ তিনি আরো বলেন, ‘দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, মালিকের ব্যবস্থাপনায় থাকা-খাওয়ার সুবিধার পাশাপাশি মাসে ১৫শ’ থেকে ১৭শ’ ডলার বেতন পাবার পরও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বাংলাদেশী একই মালিকের অধীনে না থেকে মাত্র শ’খানেক ডলার বেশি বেতন পেতে ৪ বছরের মধ্যে ২-৩ বার কোম্পানি পরিবর্তন করছে ।
ইপিএস-এর নিয়ম অনুযায়ী যারা কোরিয়াতে আসার পর মালিক পরিবর্তন করেন, ৪ বছরের মাথায় বাংলাদেশে ফেরার পর তাদের পুনরায় পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হবার পাশাপাশি ৬ মাস থেকে ১ বছর বা আরো বেশি অপেক্ষা করতে হয় কোরিয়াতে এবার যাওয়ার জন্য। ফলে যথাসময়ে দেশে ফিরে না গিয়ে ভূয়া রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা বা মিথ্যা ‘পলিটিক্যাল এসাইলাম’ সিক করাকেই শ্রেয় মনে করে থাকেন তারা। যার পরিণতিতে বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরণের কড়াকড়ি আরোপ সহ প্রয়োজনে বাংলাদেশের ইপিএস কোটা স্থগিতের বিষয়টিও ভাবচ্ছে দক্ষিণ কোরিয়া।
No comments:
Post a Comment