ব্রাজিল বা সংযুক্ত প্রজাতন্ত্রী ব্রাজিল হচ্ছে দক্ষিণ আমেরিকার সর্ববৃহৎ রাষ্ট্র। এছাড়াও জনসংখ্যা ও ভৌগোলিক আয়তনের দিক থেকে এটি বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম দেশ। ৮,৫১৪,৮৭৭ বর্গকিলোমিটার (৫,২৯০,৮৯৯ বর্গমাইল) আয়তনের এই দেশটিতে বসবাসকৃত মানুষের সংখ্যা প্রায় ১৯ কোটি । এটি আমেরিকার একমাত্র পর্তুগিজভাষী দেশ, এবং বিশ্বের সর্ববৃহৎ পর্তুগিজভাষী রাষ্ট্র।
ব্রাজিলের রাজধানী ব্রাসিলিয়া এবংবৃহত্তম শহর সাও পাওলো ।রাষ্ট্রীয় ভাষা-পর্তুগিজ ,জাতিগোষ্ঠী- ৪৭.৭৩% শেতাঙ্গ ,৪৩.১৩% পারদো, ৭.৬১% কৃষ্ণাঙ্গ । ১.০৯% এশীয় ,০.৪৩% আমেরিইন্ডিয়ান
দেশটি ৭ সেপ্টেম্বর ১৮২২ সালে পর্তুগালের কাছ থেকে স্বাধীনতা ঘোষনা করে । স্বীকৃতি লাভ করে ২৯ আগস্ট ১৮২৫ সালে । ব্রাজিলের মোট আয়তন ৮৫,১৫,৭৬৭ বর্গ কিমি (৫ম) বা ৩২,৮৭,৫৯৭ বর্গ মাইল
ব্রাজিলে পূর্বভাগ আটলান্টিক মহাসাগর দ্বারা বেষ্টিত। যার উপকূলীয়ভাগের দৈর্ঘ্য প্রায় ৭,৪৯১ কিমি । ব্রাজিলের উত্তরে রয়েছে ভেনেজুয়েলা, গায়ানা, সুরিনাম, ও ফ্রান্সের সামুদ্রিক দেপার্ত্যমঁ ফরাসি গায়ানা। এছাড়াও এর উত্তর-পশ্চিমভাগে কলম্বিয়া; পশ্চিমে বলিভিয়া ও পেরু; দক্ষিণ-পশ্চিমে আর্জেন্টিনা ও প্যারাগুয়ে, এবং সর্ব-দক্ষিণে দক্ষিণে উরুগুয়ে অবস্থিত। ব্রাজিলীয় সীমানায় আটলান্টিক মহাসাগরের বেশকিছু দ্বীপপুঞ্জ অবস্থিত, যার মধ্যে রয়েছে ফের্নান্দু জি নরোনিঁয়া, রোকাস অ্যাটল, সেন্ট পিটার ও সেন্ট পল রকস, এবং ত্রিনিদাজি এ মার্চিঁ ভাজ। ব্রাজিলের সাথে চিলি ও ইকুয়েডর ব্যতীত দক্ষিণ আমেরিকার সকল দেশেরই সীমান্ত-সংযোগ রয়েছে।
১৫০০ সালে পর্তুগিজ অভিযাত্রী পেদ্রু আলভারেজ কাবরাউয়ের ব্রাজিলে এসে পৌঁছানোর পর থেকে ১৮১৫ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত ব্রাজিল ছিলো একটি পর্তুগিজ উপনিবেশ। ১৮১৫ সালে এটি যুক্তরাজ্য, পর্তুগাল, ও আলগ্রেভিজের সাথে একত্রিত হয়ে একটি যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসন ব্যবস্থা গঠন করে। মূলত ১৮০৮ সালেই ব্রাজিলের ‘পর্তুগিজ উপনিবেশ’ পরিচয়ে ফাটল ধরে, কারণ নেপোলিয়নের পর্তুগাল আক্রমণের রেশ ধরে পর্তুগিজ সাম্রাজ্যের কেন্দ্র লিসবন থেকে ব্রাজিলের রিও দি জানেইরুতে সরিয়ে নওয়া হয়। ১৮২২ সালে ব্রাজিল, পর্তুগালের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভ করে। প্রাথমিক ভাগে এটি ব্রাজিলীয় সাম্রাজ্য হিসেবে সার্বভৌমত্ব অর্জন করলেও ১৮৮৯ সাল থেকে এটি একটি গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র হিসেবে শাসিত হয়ে আসছে। ১৮২৪ সালে ব্রাজিলের প্রথম সংবিধান পাশ হওয়ার পর থেকে দেশটিতে দুই কক্ষ বিশিষ্ট সরকার ব্যবস্থা চলে আসছে, যা বর্তমানে কংগ্রেস নামে পরিচিত। বর্তমান সংবিধান অনুযায়ী ব্রাজিল একটি যুক্তরাষ্ট্রীয় প্রজাতন্ত্র। একটি ফেডারেল ডিস্ট্রিক্ট, ২৬টি প্রদেশ, ও ৫,৫৬৪টি মিউনিসিপ্যালিটি নিয়ে এর যুক্তরাষ্ট্রীয় প্রজাতন্ত্র গঠিত হয়েছে।
ক্রয়ক্ষমতা সমতা ও মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের ভিত্তিতে ব্রাজিলের অর্থনীতি বর্তমানে বিশ্বের অষ্টম বৃহত্তম অর্থনীতি। ব্রাজিলের অর্থনীতি বিশ্বের অন্যতম দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতি। এর অর্থনৈতিক সংস্কার আন্তর্জাতিক বিশ্বে দেশটিকে একটি নতুন পরিচিতি দিয়েছে। ব্রাজিল জাতিসংঘ, জি-২০, সিপিএলপি, লাতিন ইউনিয়ন, অর্গানাইজেশন অফ ইবেরো-আমেরিকান স্টেটস, মার্কুসাউ ও ইউনিয়ন অফ সাউথ আমেরিকান নেশন্স, এবং ব্রিক দেশগুলোর প্রতিষ্ঠাতা সদস্য।
ব্রাজিল জীববৈচিত্র ও প্রাকৃতিক পরিবেশের দিকে বিশ্বের অন্যতম প্রধান একটি দেশ হিসেবে বিবেচিত। ব্রাজিলে বিভিন্ন প্রকারের প্রকৃতি সংরক্ষণকেন্দ্র ও অভয়ারণ্য বিদ্যমান। এছাড়াও দেশটি সমৃদ্ধ খনিজসম্পদের অধিকারী, যা বিভিন্ন সময়ে এর অর্থনীতিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করেছে।
ব্রাজিলে বিভিন্ন জাতের লোকের বাস। আদিবাসী আমেরিকান, পর্তুগিজ বসতিস্থাপক এবং আফ্রিকান দাসদের মধ্যে আন্তঃসম্পর্ক ব্রাজিলের জাতিসত্তাকে দিয়েছে বহুমুখী রূপ। ব্রাজিল দক্ষিণ আমেরিকার একমাত্র পর্তুগিজ উপনিবেশ। ১৬শ শতকে পর্তুগিজদের আগমনের আগে বহু আদিবাসী আমেরিকান দেশটির সর্বত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল। ১৬শ শতকের মধ্যভাগে পর্তুগিজেরা কৃষিকাজের জন্য আফ্রিকা থেকে দাস নিয়ে আসা শুরু করে। এই তিন জাতির লোকেদের মিশ্রণ ব্রাজিলের সংস্কৃতি, বিশেষ করে এর স্থাপত্য ও সঙ্গীতে এমন এক ধরনের স্বাতন্ত্র্য এনেছে কেবল ব্রাজিলেই যার দেখা মেলে। ১৯শ শতকের শেষ দিকে ও ২০শ শতকের গোড়ার দিকে ব্রাজিলে আগমনকারী অন্যান্য ইতালীয়, জার্মান, স্পেনীয়, আরব, ও জাপানি অভিবাসীরাও ব্রাজিলের সংস্কৃতিতে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব রেখেছে। মিশ্র সংস্কৃতির দেশ হলেও কিছু কিছু আফ্রিকান বংশোদ্ভূত ব্রাজিলীয়, ইউরোপ ও এশিয়া থেকে আগত অ-পর্তুগিজ অভিবাসী, এবং আদিবাসী আমেরিকানদের অংশবিশেষ এখনও তাদের নিজস্ব সংস্কৃতি ও রীতিনীতি ধরে রেখেছে। তবে পর্তুগিজ সংস্কৃতির প্রভাবই সবচেয়ে বেশি। পর্তুগিজ এখানকার প্রধান ভাষা এবং রোমান ক্যাথলিক প্রধান ধর্ম।
ব্রাজিল নামটির বুৎপত্তি পরিষ্কার নয়। ঐতিহ্যগতভাবে ধারণা করা হয় ‘ব্রাজিল’ নামটি এসেছে ব্রাজিলউড থেকে, যা এক প্রকার কাঠ উৎপাদনকারী গাছ। ১৬ শতকের দিকে ব্রাজিল থেকে নাবিকরা ইউরোপে এই কাঠ রপ্তানি করতো।পর্তুগিজ ভাষায় ব্রাজিলউডকে pau-brasil নামে ডাকা হয়, আর ‘ব্রাজিউ’ শব্দটির বুৎপত্তি হয়েছে ‘জলন্ত কয়লার মতো লাল’ শব্দগুচ্ছ থাকে। লাতিন ভাষায় ‘ব্রাজা’ (brasa) শব্দের অর্থ কয়লা এবং শেষের ‘-il’ উপসর্গটি লাতিন ‘-iculum’ বা ‘-ilium’ থেকে এসেছে বলে ধারণা করা হয়। পরবর্তীতে পর্তুগিজ ‘ব্রাজিউ’ শব্দটি থেকে ইংরেজিতে ব্রাজিল নামটি এসেছে। বুৎপত্তির এই তত্ত্বটি ব্রাজিল ও পর্তুগালের স্কুলগুলোতে আনুষ্ঠানিকভাবে পড়ানো হয়।
ব্রাজিলীয় পণ্ডিত জুসে আদেলিনু দা সিলভা আজেভেদুর স্বীকার্য অনুসারে ‘ব্রাজিল’ শব্দটির বুৎপত্তিস্থল আরও অনেক পুরোনো এবং এর উৎপত্তি হয়েছে মূলত কেল্টিক বা ফিনিসিয়ীয় থেকে। ফিনিসিয়ীরা কেল্টিক দ্বীপগুলোর খনি থেক প্রাপ্ত এক প্রকার খনিজ দ্রব্য থেকে উৎপন্ন লাল রঞ্জন ইবেরিয়া থেকে আয়ারল্যান্ডে রপ্তানি করতো। আয়ারল্যান্ডীয় পুরাণে হাই-ব্রাজিল নামে পশ্চিমে অবস্থিত একটি দ্বীপের কথা উল্লেখ করা রয়েছে। টলকিনসহ কারও কারও মতে এই দ্বীপটির নাম থেকেই ‘ব্রাজিল’ শব্দটির উৎপত্তি। ষোড়শ শতকে বিভিন্ন পণ্ডিতগণও এই তত্ত্বটিকে সমর্থন করেছেন।
দক্ষিণ আমেরিকার আদিবাসী ভাষা গুয়ারানিতে ব্রাজিলকে ‘পিন্দুরামা’ নামে ডাকা হয়। অতীতে ব্রাজিল অঞ্চলটি আদিবাসীদের কাছে এই নামেই পরিচিত হতো। পিন্দুরামা শব্দের অর্থ ‘তাল গাছের ভূমি’।
১৫০০ খ্রিস্টাব্দের এপ্রিলে পর্তুগিজ অভিযাত্রী পেদ্রু আলভারেজ কাবরাউ পরিচালিত একটি পর্তুগিজ নৌবহর বর্তমানের ব্রাজিলে এসে পৌঁছায় এবং পর্তুগালের রাজা প্রথম মানুয়েলের নামে ভূখণ্ডটিতে পর্তুগালের অধিকার দাবি করে। সে সময় পর্তুগিজরা ব্রাজিলে বসবাসরত প্রস্তর যুগের আদিবাসীদের সাথে পরিচিত হয়। এসকল আদিবাসীদের বেশিরভাগ-ই কথা বলতো তুপি-গুয়ারানি পরিবারের বিভিন্ন ভাষায়, এবং আদিবাসী গোত্রগুলো পরস্পরের মধ্যে যুদ্ধ-বিগ্রহে লিপ্ত ছিল।
১৫৩২ খ্রিস্টাব্দে ব্রাজিলে প্রথম পর্তুগিজ উপনিবেশটি গোড়াপত্তন হয়। তবে ১৫৩৪ সালে ডম তৃতীয় জোয়াউঁ কর্তৃক সমগ্র অঞ্চলটি ১২টি পৃথক বংশানুক্রমিক নেতৃত্বে ভাগ করে দেওয়ার মাধ্যমে কার্যকরভাবে ঔপনিবেশিক প্রক্রিয়া শুরু হয়। কিন্তু পরবর্তীতে এই প্রথাটি সমস্যাপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত হয়, এবং ১৫৪৯ খ্রিস্টাব্দে পর্তুগালের রাজা পুরো উপনিবেশ প্রশাসনের জন্য একজন গভর্নর-জেনারেল নিয়োগ দেন।পর্তুগিজরা কিছু আদিবাসী গোত্রকে নিজেদের দলে নেয়। অপরদিকে বাকিদেরকে তঁরা দাস হিসেবে বশ্যতা স্বীকার করতে বাধ্য করে। এছাড়াও কিছু কিছু গোত্রকে দীর্ঘ যুদ্ধে হারিয়ে ও রোগ বিস্তারের মাধ্যমে নিঃশেষ করে দেয়। ইউরোপীয় রোগের সংক্রমণ প্রতিরোধের উপায় সেসকল আদিবাসীদের জানা ছিল না, তাই খুব সহজেই তাঁরা রোগাক্রান্ত হয়। ১৬শ শতকের মধ্যভাগে ঔপনিবেশিকেরা উত্তর-পূর্ব উপকূলের ভালো মাটি ও ক্রান্তীয় জলবায়ুর সুযোগ নিয়ে সেখানে চিনির প্ল্যান্টেশন স্থাপন করে। সে সময় চিনি ছিল ব্রাজিলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রপ্তানি পণ্য। আন্তজার্তিক বাজারের ক্রমবর্ধমান চাহিদার সাথে তাল মিলিয়ে উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে পর্তুগিজরা আফ্রিকান দাসদেরও ব্রাজিলে নিয়ে আসা শুরু করে ।
