চুলের একটি প্রধান সমস্যা হল চুল শুষ্ক ও অমসৃণ হয়ে যাওয়া। ডিপ কন্ডিশনিং এবং জনপ্রিয় ঘরোয়া প্রতিকার যেমন- মধু ও ডিম ব্যবহার করেও যাকে নিয়ন্ত্রণে আনা যায়না। আপনার চুল যদি সবসময়ই শুষ্ক ও রুক্ষ হয়ে থাকে তাহলে নতুন কোন হেয়ার স্টাইল করাও বেশ কঠিন হয়ে যায়। তাছাড়া রুক্ষ ও শুষ্ক চুল দেখতে নিস্তেজ ও প্রাণহীন দেখায়। কেন চুল শুষ্ক ও রুক্ষ হয়ে যায় তার কারণটি জানলেই আপনি এর প্রতিকারের সঠিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবেন। ডারমাটোলজিস্টদের মতে চুল শুষ্ক ও অমসৃণ হয়ে যাওয়ার কারণগুলো হচ্ছে :
১। ভিটামিনের ঘাটতি বা ভিটামিনের বিষাক্ততা
আপনি যদি আপনার শরীরের পুষ্টির চাহিদা পূরণ না করেন অর্থাৎ পর্যাপ্ত ভিটামিন ও পুষ্টি উপাদান গ্রহণ না করেন তাহলে আপনার চুল ক্রমান্বয়ে শুষ্ক ও অমসৃণ হতে থাকবে। ভিটামিন এ এবং আয়রনের ঘাটতি বা অ্যানেমিয়া হলে চুল শুষ্ক হয়ে যায়। এছাড়াও জিংক এর ঘাটতি হলেও এ ধরণের লক্ষণ দেখা যায়। অন্যদিকে অত্যধিক ভিটামিন সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করলেও বিষাক্ততা সৃষ্টি হয় যার ফলে চুল শুষ্ক হয়ে যেতে পারে। অতিরিক্ত ভিটামিন এ চুলের উপর প্রভাব ফেলে।
২। প্রোটিনের ঘাটতি
চুলকে স্বাস্থ্যবান রাখতে এবং চুল পড়া প্রতিরোধ করতে প্রোটিন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আপনি যদি নিরামিষাশী হন তাহলে চুলে প্রোটিনের ঘাটতি দেখা দিতে পারে এবং চুল নিষ্প্রাণ দেখায়। পালং শাক, সয়াবিন, মাশরুম, ডাল, ফুলকপি ও ব্রোকলি খেয়ে প্রোটিনের ঘাটতি পূরণের চেষ্টা করুন।
৩। জলবায়ু বা আবহাওয়া
আপনি যদি দিনের অনেকটা সময় সূর্যের আলোর নীচে কাটান কোন সুরক্ষা ছাড়াই তাহলে চুল শুষ্ক ও মোটা হয়ে যেতে পারে। দীর্ঘ সময় সূর্যের আলোর সংস্পর্শে থাকলে চুলের আর্দ্রতা কমে যায়। তাই স্কার্ফ বা হ্যাট ব্যবহার করুন বা ছাতা সাথে রাখুন।
৪। হাইপোথাইরয়ডিজম
এটি এমন একটি স্বাস্থ্য সমস্যা যেখানে আক্রান্ত ব্যক্তির থাইরয়েড গ্রন্থি পর্যাপ্ত থাইরক্সিন উৎপন্ন করতে পারেনা। এই হরমোনের অনুপস্থিতির কারণে দিনের বেলায় ঘুমানো, ক্লান্তি এবং পিরিয়ড অনিয়মিত হওয়ার সমস্যা দেখা দেয়। সেই সাথে চুল ও হয়ে যায় শুষ্ক ও অমসৃণ।
৫। হেয়ার ট্রিটমেন্ট
বন্ডিং বা স্ট্রেইটেনিং এর মত হেয়ার ট্রিটমেন্ট করলে বা নিয়মিত চুল আয়রন করলে চুল শুষ্ক ও মোটা হয়ে যায়। তাছাড়া আপনি যদি নিয়মিত সুইমিং পুলে সাঁতার কাটেন তাহলে আপনার চুল ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে ক্লোরিনের কারণে।
৬। কঠোর শ্যাম্পু
ভুল শ্যাম্পু ব্যবহার করার কারণে আপনার চুলের আর্দ্রতা নষ্ট হয়ে যেতে পারে এবং চুল হয়ে যেতে পারে শুষ্ক। সোডিয়াম সালফেট এবং লরিল যুক্ত শ্যাম্পু ব্যবহার করা এড়িয়ে চলুন।
৭। মেনকেস সিনড্রোম
এটি একটি বিরল সমস্যা যা দেহের কপারের মাত্রাকে প্রভাবিত করে। এর ফলে ওজন বৃদ্ধি পেতে সমস্যা দেখা দেয় এবং রোগীর চুল শুষ্ক হয়ে যাওয়া, আগা ফাটা এবং চুল মোটা হওয়ার সমস্যা সৃষ্টি করে। অন্যান্য যে লক্ষণগুলো দেখা যায় তা হল পেশী দুর্বল হয়ে যায়, খিঁচুনি দেখা দেয় এবং ত্বক ঝুলে পড়ে।
Wednesday, September 21, 2016
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment