অপরূপ রূপসী জাফলং এর নাম কে না শুনেছে? কিন্তু নিজের চোখে দেখা হয়ত হয়ে ওঠে নি অনেকেরই। সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকায় জাফলং এর অবস্থান। খাসিয়া-জৈন্তা পাহাড়ের কোলে জেগে থাকা অপূর্ব এই এলাকাটি শুধু পাহাড় নয়, সমৃদ্ধ ঘন সবুজ বনে।
নদীর সাথে পাহাড়ের হয়েছে যেখানে মিলন সৌন্দর্য সীমা ছাড়িয়েছে সেখানেই। মেঘালয়ের নদী ডাউকি পিয়াইন নামে বইছে জাফলং এর বুকে। সীমান্তের ওপারে ভারতের সুউচ্চ পাহাড়শ্রেণী, সেই পাহাড়ে পাহাড়ে ছটে চলা ঝর্ণা, পাহাড় চূড়ায় মেঘের লুকোচুরি খেলা আর এপারে হিমেল স্বচ্ছ জলের পিয়াইন নদী, জলের নিচে পাথরের বিছানা, সবুজ পাহাড়, অরণ্য আর কি চাই?
পাথর উত্তোলনের দৃশ্য। ছবি: সংগৃহীত
ঋতু যখন রঙ বদলায়, রঙ বদলায় জাফলং ও। বর্ষায় হয়ে ওঠে দূরন্ত কিশোরীর মতো চঞ্চল। ঝর্ণারা প্রাণ ফিরে পায়। তবে যারা পাহাড়ে ট্রেকিং করতে ভালোবাসেন তাদের একটু আফসোস হবে বৈকি। কারণ বেশিরভাগ ঝর্ণাই সীমান্তের ওপারে আর সেখানে যাওয়ার অনুমতি নেই আমাদের। ঝর্ণার জল না ছুঁয়ে এক তৃষ্ণার্ত চাতক হয়ে দেখতে হবে আপনাকে। কখনো ভরবে না মন, এও এক আনন্দ! শীতের রূপ ভিন্ন এখানে। কুয়াশা, মেঘে মাখামাখি দিন। কোথাও পাতা ঝরার গান, কোথাও বা কুয়াশা ভেদ করে উঠেছে সূর্য। বসন্ত থেকে গ্রীষ্ম নানান রঙের ফুলে আর নতুন পাতায় সেজে ওঠে পাহাড়, লোকালয়। তাই যে কোন ঋতুতেই আপনাকে মুগ্ধ করবে জাফলং।
দূরে ডাউকি ব্রিজ। ছবি: সংগৃহীত
কীভাবে যাবেন:
ঢাকা থেকে সিলেট যাওয়ার সরাসরি বাস রয়েছে। কিছুক্ষণ পর পরই ছাড়ে বাসগুলো। ফকিরাপুল, সায়েদাবাদ আর মহাখালী থেকে বাস পাবেন। ট্রেনে আসতে চাইলে কমলাপুর থেকে আসতে পারেন। প্রতিদিন সকাল সাড়ে ৬টা ৪০ মিনিটে পারাবত আর দুপুর ২টায় জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস ছেড়ে যায় সিলেটের উদ্দেশ্যে। বুধবার ছাড়া প্রতিদিন রাত ৯টা ৫০ মিনিটে ছাড়ে উপবন এক্সপ্রেস।
ম্যাপে দেখে নিন জাফলং এর অবস্থান।
সিলেটের শিবগঞ্জ থেকে প্রতিঘন্টায় বাস ছাড়ে জাফলং এর উদ্দেশ্যে। খরচ কমাতে চাইলে সেই বাসে চেপে চলে যেতে পারেন জাফলং। আবার দল বড় হলে সিলেট থেকে মাইক্রো ভাড়া নিয়ে যেতে পারেন।
কোথায় থাকবেন:
জাফলং থেকে সন্ধ্যার মধ্যেই ফিরে আসুন সিলেট। সিলেটে ছোট বড় নানান মানের হোটেল আছে। পছন্দমত উঠতে পারেন। দরদাম করে নেবেন অবশ্যই।
No comments:
Post a Comment