ফরাসিদের সাথে যুদ্ধের মাধ্যমে পর্তুগিজরা তাঁদের দখলকৃত ভূখণ্ড ধীরে ধীরে আরও বিস্তৃত করতে থাকে। ১৯৫৭ সালে তাঁরা দক্ষিণ-পূর্ব দিকে অবস্থিত রিউ দি জানেইরু ও ১৬১৫ সালে উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত সাউঁ লুইসে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে । ১৬৬৯ খ্রিস্টাব্দ থেকে তাঁরা আমাজন অরণ্য অভিমূখে অভিযান শুরু করে ও ঐ অঞ্চলে অবস্থিত ব্রিটিশ ও ওলন্দাজ উপনিবেশগুলোর নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করে। নিয়ন্ত্রণ লাভের পর পর্তুগিজরা অঞ্চলগুলোতে নিজেদের গ্রাম ও দুর্গ প্রতিষ্ঠা করার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণকে আরও সুসংহত করে।১৬৮০ খ্রিস্টাব্দে তাঁদের এ অভিযান সর্ব দক্ষিণে বিস্তৃত হয়। সেখানে রিও দে লা প্লাতা নদীর তীরে তাঁরা সাক্রামেন্তো শহরের গোড়াপত্তন করে, বর্তমানে যা উরুগুয়ের অংশ।
১৭ শতকের শেষভাগে ব্রাজিলের চিনি রপ্তানির পরিমাণ কমতে থাকে, তবে ১৬৯০-এর দশকে ব্রাজিলের দক্ষিণ-পূর্ব ভাগে বেশ কিছু স্বর্ণখনি আবিষ্কৃত হয়। পর্তুগিজ ভাষায় বান্দিরাঞ্চিস (Bandeirantes) নামে পরিচিত এই পর্তুগিজ স্কাউটরা বর্তমান ব্রাজিলের মাতু গ্রসো ও গোইয়াস অঞ্চলে স্বর্ণখনির সন্ধান পান। তৎকালীন সময়ে জায়গাটির নামকরণ করা হয় মিনাজ জেরাইস (বাংলা অর্থ ‘সাধারণ খনি’), যা বর্তমানে ব্রাজিলের একটি প্রদেশ। স্বর্ণখনি আবিস্কারের ফলে চিনি রপ্তানি কমে যাওয়া থেকে সৃষ্ট অর্থনৈতিক বিপর্যয় থেকে পর্তুগিজ উপনিবেশ রক্ষা পায়। এছাড়াও স্বর্ণখনিতে কাজের উদ্দেশ্যে সমগ্র ব্রাজিলসহ পর্তুগাল থেকে হাজার হাজার অভিবাসী এ অঞ্চলে পাড়ি জমায়। এই সময় দেশের অভ্যন্তরভাগে বসতি স্থাপিত হয় এবং অর্থনীতি ও জনসংখ্যার প্রধান কেন্দ্র দেশের উত্তর-পূর্ব থেকে দক্ষিণ-পূর্ব অংশে স্থানান্তরিত হয়।
স্পেনীয় ঔপনিবেশিক শাসকগণ এ অঞ্চলে পর্তুগিজ উপনিবেশের সম্প্রসারণে বাঁধা প্রদান করে আসছিল। ১৪৯৪ সালে স্পেন অধিকৃত ভূখণ্ডে পর্তুগিজদের উপনিবেশ সম্প্রসারণ রোধে উভয়পক্ষের মধ্যে তোর্দিজিলাস চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ১৯৭৭ সালে স্পেনীয়রা পর্তুগিজ অধিকৃত বান্দা ওরিয়েন্টাল নিজেদের দখলে আনতে সমর্থ হয়। যদিও পরবর্তীকালে এ বিজয় নিষ্ফল বলে প্রতীয়মান হয়, কারণ ঐ বছরেই পর্তুগিজ ও স্পেনীয় সাম্রাজ্যের ভেতর প্রথম সান লিদিফোনসো চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এ চুক্তি অনুসারে এ অঞ্চলের পর্তুগিজদের সম্প্রসারিত সকল অঞ্চলে পর্তুগালের সার্বভৌমত্ব নিশ্চিত হয়। বর্তমান ব্রাজিলের সীমানাও মূলত এই সম্প্রসারিত ভূখণ্ডের সীমানার প্রতি লক্ষ্য রেখেই নির্ধারিত হয়েছে।
