ওয়ার্ল্ড নিউজ বিবি ডেস্ক : যীশুখৃষ্টের জন্মের ৪০০ বছর আগে থেকেই এটম সম্পর্কে মানুষের ধারণা ছিলো। গ্রীক দার্শনিক ডেমোক্রিটাস (Democritus) বলেছিলেন,-যদি কোনো বস্তুকে ক্রমাগত বিভক্ত করা হয়, তাহলে বস্তুটি ক্রমান্বয়ে এমন এক পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছবে যখন তাকে আর খন্ডিত করা যাবে না।
বস্তুর এই ক্ষুদ্রতম অংশকেই গ্রীক দার্শনিকরা নাম দিয়েছিলেন পরমাণু(Atom), এটি এসেছে গ্রীক শব্দ থেকে যার অর্থ - "যাকে আর ভাঙ্গা যায় না।"ডেমোক্রিটাসের মতে বিশ্বের যাবতীয় বস্তুই পরমাণু দ্বারা গঠিত আর বাকি অংশ শূন্য।
১৯৪৫ সালের ১৬ জুলাই তারিখে লস আলামাস থেকে ১২০ মাইল দূরে আলামাগোরেজ (Alamagorage) প্রথম পরীক্ষামূলক পারমাণবিক বোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। যার ধ্বংস ক্ষমতা ছিলো -১৯,০০০ শর্ট টন (১৭,০০০ মেট্রিক টন) টিএনটি।
এরপর বিশ্বের প্রথম আণবিক বোমার বাস্তব প্রয়োগ হয় ১৯৪৫ সালের ৬ আগস্ট তারিখে জাপানের হিরোসিমা শহরে বোমা নিক্ষেপের মধ্য দিয়ে।
এরপর বিশ্বের প্রথম আণবিক বোমার বাস্তব প্রয়োগ হয় ১৯৪৫ সালের ৬ আগস্ট তারিখে জাপানের হিরোসিমা শহরে বোমা নিক্ষেপের মধ্য দিয়ে।
হিরোসিমাতে যে পারমাণবিক বোমাটি নিক্ষেপ করা হয়েছিলো তার ধ্বংস ক্ষমতা ছিলো ১৩,০০০ শর্ট টন (১১,৮০০ মেট্রিক টন) টিএনটি। বোমাটির নিজের ওজন ছিলো ৯,০০০ পাউন্ড (৪,১০০ কেজি)। এতে প্রাণহানি ঘটেছিলো ৯২ হাজার লোকের।
এর একটি সৌখিন নামও ছিলো 'ক্ষুদে বালক' (Little Boy).
এরই মাত্র তিনদিন পরে নিক্ষেপ করা হয়েছিলো দ্বিতীয় বোমাটি।
১৯৪৫ সালের ৯ আগস্ট তারিখে জাপানের নাগাসাকি শহরে ফেলা হয়েছিলো দ্বিতীয় বোমাটি।
এতে লোক নিহত হয়েছিলো ৪০,০০০ জন। বোমাটির ওজন ছিলো ১০,০০০ পাউন্ড (৪,৫০০ কেজি)। দ্বিতীয় বোমাটির ছদ্দনাম ছিলো 'মোটা মানুষ' (Fatman).
এর একটি সৌখিন নামও ছিলো 'ক্ষুদে বালক' (Little Boy).
এরই মাত্র তিনদিন পরে নিক্ষেপ করা হয়েছিলো দ্বিতীয় বোমাটি।
১৯৪৫ সালের ৯ আগস্ট তারিখে জাপানের নাগাসাকি শহরে ফেলা হয়েছিলো দ্বিতীয় বোমাটি।
এতে লোক নিহত হয়েছিলো ৪০,০০০ জন। বোমাটির ওজন ছিলো ১০,০০০ পাউন্ড (৪,৫০০ কেজি)। দ্বিতীয় বোমাটির ছদ্দনাম ছিলো 'মোটা মানুষ' (Fatman).
