সম্প্রতি আজান নিয়ে বড় ধরনের বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন ভারতীয় গায়ক সোনু নিগম। তিনি দাবি করেছিলেন, সকালের আজানের শব্দে তার ঘুম ভেঙে যায়। কিন্তু কয়েকজন সাংবাদিক বুধবার ফজরের আজানের সময় ওই গায়কের ফ্লাটের সামনে জড়ো হন। কিন্তু তারা নাকি আজানের শব্দই শুনতে পাননি। এমন খবর ছেপেছে বিবিসি হিন্দি।
গত ১৭ এপ্রিল আজান নিয়ে সোনু পরপর কয়েকটি টুইট করেন। একটিতে জানান, প্রতিদিন ভোরে আজানের কর্কশ শব্দের কারণে ঘুম ভেঙে যায়। এ জন্য তিনি বিরক্ত হন। এরপর এ নিয়ে বিতর্ক বাড়তে থাকে।
বিবিসি জানায়, সাংবাদিকদের আগ্রহ ছিল সোনুর ফ্ল্যাট থেকে আজানের শব্দ কেমন মাত্রায় শোনা যায় তা পরীক্ষা করা। ভোর ৫টার সময় তারা সোনুর আন্ধ্রেরির বাড়ির সামনে জড়ো হন। কিন্তু তারা আজানের শব্দ শুনতেই পাননি। এমনকি সোনুর প্রতিবেশী লতা সচদেব জানান, তিনি কখনো আজান শুনতে পাননি। একই কথা বলেন কিরণ ওয়াসান নামের প্রতিবেশিনী। ওই সময় সোনুর ফ্ল্যাটের আলো নেভানো ছিল। বাইরে দাঁড়ানো ছিল পুলিশের গাড়ি।
বিবিসির ওই সাংবাদিক জানান, অন্য সংবাদকর্মীরা চলে গেলেও তিনি আরো আধাঘণ্টা অপেক্ষা করেন। কিন্তু গাড়ি চলাচলের শব্দ ছাড়া কিছুই শুনতে পাননি।
তিনি জানান, ওই এলাকায় তিনটি মসজিদ রয়েছে। তার সবগুলোই সোনুর বাড়ি থেকে ৬০০ মিটার দূরত্বে। সোনুর বাড়ির থেকে বাম দিকে আধা কিলোমিটার দূরে রয়েছে মাদ্রাসা তালিমুল কুরান ট্রাস্ট মসজিদ। এখানে আজান হয় ৫টা ২০ মিনিটে। মসজিদের ট্রাস্টি মাহবুব খান জানান, এ এলাকায় সোনু এসেছেন ২-৪ বছর আগে। কিন্তু তারা আছেন ৩০-৩৫ বছর যাবত। কেউ কখনো আজান নিয়ে সমস্যার কথা জানাননি। আজানের শব্দ এতদূর যায়ও না। লোকজনের কাছে শুনে এসেছেন তারা আজান দ্বারা উপকৃত হন। কিন্তু সোনু সে পরিবেশ নষ্ট করেছেন। এটা তার প্রচারণা কৌশল।
সোনুর বাড়ির ডান পাশে থাকা মাদ্রাসা তুল-সালাই ট্রাস্টের একজন জানান, তারা আজানের সময় লাউডস্পিকার ব্যবহার করেন না। এছাড়া ভোর ৫টায় আজান হয় মাদ্রাসা-ই-নবাবিয়া। তাও শুনতে পাননি সাংবাদিকরা। এদিকে ওয়েস্ট বেঙ্গল মাইনরিটি ইউনাইটেড কাউন্সিলের সহ-সভাপতি সৈয়দ শাহ আতেফ আলি আল কাদেরি মঙ্গলবার কলকাতায় এক সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, আজান নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করেছেন সোনু নিগম৷ যদি কেউ তার মাথা মুড়িয়ে তার গলায় জুতোর মালা পরিয়ে রাস্তায় ঘুরাতে পারে তাহলে তাকে ১০ লাখ টাকা নগদ পুরস্কার দেবেন তিনি। এমন ঘোষণার পর বুধবার সোনু নিজেই মাথা ন্যাড়া করে ফেলেন।
সূত্র: বিবিসি
No comments:
Post a Comment