১৮০৮ খ্রিস্টাব্দে পর্তুগিজ রাজ পরিবার, পর্তুগালে অনুপ্রবেশকৃত নেপোলিয়নের সেনাবাহিনীকে তাড়ানোর চেষ্টা করছিল। সে সময় নেপোলিয়নের সেনাবাহিনী পর্তুগালসহ মধ্য ইউরোপের বেশিরভাগ স্থানেই নিজেদের প্রাধান্য প্রতিষ্ঠিত করতে সমর্থ হয়েছিল। প্রতিকুল পরিস্থিতিতে নিরাপত্তার উদ্দেশ্যে রাজ পরিবার নিজেদেরকে ব্রাজিলের রিউ দি জানেইরুতে সরিয়ে নেয়। ফলশ্রুতিতে এটি সম্পূর্ণ পর্তুগিজ সাম্রাজ্যের কেন্দ্র হয়ে ওঠে। ১৮১৫ সালে ডম ষষ্ঠ জোয়াউঁ, তাঁর অকর্মক্ষম মায়ের পক্ষে রিজেন্ট হিসেবে ব্রাজিলকে পর্তুগিজ উপনিবেশ থেকে উন্নীত করে পর্তুগালের সাথে একত্রিত একটি সার্বভৌম যুক্তরাজ্যীয় রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন, যার নাম হয় ইউনাইটেড কিংডম অফ পর্তুগাল, ব্রাজিল, অ্যান্ড দি আলগ্রাভিস। ১৮০৯ সালে পর্তুগিজরা ফরাসি গায়ানা দখল করে (যদিও পরবর্তীকালে ১৮১৭ সালে তা ফ্রান্সের কাছে ফিরিয়ে দেয়)। এছাড়ারও ১৮১৬ সালে ইস্টার্ন স্ট্রিপও তাঁরা নিজেদের দখলে নেয়, ও কিসপ্লাতিনা নামে নামকরণ করে।কিন্তু ১৮২৮ খ্রিস্টাব্দে ব্রাজিল এ অঞ্চলটির ওপর তার নিয়ন্ত্রণ হারায়, এবং অঞ্চলটিতে উরুগুয়ে নামের একটি নতুন স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্রের গোড়াপত্তন হয়।
১৮২১ সালের ২৬ এপ্রিল রাজা ষষ্ঠ জোয়াউঁ ইউরোপে ফিরে যান, ও যাবার পূর্বে তাঁর বড় ছেলে পেদ্রু জি কান্তারাকে ব্রাজিলের রিজেন্ট হিসেবে স্থলাভিষিক্ত করেন। পরবর্তীতে পর্তুগিজ সরকার ব্রাজিলকে পুনরায় পর্তুগিজ উপনিবেশে পরিণত করতে চেষ্টা করেছিল। কিন্তু ১৮০৮ সাল থেকে চলে আসা অঞ্চলটির নিজেদের অর্জন থেকে বঞ্চিত ব্রাজিলীয়রা পুরনায় ঔপনিবেশিক শাসনের বিরোধিতা করে। রিজেন্ট পেদ্রু পর্তুগালে ফিরতে অস্বীকৃত জানান ও ব্রাজিলীয়দের দাবির পক্ষে অবস্থান নেন। ১৮২২ সালের ৭ নভেম্বর পেদ্রু আনুষ্ঠানিকভাবে পর্তুগালের কাছে থেকে ব্রাজিলের স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। একই বছরের ১২ অক্টোবর ডম পেদ্রু ব্রাজিলের প্রথম সম্রাট হিসাবে স্থলাভিষিক্ত হন, এবং ১৮২২ সালের ১ ডিসেম্বর সিংহাসনে আরোহণ করেন। এর মাধ্যমেই ব্রাজিলে ৩২২ বছর ধরে চলে আসা পর্তুগিজ শাসনের অবসান ঘটে।
তৎকালীন সময়ে ব্রাজিলীয়রা রাজতন্ত্রের পক্ষে ছিলেন, এবং গণতন্ত্র ততোটা জনপ্রিয় ছিল না। স্বাধীনতার ঘোষণার ফলস্বরূপ ব্রাজিলের স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হয়, যা ব্রাজিলের উত্তর, উত্তর-পূর্ব, ও দক্ষিণাঞ্চলসহ পর্তুগিজ অধিকৃত প্রায় সম্পূর্ণ অঞ্চলেই ছড়িয়ে পড়েছিল। অবেশেষে ১৮২৪ সালের ৮ মার্চ পর্তুগিজ সৈন্যরা ব্রাজিলীয়দের কাছে আত্মসমর্পন করে, এবং ১৮২৫ সালের ২৯ আগস্ট পর্তুগাল ব্রাজিলের স্বাধীনতাকে স্বীকৃতি দেয়।
