Social Icons

Sunday, April 23, 2017

বিশৃঙ্খলা চরমে লাগেজ পেতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা


শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং শাখায় নিয়ন্ত্রণ নেই বিমানের কেন্দ্রীয় ব্যবস্থাপনা বিভাগের। সঠিক সময়ে সঠিকভাবে দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের ব্যর্থতার অভিযোগ প্রতিদিনই আসছে। এসব অভিযোগের প্রমাণসহ এমডির দফতরে জমা দেওয়ার পরও কোনো ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না। যার ফলে লাগেজ হ্যান্ডেলিং ও নির্ধারিত বেল্টে    লাগেজ তোলা নিয়ে প্রতিনিয়ত বিশৃঙ্খলা হচ্ছে। অথচ আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুযায়ী একটি ফ্লাইট অবতরণের ১২ মিনিটের মধ্যে লাগেজ ডেলিভারি শুরু করতে হবে এবং ২৯ মিনিটের মধ্যে সব লাগেজ ডেলিভারি শেষ করার কথা। অথচ বিমান লাগেজ শুরুর জন্য এক ঘণ্টার আগে বেল্টই চালু করতে পারছে না। গতকাল দুপুরে মুম্বাই থেকে আসা জেট এয়ারওয়েজের ফ্লাইটটি শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে ১১:২০ মিনিটে। এ সময় এয়ারপোর্টে তেমন ভিড় ছিল না। চাপ ছিল অপেক্ষাকৃত কম। অথচ জেট এয়ার অবতরণের পর শুধু কনভয় বেল্ট চালু করতেই সময় লেগেছে এক ঘণ্টার বেশি। এক ঘণ্টা পর দুপুর ১২:২০ মিনিটে এয়ার থেকে লাগেজ নামিয়ে বেল্টে পাঠানো হয়। এ কারণে ওই ফ্লাইটে আসা যাত্রীদের লাগেজের জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়। ফলে দীর্ঘ ভ্রমণের পর অনেক যাত্রীই সঠিক সময়ে ঢাকায় এসেও গন্তব্যে পৌঁছাতে পারেননি শুধু লাগেজ বিড়ম্বনার কারণে। হারুণ নামের এক যাত্রী অভিযোগ করে বলেন, একই সময় মিহির এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটেও একই কাণ্ড ঘটে। ওই  ফ্লাইট অবতরণের পর দেরিতে লাগেজ ডেলিভারি শুরু করার কিছুক্ষণ পরই তা আবার বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় যাত্রীরা জানতে চাইলে বেল্ট অপারেটর জানান, উড়োজাহাজ থেকে দ্রুততার সঙ্গে লাগেজ আনতে পারছে না বিমানের গ্রাউেন্ড হ্যান্ডলিং শাখার কর্মচারীরা। অথচ বিদেশি বড় বড় এয়ার লাইন্সের লাগেজ ডেলিভারি সবার আগে সঠিক সময়ে সঠিকভাবে করে। কারণ তাদের কাছ থেকে অতিরিক্ত উেকাচ আদায়ে জড়িত বিমানের এক শ্রেণির স্টাফ। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, প্রতিটি ফ্লাইট থেকে লাগেজসহ মালামাল ওঠানো ও নামানোর দায়িত্বে বাংলাদেশ বিমানের কর্মচারীরা। মালামাল বা লাগেজ কখন বেল্টে আসবে, কখন সংশ্লিষ্ট যাত্রীরা পাবেন তার কোনো ঠিক-ঠিকানা নেই। এ কারণে শাহজালাল দিয়ে যাতায়াতকারী যাত্রীরা বাংলাদেশ বিমানের কর্মচারীদের কাছে জিম্মি। আর বিমান জিম্মি সিবিএর মশিকুর বাহিনীর কাছে। জানা গেছে, মধ্যপ্রাচ্য থেকে আসা প্রতিটি ফ্লাইটের যাত্রীদের লাগেজ পেতে তিন থেকে চার ঘণ্টা সময় লাগে। অথচ বিশ্বের অন্য কোনো দেশে যাত্রীদের লাগেজের জন্য এমন দীর্ঘ অপেক্ষা করতেও হয় না এবং হয়রানির শিকারও হতে হয় না। পাশের কলকাতা বিমানবন্দরে বিজনেস ক্লাসের একজন যাত্রী বিমান থেকে নেমে বেল্টের কাছে আসতে সময় লাগে ছয় থেকে সাত মিনিট। এর মধ্যেই যাত্রী তার লাগেজ পেয়ে যান বেল্টে। একইভাবে দিল্লিতে যাত্রী বিমান থেকে নেমে বেল্টের কাছে আসতে ১৪/১৫ মিনিট সময় লাগে। এর মধ্যে চলে আসে