পারমাণবিক বোমা তৈরির জন্য যে পদার্থটি ব্যবহৃত হয় তার নাম ইউরেনিয়াম (Uranium). বিজ্ঞানীরা সংক্ষেপে পদার্থটির নাম বোঝানোর জন্য শুধু এর প্রথম অক্ষরটি (U) ব্যবহার করেন।
ইউরেনিয়াম অত্যন্ত ভারী তেজস্ক্রিয় পদার্থ। ভূ-পৃষ্ঠের উপরিভাগে এ পদার্থের পরিমাণ শতকরা ০.০০৪% ভাগ। ভূ-ত্বকের ৬.৪০ কিলোমিটার গভীর পর্যন্ত এর মজুদের পরিমাণ প্রায় ১৩,০০,০০,০০,০০,০০,০০০ টন।
আফ্রিকার বলিভিয়ান কঙ্গোতে এবং কানাডার গ্রেট বিয়ার হৃদ এলাকায় এর আকরিক পাওয়া গেছে। এছাড়াও অ্যারিজোনা, ক্যালিফোর্নিয়া, কলোরাডোতেও অল্পবিস্তর ইউরেনিয়ামের আকরিকের সন্ধান পাওয়া গেছে।
আকরিক থেকে শোধন করে ইউরেনিয়াম আইসোটোপ পাওয়া যায়। যেমন-ইউরেনিয়াম-২৩৮, যার পারমাণবিক ওজন ২৩৮ অর্থাৎ এর নিউক্লিয়াসে আছে ৯২টি প্রোটন এবং ১৪৬টি নিউট্রন। প্রকৃতিতে এধরনের আইসোটোপই বেশিমাত্রায় পাওয়া যায়। এক হিসাবে দেখা গেছে শতকরা ৯৯.৩% ভাগই এ জাতীয় ইউরেনিয়াম।
দ্বিতীয় আইসোটোপটির নাম ইউরেনিয়াম-২৩৫ অর্থাৎ এর নিউক্লিয়াসে আছে ৯২টি প্রোটন এবং ১৪৩টি নিউট্রন। প্রকৃতিতে এদের পরিমাণ শতকরা মাত্র ০.৭% ভাগ।
তৃতীয় প্রকারের আইসোটোপের পরিমাণ একেবারেই নগণ্য, যা প্রায় হিসেবের মধ্যেই ধরা হয় না।
পারমাণবিক বোমা তৈরির জন্য ব্যবহৃত হয় ইউরেনিয়াম-২৩৫। ইউরেনিয়াম-২৩৮ কে নিউট্রন কণা দ্বারা আঘাত করলে নিউট্রন এর নিউক্লিয়াসে ঢুকে পড়ে এবং সামান্য সময়ের জন্য এর পারমাণবিক ওজন দাঁড়ায়-২৩৯। ইউরেনিয়াম পরমাণুটি সাথে সাথে দুটো নিউক্লিয়ার ইলেকট্রন অর্থাৎ দুটি বীটা রশ্মি ত্যাগ করে প্লুটোনিয়াম পরমাণুতে পরিণত হয়।
প্লুটোনিয়ামের পারমাণবিক ওজন হয়-২৩৯। কিন্তু ইউরেনিয়াম-২৩৫ এর বেলায় প্লুটোনিয়াম হয় না। বিজ্ঞানী অটোহ্যান ইউরেনিয়াম-২৩৫ এর উপর শক্তিশালী নিউট্রন নিক্ষিপ্ত করে ভিন্ন ব্যাপার অবলোকন করেন।
আসলে বিজ্ঞানী অটোহ্যানের এই পরীক্ষার ফলাফলই হলো পারমাণবিক বোমা তৈরির মূল তত্ত্ব।
ইউরেনিয়াম-২৩৫ এর উপর নিউট্রন আঘাত করলে ইউরেনিয়াম পরমাণুটি দুটো পৃথক অংশে বিভক্ত হয়ে পড়ে। তার মানে ইউরেনিয়াম ধ্বংস হয়ে নতুন মৌলিক পদার্থের সৃষ্টি করে।
এই নতুন পদার্থের একটির নাম বেরিয়াম পরমাণু এবং অপরটি ক্রিপটন পরমাণু। বেরিয়াম এবং ক্রিপটন পরমাণু সৃষ্টি হবার সাথে সাথে তিনটি নতুন নিউট্রন কণা এবং বিপুল পরিমাণ শক্তির সৃষ্টি করে।
সৃষ্ট এই তিনটি নিউট্রন পরমাণু অন্য তিনটি অক্ষত ইউরেনিয়াম পরমাণুকে আঘাত করে এবং একই পরিস্থিতির পুনরাবৃত্তি ঘটে। ইউরেনিয়াম পরমাণুর খন্ডিত হওয়ার এই প্রক্রিয়াকে বলা হয় বিভাজন বিক্রিয়া বা ফিউশন বিক্রিয়া।
পরমাণু বিভাজন হওয়ায় যে নতুন নিউট্রন কণার জন্ম দেয় তা আবার অন্য পরমাণুকে আঘাত করে। এভাবেই বিক্রিয়াটি চলতে থাকে ধারাবাহিক ভাবে। যাকে বলা হয় Chain Reaction.
কিন্তু শক্তির সৃষ্টি হয় কেমন করে ওটাই হলো আসল কথা। যেহেতু ইউরেনিয়াম একটি তেজস্ক্রিয় পদার্থ সেজন্য সে স্বতঃস্ফুর্তভাবে রশ্মি বিকিরণ করে এবং স্থায়িত্ব আনার চেষ্টা করে।
কিন্তু এর স্থায়িত্ব কম বলে এর নিউক্লিয়াস অন্য পরমাণুর নিউক্লিয়াসের তুলনায় সহজে ভেঙ্গে যায়।
বিভাজন প্রক্রিয়াটি ঘটে যাওয়ার পর ইউরেনিয়াম পরমাণুর অস্তিত্ব লোপ পেয়ে যায় এবং সাথে সাথে কিছু পদার্থের ক্ষয় হয়। তার মানে দুটো নতুন পদার্থ বেরিয়াম এবং এবং ক্রিপটন তৈরি হয়। তাদের মোট ওজন ইউরেনিয়ামের মোট ওজনের চেয়ে কিছু কম হয়।
এই হারানো ওজন শক্তিতে পরিণত হয়। পদার্থ যে শক্তিতে রূপান্তরিত হয় তা বিজ্ঞানী আইনস্টাইনের আগে কেউ ভাবতে পারেননি।
বিজ্ঞানী আইনস্টাইনই সর্বপ্রথম ভরশক্তি বিষয়ে সূত্র দেন। পরবর্তী সময় বিজ্ঞানী করক্রফট এবং ওয়াগটন তেজস্ক্রিয় পদার্থের বিভাজনের উপর পরীক্ষা করে আইনস্টাইনের ভরশক্তি (E=MC2) সূত্রের সত্যতা প্রমাণ করেন।
ইউরেনিয়াম-২৩৫ এর বিভাজন বিক্রিয়া ঘটার সময় সামান্য পরিমাণ ভরশক্তিতে রূপান্তরিত হয়।
ইউরেনিয়াম অত্যন্ত ভারী তেজস্ক্রিয় পদার্থ। ভূ-পৃষ্ঠের উপরিভাগে এ পদার্থের পরিমাণ শতকরা ০.০০৪% ভাগ। ভূ-ত্বকের ৬.৪০ কিলোমিটার গভীর পর্যন্ত এর মজুদের পরিমাণ প্রায় ১৩,০০,০০,০০,০০,০০,০০০ টন।
আফ্রিকার বলিভিয়ান কঙ্গোতে এবং কানাডার গ্রেট বিয়ার হৃদ এলাকায় এর আকরিক পাওয়া গেছে। এছাড়াও অ্যারিজোনা, ক্যালিফোর্নিয়া, কলোরাডোতেও অল্পবিস্তর ইউরেনিয়ামের আকরিকের সন্ধান পাওয়া গেছে।
আকরিক থেকে শোধন করে ইউরেনিয়াম আইসোটোপ পাওয়া যায়। যেমন-ইউরেনিয়াম-২৩৮, যার পারমাণবিক ওজন ২৩৮ অর্থাৎ এর নিউক্লিয়াসে আছে ৯২টি প্রোটন এবং ১৪৬টি নিউট্রন। প্রকৃতিতে এধরনের আইসোটোপই বেশিমাত্রায় পাওয়া যায়। এক হিসাবে দেখা গেছে শতকরা ৯৯.৩% ভাগই এ জাতীয় ইউরেনিয়াম।
দ্বিতীয় আইসোটোপটির নাম ইউরেনিয়াম-২৩৫ অর্থাৎ এর নিউক্লিয়াসে আছে ৯২টি প্রোটন এবং ১৪৩টি নিউট্রন। প্রকৃতিতে এদের পরিমাণ শতকরা মাত্র ০.৭% ভাগ।
তৃতীয় প্রকারের আইসোটোপের পরিমাণ একেবারেই নগণ্য, যা প্রায় হিসেবের মধ্যেই ধরা হয় না।
পারমাণবিক বোমা তৈরির জন্য ব্যবহৃত হয় ইউরেনিয়াম-২৩৫। ইউরেনিয়াম-২৩৮ কে নিউট্রন কণা দ্বারা আঘাত করলে নিউট্রন এর নিউক্লিয়াসে ঢুকে পড়ে এবং সামান্য সময়ের জন্য এর পারমাণবিক ওজন দাঁড়ায়-২৩৯। ইউরেনিয়াম পরমাণুটি সাথে সাথে দুটো নিউক্লিয়ার ইলেকট্রন অর্থাৎ দুটি বীটা রশ্মি ত্যাগ করে প্লুটোনিয়াম পরমাণুতে পরিণত হয়।
প্লুটোনিয়ামের পারমাণবিক ওজন হয়-২৩৯। কিন্তু ইউরেনিয়াম-২৩৫ এর বেলায় প্লুটোনিয়াম হয় না। বিজ্ঞানী অটোহ্যান ইউরেনিয়াম-২৩৫ এর উপর শক্তিশালী নিউট্রন নিক্ষিপ্ত করে ভিন্ন ব্যাপার অবলোকন করেন।
আসলে বিজ্ঞানী অটোহ্যানের এই পরীক্ষার ফলাফলই হলো পারমাণবিক বোমা তৈরির মূল তত্ত্ব।
ইউরেনিয়াম-২৩৫ এর উপর নিউট্রন আঘাত করলে ইউরেনিয়াম পরমাণুটি দুটো পৃথক অংশে বিভক্ত হয়ে পড়ে। তার মানে ইউরেনিয়াম ধ্বংস হয়ে নতুন মৌলিক পদার্থের সৃষ্টি করে।
এই নতুন পদার্থের একটির নাম বেরিয়াম পরমাণু এবং অপরটি ক্রিপটন পরমাণু। বেরিয়াম এবং ক্রিপটন পরমাণু সৃষ্টি হবার সাথে সাথে তিনটি নতুন নিউট্রন কণা এবং বিপুল পরিমাণ শক্তির সৃষ্টি করে।
সৃষ্ট এই তিনটি নিউট্রন পরমাণু অন্য তিনটি অক্ষত ইউরেনিয়াম পরমাণুকে আঘাত করে এবং একই পরিস্থিতির পুনরাবৃত্তি ঘটে। ইউরেনিয়াম পরমাণুর খন্ডিত হওয়ার এই প্রক্রিয়াকে বলা হয় বিভাজন বিক্রিয়া বা ফিউশন বিক্রিয়া।
পরমাণু বিভাজন হওয়ায় যে নতুন নিউট্রন কণার জন্ম দেয় তা আবার অন্য পরমাণুকে আঘাত করে। এভাবেই বিক্রিয়াটি চলতে থাকে ধারাবাহিক ভাবে। যাকে বলা হয় Chain Reaction.
কিন্তু শক্তির সৃষ্টি হয় কেমন করে ওটাই হলো আসল কথা। যেহেতু ইউরেনিয়াম একটি তেজস্ক্রিয় পদার্থ সেজন্য সে স্বতঃস্ফুর্তভাবে রশ্মি বিকিরণ করে এবং স্থায়িত্ব আনার চেষ্টা করে।
কিন্তু এর স্থায়িত্ব কম বলে এর নিউক্লিয়াস অন্য পরমাণুর নিউক্লিয়াসের তুলনায় সহজে ভেঙ্গে যায়।
বিভাজন প্রক্রিয়াটি ঘটে যাওয়ার পর ইউরেনিয়াম পরমাণুর অস্তিত্ব লোপ পেয়ে যায় এবং সাথে সাথে কিছু পদার্থের ক্ষয় হয়। তার মানে দুটো নতুন পদার্থ বেরিয়াম এবং এবং ক্রিপটন তৈরি হয়। তাদের মোট ওজন ইউরেনিয়ামের মোট ওজনের চেয়ে কিছু কম হয়।
এই হারানো ওজন শক্তিতে পরিণত হয়। পদার্থ যে শক্তিতে রূপান্তরিত হয় তা বিজ্ঞানী আইনস্টাইনের আগে কেউ ভাবতে পারেননি।
বিজ্ঞানী আইনস্টাইনই সর্বপ্রথম ভরশক্তি বিষয়ে সূত্র দেন। পরবর্তী সময় বিজ্ঞানী করক্রফট এবং ওয়াগটন তেজস্ক্রিয় পদার্থের বিভাজনের উপর পরীক্ষা করে আইনস্টাইনের ভরশক্তি (E=MC2) সূত্রের সত্যতা প্রমাণ করেন।
ইউরেনিয়াম-২৩৫ এর বিভাজন বিক্রিয়া ঘটার সময় সামান্য পরিমাণ ভরশক্তিতে রূপান্তরিত হয়।
এখানে E মানে শক্তি (Energy), M মানে ভর (Mass) এবং C2 মানে আলোর গতির দ্বিগুণ (Speed of light multiplied by itself).
এটাতে দেখানো হয়েছে যে, একটি অতি ক্ষুদ্র ভরই একটি বড় শক্তিতে রূপান্তরিত হতে পারে। তাহলে এভাবে এক পাউন্ড (০.৫ কিলোগ্রাম) ইউরেনিয়াম-২৩৫ পদার্থ যদি এই প্রক্রিয়ায় একসাথে শক্তিতে রূপান্তরিত হয় তাহলে কত শক্তির সৃষ্টি হবে?
দেখা গেছে, এক পাউন্ড ইউরেনিয়াম-২৩৫ একসাথে বিভাজিত হলে যে শক্তির সৃষ্টি হবে তার পরিমাণ ১০ মিলিয়ন শর্ট টন (৯ মিলিয়ন মেট্রিক টন) টিএটি।
পারমাণবিক বিস্ফোরণের কারণে যে শক্তি বের হয় তা তাপ শক্তি, যান্ত্রিক শক্তি এবং বিদ্যুৎ শক্তিতে আত্নপ্রকাশ করে বিপুল ধ্বংস সাধন করে।
আগুন এবং প্রচন্ড উত্তাপ সৃষ্টি করে বোমা নিক্ষিপ্ত স্থানে ছড়িয়ে পড়ে।
ইউরেনিয়াম বিভাজনের জন্য অধিক বেগসম্পন্ন নিউট্রন কণার দরকার হয়। এখানে নিউট্রন হয় প্রক্ষেপক অর্থাৎ একে বুলেটের সাথে তুলনা করা হয়।
উৎস থেকে নিউট্রন বুলেটটি বের হওয়ার পর এর গতি বাড়ানোর জন্য যে যন্ত্রগুলো ব্যবহার করা হয় তাহলো - কসমোটোন, বেবাট্রোন, সাইক্লোট্রোন, সিনকোসাই ক্লোটেন ইত্যাদি।
এসব যন্ত্র নিউট্রন কণার গতিকে ত্বরান্বিত করে প্রচন্ড বেগে ইউরেনিয়াম পরমাণুর উপর নিক্ষেপ করতে সাহায্য করে।
গতিবর্ধক হিসেবে এ ধরনের একটি যন্ত্র ভেনডিগ্রাফ বৈদ্যুতিক জেনারেটর দ্বারা পারমাণবিক বোমার ভেতরে সংযুক্ত থাকে।
পারমাণবিক বোমার বিস্ফোরণ ঘটানোর জন্য নিউট্রন কণার তুলনা নেই। এ কণাটির কোনো চার্জ নেই। তাই কণাটি যখন পরমাণুর নিউক্লিয়াসের কাছে যায় তখন কোনো বিকর্ষণ বল অনুভূত হয় না। তাই এটা অতি সহজে এবং অল্প শক্তিতে পরমাণুর নিউক্লিয়াসে প্রবেশ করতে পারে।