১৮২৪ সালের ১৫ মার্চ ব্রাজিলের প্রথম সংবিধানটি জনসাধারণের কাছে উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। জনসাধারণের কাছে উন্মুক্ত করার পূর্বে এটি মিউনিসিপ্যালিটি কাউন্সিলগুলোর অনুমোদন লাভ করে। ১৮৩১ সালের ১ এপ্রিল প্রথম পেদ্রু সিংহাসন ছেড়ে দেন ও তাঁর কন্যার রাজত্ব পুনরায় দাবি করার উদ্দেশ্যে পর্তুগালে পাড়ি জমান। যাবার পূর্বে তিনি তাঁর পাঁচ বছর বয়সী ছেলেকে সিংহাসনের উত্তরাধিকার হিসেবে নির্বাচিত করে যান, যিনি পরবর্তীতে ডম দ্বিতীয় পেদ্রু নামে সিংহাসনে আরোহন করেন। যেহেতু নতুন সম্রাটের রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় আইনগত সাবালকত্ব অর্জনের জন্য সময়ের প্রয়োজন ছিল, তাই এ সময়ে রাষ্ট্র পরিচালনার উদ্দেশ্যে রিজেন্সি পদ্ধতি চালু করা হয় ও সম্রাটের পক্ষে রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য রিজেন্ট নিয়োগ দেওয়া হয়।
রিজেন্সি চালুর পর ব্রাজিলের বিভিন্ন রাজনৈতিক গোষ্ঠীর মধ্যে মতবিরোধ দেখা দেয় যা বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিদ্রোহে রূপ নেয়। এটি রিজেন্সি ব্যবস্থাটিকে বেশ অস্থিতিশীল করে তোলে ও রিজেন্টদের শাসনে ব্রাজিল প্রায় অরাজক একটি রাষ্ট্রে পরিণত হয়। বিদ্রোহের ফলস্বরূপ কিছু কিছু প্রদেশ ব্রাজিল থেকে আলাদা হয়ে নিজেদের স্বাধীন প্রজাতন্ত্র গঠন করে, যদিও এসকল গোষ্ঠীর বিদ্রোহটি সত্যিকার অর্থে রাজতন্ত্রের বিপক্ষে ছিল না। তবে এসব কিছুই বলবৎ ছিল যতোদিন দ্বিতীয় পেদ্রু নিজে রাষ্ট্রভার গ্রহণে অসমর্থ ছিলেন। এমতাবস্থায় রাষ্ট্রীয় অখণ্ডতা নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে দ্বিতীয় পেদ্রুর আইনগত সাবালকত্ব অর্জনের বয়স কমিয়ে আনার সিদ্ধান্ত হয়, এবং তিনি শাসনভার গ্রহণ করেন। ১৪ বছর বয়সে সিংহাসনে আরোহনের পর তিনি এক টানা ৫৮ বছর সিংহাসনে অধিষ্ঠিত ছিলেন। তাঁর রাজত্বকালে দেশটিতে অভ্যন্তরীণ শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় থাকার পাশাপাশি ব্যাপক অবকাঠামোগত উন্নয়নও সাধিত হয়।
দ্বিতীয় পেদ্রুর ৫৮ বছরের শাসনামলে ব্রাজিল তিনটি আন্তর্জাতিক যুদ্ধে জয়লাভ করে। যুদ্ধগুলো ছিল প্লেটাইন যুদ্ধ, উরুগুয়েইয়ান যুদ্ধ, এবং ওয়ার অফ ট্রিপল অ্যালায়েন্স। এছাড়াও পেদ্রুর শাসনামলেই ব্রাজিল রাজতন্ত্র থেকে গণতন্ত্রের পথে অগ্রসর হয়। মূলত সফল নির্বাচন ও স্বাধীন গণমাধ্যমের ফলেই এ অর্জন সম্ভব হয়। এই ৫৮ বছরের শাসনামলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অর্জনটি ছিল দাস প্রথার