পাসপোর্ট অধিদপ্তর ও আন্তর্জাতিক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ব্যর্থতায় যন্ত্রে পাঠযোগ্য পাসপোর্ট (এমআরপি) নিয়ে ভয়াবহ সংকটে পড়তে যাচ্ছে বাংলাদেশ। কারণ, এখনো অন্তত ৫০ লাখ প্রবাসীর হাতে এমআরপি পৌঁছাতে পারেনি সরকার। ২৪ নভেম্বরের পর থেকে পৃথিবীর কোথাও হাতে লেখা পাসপোর্ট চলবে না বলে জানিয়েছেন প্রবাসীকল্যাণ-মন্ত্রী। বহিরাগমন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর থেকে পাওয়া তথ্যে দেখা গেছে, এমআরপি প্রকল্প চালুর পর পাঁচ বছরে প্রতিদিন গড়ে মাত্র ১ হাজার ১০০ প্রবাসীর হাতে এই পাসপোর্ট পৌঁছেছে। অর্থাৎ প্রকল্প চালুর পর ২০ লাখ প্রবাসী এমআরপি পেয়েছেন। এই সময়ে আরও ২০ লাখ প্রবাসী দেশেই এমআরপি পেয়েছেন। সরকারের হিসাবে প্রবাসীর সংখ্যা ৯০ লাখ। এই হিসাবে এখনো ৫০ লাখ প্রবাসী এমআরপি পাওয়ার অপেক্ষায় আছেন। কিন্তু এখন পাসপোর্ট দেওয়ার যে ধীরগতি,তাতে আগামী ১ বছরেও এর কাজ সমাপ্ত হবে না।
এমআরপি দেওয়ার কাজ পেয়েছে মালয়েশীয় প্রতিষ্ঠান আইরিস করপোরেশন। সাবেক প্রবাসীকল্যাণ-মন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব, পররাষ্ট্রসচিবসহ সরকারের বিভিন্ন কর্মকর্তা এই প্রতিষ্ঠানের কাজের ব্যাপারে বারবার অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। কিন্তু স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
সরকার কেন ব্যবস্থা নেয়নি, জানতে চাইলে সম্প্রতি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘আগে কী হয়েছে, সেটা বড় কথা না। সামনে যে সময়টা আছে, সেই সময়ের মধ্যে কাজটা শেষ করতে চাই এবং সেটা পারব।’
বিভিন্ন সরকারি নথি ও দূতাবাস থেকে পাঠানো কাগজপত্র বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, অতীতে এই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতা, দুর্নীতি ও অনিয়মের নানা অভিযোগ ছিল। এদিকে ব্রাজিল বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশীরা মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট এর আভাবে দেশে ফিরতে পারছে না। বর্তমানে ব্রাজিলে প্রায় ৪৫০০ জন বাংলাদেশী আছেন (সূত্র - পুলিশিয়া ফেডারেল ব্রাজিল) এদের মধ্যে অনেকেরই এমআরপি পাসপোর্ট নেই। তারা ব্রাজিল এর স্থায়ী ভাবে বসবাসের অনুমতি পেয়েও দেশে আসতে পারছে না। মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট সম্পর্কে প্রবাসীদের অভিযোগ সম্পর্কে দূতাবাসের চার্জ দ্যা অ্যাফেয়ার্স নাহিদা রহমান সুমনার দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি জানান, গত জুলাই মাসে এমআরপি মেশিন স্থাপন করা হলেও এখনও তা অ্যাক্টিভেট করা সম্ভব হয়নি।
যত দ্রুত সম্ভব এটি অ্যাক্টিভেট করার জন্য দফায় দফায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, এটিসহ অন্য বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে রাষ্ট্রদূত মিজারুল কায়েস এখন ঢাকায় অবস্থান করছেন।
তিনি আরও জানান, যেহেতু ২৪ নভেম্বরের পর হাতে লেখা পাসপোর্ট অকেজো, সেহেতু এমআরপি চালু না হওয়া পর্যন্ত দেশ-বিদেশে ভ্রমণ করতে সংশ্লিষ্টরা চরম বিপাকে পড়েছেন।
২৪ নভেম্বর থেকে ভিসা ইস্যু বন্ধ করে দিয়েছেন এমনটি জানিয়ে নাহিদা বলেন, আগ্রহীদের আমরা বলেছি প্রয়োজনে পাশ্ববর্তী কোনো দেশ থেকে ভিসা সংগ্রহ করতে। জরুরি প্রয়োজনে পাসপোর্টের পরিবর্তে প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য ট্রাভেল পারমিটের ব্যবস্থা করা যায় কিনা- এমনটি ভেবে দেখতেও আমরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জানিয়েছি।
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
প্রবাসীরা হলো golden boy তাদের এত হয়রানি কেন?
ReplyDeleteCorrupted government of Bangladesh and Embassy in brasil.Embassy want only money.They have no responsibility!
ReplyDelete