কিন্তু প্রোটন, ডিউটারণ এবং আলফা কণা এরা সবাই ধনাত্নক চার্জ বহন করে। তাই এগুলোকে বুলেট হিসেবে পরমাণুর উপর নিক্ষেপ করলে বিকর্ষণ ফল হবে। তাই এরা সহজে নিউক্লিয়াসে প্রবেশ করতে পারে না।
হিরোশিমা ও নাগাসাকি শহরে পরমাণু বোমা হামলা চালানোর প্রায় ৭০ বছর পর এবার মার্কিন সরকার এই ধরনের বোমা তৈরির কাজে এক ট্রিলিয়ন ডলার অর্থ ব্যয় করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আগামী ৩০ বছরে নতুন প্রজন্মের এসব গণবিধ্বংসী অস্ত্র তৈরি করা হবে।
সিএনএস এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২০ সালের পর চার থেকে ছয় বছর সময়ের মধ্যে পরমাণু অস্ত্র তৈরি ও পরমাণু স্থাপনাগুলোতে গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারের কাজটি সম্পন্ন করা হবে। ওই সময় আমেরিকার মোট সামরিক বাজেটের শতকরা তিন ভাগ খরচ করা হবে পরমাণু অস্ত্র তৈরির কাজে।
বিশ্বের সবচেয়ে বেশি পরমাণু অস্ত্র রয়েছে আমেরিকায় এবং এটি একমাত্র দেশ যে মানবতার ওপর এই অস্ত্র ব্যবহার করে লাখ লাখ মানুষকে হত্যা করেছে। ফেডারেশন অব অ্যাটমিক সাইয়েনটিস্টের (এফএএস) হিসাব অনুযায়ী, আমেরিকার কাছে বর্তমানে ৪,৬৫০টি পরমাণু ওয়ারহেড রয়েছে। এর মধ্যে ২,১৩০টি স্বল্প সময়ের নোটিশে ব্যবহার করা যাবে। সেইসঙ্গে মার্কিন সরকারের হাতে রয়েছে ২,৭০০ অকেজো পরমাণু বোমা যেগুলোকে এখনো পুরোপুরি নিস্ক্রিয় করা হয়নি।
যদি প্রশ্ন ওঠে যে পৃথিবীর সবচেয়ে ভয়ানক অস্ত্র কী? তাহলে প্রথমেই যে অস্ত্রের নাম সবার মাথায় আসবে সেটা হলো পারমাণবিক বোমা। বর্তমানে বিশ্বে নয়টি দেশের কাছে মোট ১০ হাজার ৩০০ পারমাণবিক বোমা আছে৷
তবে ১৯৮৫ সালে বিশ্বে মোট ৬৮ হাজার সক্রিয় পরমাণু বোমা ছিল। তাঁর পর থেকে বিশ্বব্যাপী পরমাণু অস্ত্র হ্রাসকরণ চুক্তির আওতায় প্রতিবছরই কমেছে এ মারণাস্ত্র। তবে এখনো বিশ্বে যে পরিমাণ পরমাণু বোমা মজুদ আছে তা দিয়ে গোটা বিশ্বকে ৩৮ বার পুরোপুরি ধ্বংস করা যাবে বলে জানিয়েছে স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউট (এসইপিআরআই)।
এসইপিআরআইয়ের তথ্য অনুযায়ী দেখে নিন অস্ত্রের দিক দিয়ে বিশ্বের পরমাণু শক্তিধর কোন দেশের কাছে কতগুলো পারমাণবিক বোমা মজুদ আছে :
১. মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
বিশ্বে প্রথম পরমাণু বোমা প্রস্তুতকারক দেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এবং যুক্তরাষ্ট্রই একমাত্র দেশ যারা এটা যুদ্ধেও ব্যবহার করেছে৷ এসইপিআরআইয়ের তথ্যমতে দেশটির এখন চার হাজার ৫০০ পরমাণু বোমা আছে। যার মধ্যে এক হাজার ৯০০ বোমা সক্রিয়।
২. রাশিয়া
১৯৪৯ সালে প্রথম পারমাণবিক পরীক্ষা চালিয়েছিল রাশিয়া। দেশটিতে বর্তমানে চার হাজার ৯০০ পারমাণবিক বোমা আছে। যার মধ্যে এক হাজার ৭৮০টি বোমা সক্রিয়।
৩. ফ্রান্স
ফ্রান্সের কাছে পরমাণু ওয়ারহেড আছে তিনশর মতো৷ যার মধ্যে অন্তত ২৯০টি সক্রিয়া বোমা। দেশটির পারমাণবিক বোমার বেশির ভাগই রয়েছে সাবমেরিনে৷ এ ছাড়া দেশটির অন্তত একটি সাবমেরিন সবসময় পারমাণবিক বোমা নিয়ে টহল দেয়৷
৪. যুক্তরাজ্য
২১৫টি পরমাণু বোমা রয়েছে যুক্তরাজ্যের কাছে৷ যার মধ্যে ১৫০টি বোমা এখনো সক্রিয়। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য এই দেশ ১৯৫২ সালে প্রথম পরমাণু পরীক্ষা চালায়৷
৫. চীন
২৬০টি পরমাণু বোমা আছে চীনের৷ তবে দেশটির সক্রিয় পরমাণু বোমার সংখ্যাটি অজানা। রাশিয়া বা যুক্তরাষ্ট্রের তুলনায় সংখ্যাটা কম হলেও দেশটি ধীরে ধীরে এই সংখ্যা বাড়াচ্ছে৷ স্থল, আকাশ বা সমুদ্রপথে এসব বোমা ছোঁড়া সম্ভব৷
৬. পাকিস্তান
পাকিস্তানের কাছে রয়েছে ১২০ থেকে ১৩০টি পরমাণু বোমা৷ সাম্প্রতিক সময়ে পরমাণু বোমার সংখ্যা বাড়িয়েছে দেশটি৷ অনেকেই আশঙ্কা করেন, প্রতিবেশী দেশ ভারতের সঙ্গে দেশটির লড়াই কোনো একসময় পারমাণবিক যুদ্ধে রূপ নিতে পারে৷
৭. ভারত
ভারত প্রথম পরমাণু পরীক্ষা চালায় ১৯৭৪ সালে৷ দেশটির কাছে ১১০ থেকে ১২০টি পরমাণু বোমা রয়েছে৷ ভারত অবশ্য জানিয়েছে, তারা আগে কোনো দেশকে আঘাত করবে না। আর যেসব দেশের পরমাণু বোমা নেই, সেসব দেশের বিরুদ্ধে তারা এ ধরনের বোমা ব্যবহার করবে না৷
৮. উত্তর কোরিয়া
বিশ্বে উত্তর কোরিয়ার পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে সবচেয়ে বেশি ধোঁয়াশা আছে। তবে এখন পর্যন্ত প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, উত্তর কোরিয়ার কাছে ১০টির কম পরমাণু বোমা রয়েছে৷ তবে দেশটির নিজেদের এ ধরনের বোমা তৈরির সক্ষমতা রয়েছে কি না, তা নিশ্চিত নয়৷
৯. ইসরায়েল
ইসরায়েল অবশ্য নিজের দেশের পরমাণু কর্মসূচি সম্পর্কে তেমন কিছু জনসমক্ষে প্রকাশ করে না৷ তবে দেশটির কাছে ষাট থেকে ৪০০টির মতো পরমাণু ‘ওয়ারহেড’ আছে বলে ধারণা করা হয়৷
উল্লেখ্য, ১৯৪৫ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে জাপানের হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে ফেলা মার্কিন পরমাণু বোমায় দুই লাখের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়।
এখন পারমাণবিক বোমা আরও শক্তিশালী, আরও ভয়ংকর। সেই পরিপ্রেক্ষিতেই ওই গবেষণায় বলা হয়, এখন কোনো পারমাণিবক যুদ্ধ মানেই তা মানবসভ্যতা ধ্বংস হয়ে যাওয়ার শামিল।
No comments:
Post a Comment