বিলোপ সাধন। ১৮৫০ সালে আন্তর্জাতিকভাবে দাস পরিবহনের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপিত হয়। এর পরেই ব্রাজিল ধীরে ধীরে দাস প্রথা বিলোপের দিকে এগিয়ে যেতে থাকে, ও শেষ পর্যন্ত ১৮৮৮ সালে সম্পূর্ণরূপে দাস প্রথার বিলোপ সাধিত হয়। অবশ্য স্বাধীনতার পর থেকেই ব্রাজিলে দাসদের সংখ্যা ধীরে কমতে শুরু করেছিল। ১৮২৩ সালে মোট জনগণের ২৩% ছিল দাস, আর ১৮৮৭ সালে এই হার নেমে আসে মাত্র ৫%-এ।
১৮৮৯ সালে রাজতন্ত্রের অবলোপনের পর সরকার ব্যবস্থা পরিবর্তনের পক্ষে কেউ ততোটা আগ্রহী ছিল না। দ্বিতীয় পেদ্রু তখনও জনসাধারণের মাঝে যথেষ্ট জনপ্রিয় ছিলেন, কিন্তু তাঁর নিজের ইচ্ছাতেই রাজতন্ত্রের সমাপ্তি ঘটে। তাঁর দুই ছেলের মৃত্যুর পর পেদ্রুর মনে হয়েছিল এই রাজত্ব তাঁর মৃত্যুর সাথেই শেষ হয়ে যাবে। রাজত্ব রক্ষার ব্যাপারে তিনি খুব আগ্রহী ছিলেন না। তাই তিনি নিজে এটি রক্ষার ব্যাপারে কিছু করেন নি ও কাউকে কিছু করতেও দেন নি। দাস প্রথা বিলোপের সময় এর বিরোধীতাকারীরা সশস্ত্র বাহিনীকে ব্যবহার করে যাতে কোনো প্রকার সামরিক ক্যু ঘটাতে না পার তা ঠেকাতেই মূলত তিনি গণতন্ত্রের পথে অগ্রসর হন।
বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম দেশ হিসেবে রাশিয়া, কানাডা, চীন, ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পরেই ব্রাজিলের অবস্থান। কানাডা ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পর এটি আমেরিকা মহাদেশের তৃতীয় বৃহত্তম দেশ। এর সর্বমোট আয়তন ৮৫,১৪,৮৭৬.৫৯৯ বর্গ কিমি । যার ভেতর জলভাগের আয়তন প্রায় ৫৫,৪৫৫ বর্গ কিমি ।দেশটিতে মোট তিনটি সময় অঞ্চল অবস্থিত। পশ্চিমের প্রদেশগুলো ইউটিসি-৪, পূর্বের প্রদেশগুলো ইউটিসি-৩ (এটি একই সাথে ব্রাজিলের সরকারি সময়), এবং আটলান্টিক দ্বীপপুঞ্জগুলো ইউটিসি-২ সময় অঞ্চলের অন্তর্গত।
ব্রাজিলে টপোগ্রাফি যথেষ্ট বৈচিত্রময়। দেশটিতে পাহাড়, পর্বত, সমভূমি, উচ্চভূমি, চরণভূমি প্রভৃতি বৈচিত্রের ভূভাগ বিদ্যমান। এর ভূখণ্ডের বেশিরভাগের উচ্চতা ২০০ মিটার (৬৬০ ফু) থেকে ৮০০ মিটার (২,৬০০ ফু)-এর মধ্যে। দেশটির দক্ষিণ অর্ধাংশেই বেশিরভাগে উচ্চভূমি অবস্থিত। উত্তর-পশ্চিম অংশের সমভূমিগুলো ঢালু ও ভাঙা ভাঙা পাহাড় দিয়ে ঘেরা।
দেশটির দক্ষিণাঞ্চল বেশ অমসৃণ, এবং বেশিরভাগ অঞ্চলই রিজ ও পর্বতমালা দ্বারা বেষ্টিত। এ অঞ্চলের গড় উচ্চতা ১,২০০ মিটার (৩,৯০০ ফু) পর্যন্ত। এসকল পর্বতমালার মধ্যে রয়েছে মান্তিকিরা, এসপিনাসো পর্বতT এবং সেরা দু মার। উত্তরে গুয়াইয়ানা উচ্চভূমি একটি বড় নিষ্কাশন বিভক্তির মাধ্যমে আমাজন বেসিনের দিকে প্রবাহিত নদীগুলো থেকে ভেনেজুয়েলা থেকে উত্তর দিকের ওরিনোকো নদী ব্যবস্থায় এসে সমাপ্ত হওয়া নদীগুলোকে পৃথক করেছে। ব্রাজিলের সর্বোচ্চ পর্বত হচ্ছে পিকু দা নেবলিনা যার উচ্চতা প্রায় ২,৯৯৪ মিটার (৯,৮২৩ ফু), এবং সর্বনিম্ন অঞ্চল হচ্ছে আটলান্টিক মহাসাগর।
