Social Icons

Thursday, January 28, 2016

জোরেশোরে চলছে সম্প্রচার আইন প্রণয়নের কাজ

নিজের দোকানে বসে টেলিভিশনে দুপুরের সংবাদ দেখে নিচ্ছিলেন সালাহউদ্দিন জুয়েল।
ঢাকা শহরের এক গলির ভেতরে গত দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে একটি মুদি দোকান চালাচ্ছেন তিনি।
বছর খানেক হলো দোকানে একটি টেলিভিশন লাগিয়েছেন তিনি।
মি. জুয়েল বলছেন, “টেলিভিশনটা থাকলে গান-টান শুনলাম, খবর-টবর শুনলাম, কাজও করলাম, সময়টা কাইটা যায়। টিভিতে মেইনলি আমি খবরটা দেখি। খবরটা ভাল লাগে। দেশের অবস্থা কোথায় কি, বোঝা যায়।”
বাংলাদেশের মানুষকে একসময় বিনোদন ও তাৎক্ষণিক তথ্যের জন্য নির্ভর করতে হতো রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের উপর।
বিনোদন নিয়ে তেমন কথাবার্তা না হলেও তথ্য ও সংবাদ প্রদানের ক্ষেত্রে তাদের নিরপেক্ষতা বরাবরই প্রশ্নবিদ্ধ।
কিন্তু ১৯৯৮ সালে প্রথম বেসরকারি গণমাধ্যম হিসেবে একুশে টিভির জন্মের পর গণমাধ্যম সম্পর্কে মানুষের ধারণা বদলে যেতে শুরু করে।
দেড় যুগের পথ পরিক্রমায় দেশটিতে এখন দুই ডজনের বেশি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল এবং আরো বেশ কিছু সংখ্যক এফএম রেডিও রয়েছে।
এতদিন এগুলো সুনির্দিষ্ট কোনও নিয়মের আওতায় ছিল না।
কিন্তু দেশটির সরকার এখন ভাবছে এদেরকে একটি আইনের আওতায় নিয়ে আসার কথা।
এর উদ্দেশ্যে মন্ত্রিসভা বছর দেড়েক আগেই একটি নীতিমালা অনুমোদন করেছে।
এখন এই নীতিমালার আলোকে চলছে একটি আইন প্রণয়ন ও সম্প্রচার কমিশন গঠনের কাজ।
Image captionবাংলাদেশে এখন দুই ডজনেরও বেশি টেলিভিশন চ্যানেল সম্প্রচারে রয়েছে।
এজন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. গোলাম রহমানের নেতৃত্বে ৩৮ সদস্যের একটি কমিটি মাস ছয়েকের বেশি সময় ধরে কাজ করছে।
ড. রহমান জানাচ্ছেন এরই মধ্যে কয়েকটি বৈঠক করে তারা একটি আইনের প্রাথমিক খসড়া তৈরি করেছেন।
এই খসড়ার উপর আলোচনার জন্য আজও (বৃহস্পতিবার) কমিটির একটি বৈঠক হবার কথা।
কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে এতদিন পর এসে গণমাধ্যমের জন্য একটি সম্প্রচার আইন করার প্রয়োজন কেন দেখা দিল?
স্যাটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেল আই'য়ের একজন উদ্যোক্তা ও বেসরকারি টিভি মালিকদের সংগঠন অ্যাটকোর সাধারণ সম্পাদক শাইখ সিরাজ বলছেন, আইনের প্রয়োজনীয়তার পক্ষে-বিপক্ষে দু'রকমেরই মত আছে।
“সবকিছু যদি বিচার বিশ্লেষণ করা হয়, তাহলে একটা গাইডলাইনের প্রয়োজন আছে। সেটা আইন করে হবে না কিভাবে হবে আমি জানিনা। তবে এটুকু বুঝি গণমাধ্যম যেটুকু স্বাধীনতা ভোগ করেছে, এটা দীর্ঘ একটি পথ পরিক্রমায় যুদ্ধ করতে করতে এখানে এসে দাঁড়িয়েছে। সেটাকে বর্তমান সময়ে এসে ব্যাহত করা ঠিক হবে না।”
ফিরে যাই গলির মুদি দোকানদার সালাহউদ্দিন জুয়েলের কাছে। তিনিও গণমাধ্যমের জন্য আইনের পক্ষে।
তবে এর ফলে গণমাধ্যমের উপর যে একটি সরকারি সেন্সরশিপ আরোপ হতে পারে, সেই আশঙ্কাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না তিনি।
বলছিলেন, "নীতিমালা করলে একটা সমস্যা হইব যে অনেক কিছু জানা যাইব না।"
এদিকে, ড. গোলাম রহমানের সাথে যোগাযোগ করে জানা যাচ্ছে, তারা খসড়ার কাজ প্রায় চূড়ান্ত করে এনেছেন।
আশা করছেন সংসদের চলমান শীতকালীন অধিবেশনেই আইনটি পাশ করার জন্য উত্থাপন করা যাবে।
ওদিকে, শাইখ সিরাজ, যিনি নিজেও ওই কমিটির একজন সদস্য, তিনি বলছেন, খসড়া আইনের সংজ্ঞার ভাষা এবং অনেকগুলো ধারা-উপধারা নিয়েই তাদের আপত্তি রয়েছে।
এগুলো লিখিত আকারে তাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে কমিটির বৈঠকে তুলে ধরা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের অগাস্ট সালে বাংলাদেশের মন্ত্রিসভায় জাতীয় সম্প্রচার নীতিমালা অনুমোদিত হওয়ার পর অনেকেই বলেছিলেন যে এটি সম্প্রচার মাধ্যমের কণ্ঠ চেপে ধরার সুযোগ করে দেবে।
ওই নীতিমালাতেই একটি স্বাধীন সম্প্রচার কমিশন গঠন ও সম্প্রচার আইন প্রণয়নের দিক নির্দেশনা দেয়া ছিল।
--------বিবিসি বাংলা

No comments:

Post a Comment

 

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি

সম্পাদকীয় কার্যলয়

Rua padre germano mayar, cristo rio -80040-170 Curitiba, Brazil. Contact: +55 41 30583822 email: worldnewsbbr@gmail.com Website: http://worldnewsbbr.blogspot.com.br

সম্পাদক ও প্রকাশক

Jahangir Alom
Email- worldnewsbb2@gmail.com
worldnewsbbbrazil@gmail.com
 
Blogger Templates