মালয়শেয়িায় অবৈধ শ্রমিকদের নিবন্ধিত হওয়ার বেধে দেয়া সময়সীমা শেষ হয়েছে গত ডিসেম্বরে। চলতি বছরের শুরু থেকেই সাঁড়াশি অভিযান চালানোর কথা দেশটির ইমিগ্রেশন বিভাগের। তবে, সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও এখনও শুরু হয়নি এ অভিযান। এ নিয়ে উৎকণ্ঠায় অবৈধ শ্রমকিরা। গেলো বছর রি-হিয়ারিংয়ের আওতায় প্রায় সাড়ে পাঁচ লাখ অবৈধ বাংলাদেশি নিবন্ধিত হয়েছেন। এর মধ্যে এক লাখ ৬৫ হাজার কর্মী ভিসা পেয়েছেন এবং নিবন্ধিত প্রায় তিন লাখ ৩০ হাজার শ্রমিকের ভিসাসহ বৈধতার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে দেশটির অভিবাসন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে।
এছাড়া নাম ও বয়স জটিলতার কারণে কমপক্ষে ৫৫ হাজার কর্মী ভিসা পাননি। ওইসব কর্মীর জটিলতা নিরসনের সুযোগ পাবেন না-কি দেশে ফিরতে হবে তা এখনও নিশ্চিত নয়। এ নিয়ে নির্ধারিত সময়ে যারা রেজিস্ট্রেশন করে নিবন্ধনের আওতায় আসতে পারেননি তারা পড়েছেন দুশ্চিন্তায়। কখন পুলিশ এসে হানা দেয় সে আতঙ্কে দিন কাটছে তাদের।এর মধ্যে কেউ গ্রেপ্তার হলে দেশটির অভিবাসন আইন অনুযায়ী, ইমিগ্রেশন অ্যাক্ট ১৯৫৯/৬৩-এর ধারা ৫৫-বি এর অধীনে সর্বোচ্চ ৫০ হাজার রিঙ্গিত জরিমানা বা ১২ মাসের জেল অথবা উভয় দ- দেয়ার বিধান রয়েছে।
মালয়েশিয়া ইমিগ্রেশন পুলিশের প্রধান আযহার মুস্তাফার আলী জানিয়েছিলেন, গত বছর ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রায় ৪৮ হাজার বিদেশী অবৈধ শ্রমিক গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এদের মধ্যে কতজন বাংলাদেশি শ্রমিক রয়েছেন সে বিষয়টি পরিষ্কার নয়। অবশ্য মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি হাই কমিশন জানায়, বৈধ ৪ লক্ষ ৯৫ হাজার বাংলাদেশি শ্রমিক রয়েছে মালয়েশিয়ায়। তবে অবৈধ ঠিক কতজন শ্রমিক আছে তার সঠিক হিসাব নেই। এসব অবৈধ শ্রমিকদের ভাগ্যে কি আছে তাও এখন স্পষ্ট নয়।
গ্রেপ্তার আতঙ্কের মাঝে মরার ওপর খাড়ার ঘা হয়েছে দালাল চক্র। নিবন্ধিত হওয়ার জন্য অনেক বাংলাদেশি দালাল চক্রের কাছে টাকা দিয়ে হয়েছেন প্রতারণার শিকার। একাধিক সূত্রে জানা গেছে, গত বছর নিবন্ধন প্রক্রিয়া চলাকালে নামে বেনামে বহু কোম্পানি শ্রমিকদের বৈধ করার আশ্বাসে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
প্রতারণার শিকার কেউ কেউ অভিযোগ করেন, দালাল চক্র তাদের নিবন্ধনের জন্য টাকা-পাসপোর্ট জমা নেয়। কিন্তু সময় পেরিয়ে গেলেও টাকা-পাসপোর্ট কোনটিই ফেরত পাননি। এ বিষয়ে বাংলাদেশ হাই কমিশনে গেলেও সুরাহা হয়নি বলে জানান তারা।
উল্টো অভিযোগ রয়েছে কমিশনে দালাল চক্রের হয়রানির। পাসপোর্ট নবায়ন করতেও ঘুষ নেয়ার অভিযোগ করেন অনেকে। যদিও এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে বাংলাদেশ হাই কমিশন। এবং দালাল চক্রের বিরুদ্ধে নিজেদের কঠোর অবস্থানের কথা জানিয়ে, যারা প্রতারণার স্বীকার হয়েছেন তাদের সহায়তা আশ্বাসও দেয় কমিশন।
No comments:
Post a Comment