আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জরুরি সহায়তা না পেলে ইয়েমেনের এক কোটি ৭০ লাখ মানুষ দুর্ভিক্ষের মধ্যে পড়তে পারে বলে সতর্ক করেছে জাতিসংঘ। ইয়েমেনের জনগণের জন্য তহবিল সংগ্রহের লক্ষ্যে সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় এক সম্মেলনে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এ কথা বলেন।
গুতেরেস বলেন, ‘খাবার ও জরুরি সাহায্যের অভাবে প্রতি ১০ মিনিটে একজন করে ৫ বছরের কম বয়সী শিশু মারা যাচ্ছে। এখানে যখন সম্মেলন চলছে তখন ইয়েমেনে ৫০ জন শিশু মারা যাচ্ছে, যা আটকানো সম্ভব।’ জাতিসংঘ জানিয়েছে, মঙ্গলবারের ওই সম্মেলনে দাতা দেশগুলো ১১০ কোটি ডলার সাহায্য দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তবে তা প্রয়োজনের তুলনায় অর্ধেক। এ দিয়ে বিশাল জনগোষ্ঠীর খাদ্য সমস্যা মেটানো সম্ভব না। গুতেরেস বলেন, ‘ইয়েমেনের পরিস্থিতি বিশ্বের সবচেয়ে বড় মানবিক বিপর্যয়। এই কঠিন অবস্থা থেকে বের হতে ১১০ কোটি মার্কিন ডলার প্রয়োজনের তুলনায় অর্ধেক। এর আগে ইয়েমেনের বিপর্যয়পূর্ণ পরিস্থিতির কথা তুলে ধরে জাতিসংঘের পক্ষ থেকে ২১০ কোটি মার্কিন ডলার অর্থ সহায়তা চাওয়া হয়েছিল।
গৃহযুদ্ধ শুরু হওয়ার আগে থেকেই মধ্যপ্রাচ্যের দরিদ্রতম দেশ ছিল ইয়েমেন। তবে দুই বছরের গৃহযুদ্ধের পর সেই দেশটি এখন দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে বলে সতর্ক করেছে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি)। জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, ইয়েমেনের ২ কোটি ৫৬ লাখ মানুষের মধ্যে ১ কোটি ৯০ লাখ মানুষের জন্য জরুরি ভিত্তিতে সহায়তা প্রয়োজন। এর মধ্যে প্রায় ৭০ লাখ মানুষ ‘মারাত্মকভাবে খাদ্য অনিরাপত্তায়’ ভুগছে। তাদের জন্য দ্রুত খাদ্য সহায়তা প্রয়োজন। এছাড়া ২২ লাখ শিশু প্রচণ্ড রকমের পুষ্টিহীনতায় ভুগছে। এর মধ্যে প্রায় পাঁচ লাখ শিশু মারাত্মক মৃত্যুঝুঁকিতে রয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালের ২৬ মার্চ থেকে সৌদি নেতৃত্বাধীন জোট বাহিনী ইয়েমেনে ‘অপারেশন ডিসাইসিভ স্টর্ম’ নামে সামরিক অভিযান শুরু করে। দেশটির ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট আবদ-রাব্বু মানসুর হাদিকে পুনরায় ক্ষমতায় বসানোর জন্য এই অভিযান। এর আগে ইরান সমর্থিত শিয়াপন্থী হুথি বিদ্রোহীদের উত্থানের মুখে দেশ ছাড়েন হাদি। আল জাজিরা।
No comments:
Post a Comment