ব্রাজিলে ঘন ও বেশ জটিল নদী ব্যবস্থা বিদ্যমান, যা বিশ্বের অন্যতম জটিল নদী ব্যবস্থা। ব্রাজিলে মোট আটটি নদী নিষ্কাশন ব্যবস্থা অবস্থিত, যার সবকটি-ই আটলান্টিক মহাসাগরে এসে শেষ হয়েছে। ব্রাজিলের উল্লেখযোগ্য নদীগুলোর মধ্যে রয়েছে আমাজন, যা বিশ্বের দ্বিতীয় দীর্ঘতম নদী ও নিষ্কাশিত জলের পরিমাণের ওপর ভিত্তি করে বিশ্বের সবচেয়ে বড় নদী। এছাড়াও আছে পারান ও এর গুরুত্বপূর্ণ শাখানদী ইগুয়াসু (ইগুয়াসু জলপ্রপাত সহ), নিগ্রো, সাউঁ ফ্রান্সিসকু, শিজু, মেদেইরা, ও টাপাজুস নদী।
কার্নিভাল ও সাম্বা নৃত্য বহিঃবিশ্বের কাছে ব্রাজিলের সংস্কৃতির সবচেয়ে পরিচিত অংশগুলোর একটি।
তিনশ বছরেরও বেশি সময় ধরে পতুগিজ ঔপনিবেশকদের শাসনের ফলে, ব্রাজিলের সংস্কৃতির মূল অংশটি এসেছে পর্তুগালের সংস্কৃতি থেকে। পর্তুগিজরা ব্রাজিলের সংস্কৃতির যেসকল স্থানে প্রভাব ফেলেছে তার মধ্যে আছে পর্তুগিজ ভাষা, ক্যাথলিক ধর্ম, এবং ঔপনিবেশিক স্থাপত্যশিল্প। এছাড়াও ব্রাজিলের সংস্কৃতি আফ্রিকান, ও আদিবাসী ইন্ডিয়ানের নিজস্ব সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্য দ্বারাও বেশ প্রভাবান্বিত হয়েছে। এছাড়া ব্রাজিলে অভিবাসী হিসেবে আসা ইতালীয়, জার্মান, ও অন্যান্য ইউরোপীয় অভিবাসীদের সংস্কৃতিও ব্রাজিলীয় সংস্কৃতিতে কিছুটা প্রভাব বিস্তার করেছে। ১৮-১৯শত শতকের দিকে দলে দলে আসা এ সকল অভিবাসীরা ব্রাজিলের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে বসবাস করা শুরু করেছিল, এবং বর্তমানেও ঐ অঞ্চলের সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে তাঁদের প্রভাব পরিলক্ষিত হয়। তবে সামগ্রিকভাবে আদিবাসী আমেরিন্ডিয়ানরা ব্রাজিলের ভাষা ও রন্ধনশিল্পে প্রভাব ফেলেছে; অপরদিকে আফ্রিকানরা প্রভাব ফেলেছে ব্রাজিলের রন্ধনশৈলী, সঙ্গীত, নৃত্যকলা, ও ধর্মে।
১৬শ শতকের পর থেকে ব্রাজিলীয় চিত্রকলা বিভিন্ন ধারায় বিস্তৃত হতে থাকে। পূর্বে ব্রাজিলের চিত্রকলায় বারুকি ধারার প্রভাব ছিল খুব বেশি, কিন্তু ১৬শ শতকের পর বারুকি থেকে তা রোমান্টিকতা, আধুনিকতা, অভিব্যাক্তিবাদ, কিউবিজম, পরাবাস্তবাদ, বিমূর্তবাদ প্রভৃতি দিকে ছড়িয়ে পড়তে থাকে।
ব্রাজিলীয় চলচ্চিত্রের গোড়াপত্তন হয় ১৯শ শতকের শেষ দিকে। অনেক অভ্যন্তরীণ চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ব্রাজিলের চলচ্চিত্র দেশের গণ্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক পরিচিতি লাভ করতে শুরু করেছে।
ফুটবল খেলাই ব্রাজিলের সবচেয়ে জনপ্রিয় ক্রীড়া হিসেবে পরিচিত। ব্রাজিল জাতীয় ফুটবল দল ফিফা বিশ্ব র্যাংকিংয়ে শীর্ষস্থানীয় দল হিসেবে চিহ্নিত।
No comments:
Post a Comment