লাগেজ। একই সুবিধা থাইল্যান্ডেও। সেখানে ১০/১২ মিনিটের মধ্যেই একজন যাত্রী তার লাগেজ নিয়ে বের হতে পারেন। ব্যতিক্রম শুধু শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে। বাংলাদেশ বিমানের কর্মচারীদের নৈরাজ্যের কারণে দীর্ঘদিন শাহজালালে এমন বিশৃঙ্খলা লেগে আছে। এ বিষয়ে শাহজালাল এয়ারপোর্টের নিরাপত্তা শাখার দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা জানান, গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং নিয়ে বিমানের ব্যর্থতা চরমে। তারা কারও নির্দেশই আমলে নিচ্ছে না। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই বিমান বলে আসছে তাদের জনবল ও যন্ত্রপাতির অভাব। অথচ ওয়ান ইলেভেনের সেনা শাসনের সময় বিমানের গ্রাউন্ড শাখার হঠাৎ উন্নতি ঘটে। সব ফ্লাইটের সিডিউল ও লাগেজ ডেলিভারি ছিল সন্তোষজনক। কিন্তু মশিকুর বাহিনী সিবিএ নির্বাচনে জেতার পর বিমানকে জিম্মি করে ফেলে। তারা আহার ভাতার মতো তুচ্ছ দাবিতে গোটা এয়ারপোর্ট অচল করে দেয়। তারপর থেকেই গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং সেবায় বিপর্যয় নেমে আসে। সর্বশেষ গত মাসে বিমানকে জরুরি সার্ভিস ঘোষণা করার পর সিবিএ রহস্যজনকভাবে দায়িত্ব পালনের গাফিলতি শুরু করে বলে অভিযোগ রয়েছে। গত এক মাসের ফ্লাইট তথ্য থেকে দেখা যায়, শতকরা ২০ ভাগ ফ্লাইট সিডিউল রক্ষা করতে পারেনি। লাগেজ ডেলিভারিতেও একই পরিসংখ্যান ফুটে উঠেছে। বিমানের গ্রাউন্ড শাখার বিরুদ্ধে লাগেজ সার্ভিসের ক্ষেত্রে ভোগান্তি ও হয়রানির অভিযোগ থাকলেও কোনো ব্যবস্থাই নিতে পারছে না কর্তৃপক্ষ। অভিযোগ রয়েছে, সিবিএ নেতা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কয়েকজন নেতার নাম ভাঙিয়ে বিমানে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছেন। সিবিএ নেতার ঘনিষ্ঠ মাসুম বিল্লাহ কদিন আগে একজন কর্মকর্তাকে লাঞ্ছিত করলেও তার তদন্ত থেমে আছে। সিবিএ নেতারা বিমান প্রশাসনকে চাপ প্রয়োগ করে তদন্ত থামানোর চেষ্টা করে। বিমানের বর্তমান পরিচালনা পর্ষদ চেয়ারম্যান এয়ার মার্শাল ইনামুল বারি ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্যাপ্টেন মোসাদ্দিকের দুর্বল ব্যবস্থাপনার কারণে এখনো ইউনিয়নের রাজত্ব চলছে। জানা গেছে, বর্তমান এমডির মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী মাসে। তিনি ব্যস্ত আছেন নিজের মেয়াদ বাড়ানোর তদবিরে। তাই সিবিএর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে বরং তাদের মদদ দিয়ে নিজের চেয়ার ঠিক রাখার কৌশল গ্রহণ করেছেন। শুধু লাগেজ সমস্যাই নয়, মানি চেঞ্জারদের দৌরাত্ম্য আছে শাহজালালে। বিশ্বের কোনো দেশেই গ্রীন চ্যানেল বা কাস্টমস অতিক্রম করে মানি চেঞ্জার দেখা যায় না। অথচ শাহজালালে যাত্রীরা বিমান থেকে নামতেই মানি চেঞ্জাররা ঘিরে ধরে। টানাটানি শুরু করে। 

No comments:

Post a Comment

 

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি

সম্পাদকীয় কার্যলয়

Rua padre germano mayar, cristo rio -80040-170 Curitiba, Brazil. Contact: +55 41 30583822 email: worldnewsbbr@gmail.com Website: http://worldnewsbbr.blogspot.com.br

সম্পাদক ও প্রকাশক

Jahangir Alom
Email- worldnewsbb2@gmail.com
worldnewsbbbrazil@gmail.com
 
Blogger Templates