ভূমিকম্পে ধূলিসাৎ হয়ে যাওয়া বাড়িতে ফিরে অক্ষত জিনিসপত্র উদ্ধারের চেষ্টা করছেন ইন্দোনেশিয়ার পিদি জায়া এলাকার কুতা পাঙ্গোয়া গ্রামের প্রধান মারতোনিস। গতকাল তোলা ছবি। ছবি : এএফপি
ইন্দোনেশিয়ায় ভূমিকম্প পরবর্তী কম্পন স্থানীয় লোকজনের দুর্ভোগ আরো বাড়িয়ে দিচ্ছে। বুধবার আঘাত হানা ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগটিতে গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা ১০০ ছাড়িয়েছে।
আহত হয়েছে কয়েক শ মানুষ। আহতদের চিকিত্সাসেবা নিশ্চিত করতে কর্মকর্তারা জরুরিভিত্তিতে ওষুধ, চিকিত্সাসামগ্রী ও চিকিৎসক পাঠানোর আবেদন জানিয়েছেন।
৬ দশমিক ৫ তীব্রতার শক্তিশালী ভূমিকম্পের আঘাতে আচেহ প্রদেশে কয়েক শ বাড়ি, মসজিদ ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। ২০০৪ সালে এ অঞ্চলে একটি প্রলয়ংকরী সুনামি আঘাত হানে। এতে গোটা অঞ্চল লণ্ডভণ্ড হয়ে যায়। মারা যায় এক লাখ ৬০ হাজারেরও বেশি লোক। গতকাল তল্লাশি ও উদ্ধারকর্মীদের অত্যাধুনিক শনাক্তকরণ সরঞ্জামাদি নিয়ে ধ্বংসস্তূপের ভেতর জীবিতদের সন্ধানে তল্লাশি চালিয়ে যেতে দেখা গেছে। যদিও ভূমিকম্পের আঘাত হানার পর এক দিনের বেশি সময় পার হয়ে যাওয়ায় ধ্বংসস্তূপের ভেতরে কারো জীবিত থাকার সম্ভাবনা ক্রমেই ক্ষীণ হয়ে এসেছে।
জাতীয় দুর্যোগ সংস্থার মুখপাত্র সুতোপো পুরোউ নুগরোহো বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘এই স্ক্যান মেশিনের সাহায্যে ধ্বংসস্তূপের ভেতরে কোনো জীবিত বা মৃত ব্যক্তিকে দেখা যাবে। ’ তিনি আরো জানান, মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৯৯ জনে দাঁড়িয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোর ধ্বংসস্তূপ অপসারণে কয়েক হাজার সেনা ও জরুরি কর্মী মোতায়েন করা হয়েছে।
আচেহ প্রদেশের কুতা পাঙওয়া গ্রামের মারতোনিস নামের একজন ভূমিকম্পের দুর্যোগের বর্ণনা দিতে গিয়ে জানান, যখন ভূমিকম্পটি আঘাত হানে তখন কারো দিকে তাকানোর অবসর ছিল না। সবাই নিজেকে বাঁচাতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। তার গ্রামের সব বাড়ি মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। ভূমিকম্পে তাঁর মা মারা গেছেন বলে জানান মারতোনিস। তাঁর গ্রামের ১৫ জন মারা গেছে। তাঁদের অনেকেই একই পরিবারের। তাদের সবাইকে একটি কবরে সমাহিত করা হয়েছে।
প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদো দুর্যোগকবলিত প্রদেশের জন্য প্রার্থনা করতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি তাঁর টুইটার অ্যাকাউন্টে বলেন, ‘আচেহ্ একা নয়। ’ উদ্ধার তৎপরতায় গৃহহীন ও আহতদের প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে।
সূত্র : এএফপি।
No comments:
Post a Comment