নাটক সাহিত্যের একটি বিশেষ ধরণ। সাধারণত একটি লিখিত পান্ডলিপি অনুসরণ করে অভিনয় করে নাটক পরিবেশিত হয়ে থাকে। নাটক লেখা হয় অভিনয় করার জন্য। তাই নাটক লেখার আগেই তার অভিনয় করার যোগ্য হতে হয়। নাটকে স্থান, সময় ও পরিবেশের বর্ণনা ছাড়াও সংলাপ লেখা থাকে। সংলাপ বলেই একজন অভিনতা নাটকের বিভিন্ন বিষয়ে বলে থাকেন। তবে সংলাপই শেষ কথা নয়। সংলাপবিহীন অভিনয়ও নাটকের অংশ।
আমরা আজ জানবো একজন গুণী শিল্পীর কিছু কথা -যার নাম মোঃ মতিউর রহমান(মতি)
আমাদের প্রতিবেদকের সাথে আলাপ চারিতায় বেরিয়ে আসে তার জীবনের সুখ দুঃখ আর নাট্য জগতের অনেক কথা।
ছোটবেলা ও শৈশব জীবন কীভাবে কাটতো জানতে চাইলে মোঃ মতিউর রহমান(মতি) বলেন- ছোটবেলার কথা বলতে গেলে চোখের পানি ধরে রাখতে পারি না। কারন অনেক ছোট বেলাই আমার মা জননী আমার সাথে রাগ করে চলে গেছেন না ফেরার দেশে। তখন আমার বয়স কেউ বলে নয়’মাস কেউ বলে দশ মাস। কেউ যখন আমার সামনে মা‘কে মা বলে ডাক দেয় তখন দাঁড়িয়ে মা ডাক শুনি এবং মা কি করে সেইটা দেখি। মায়ের জন্য হৃদয়টা শূন্য হয়ে আছে। মা ডাক দিয়ে আজও প্রানটা জুড়াতে পারলাম না। তারপর থেকে দাদির কাছে চলে যাই। দাদা বাড়ি গিয়ে মা কথা অনেক মনে পরে তার পর অনেক কষ্ট হয়। সে অনেক বড় ইতিহাস। মাকে নিয়ে যদি বলি কত দিন লাগবে শেষ করতে পারব না। বাবা সরকারি চাকরী করতেন। আমি মায়ের দ্বিতীয় সন্তান, প্রথম আমার একটা বোন হয়েছিল ক’বৎসর বয়সে মারা গেছে জানি না। তারপর আমার জন্ম হয়। মা মারা যাবার দুই বৎসর পর বাবা নতুন মাকে ঘরে আনেন। কেন নতুন মায়ের কাছে থাকতে পারি নাই তা আমি জানি না। গ্রামে দাদির কাছেই ছিলাম। গ্রামের স্কুলেই লেখাপড়া করতাম। অভিভাবক না থাকলে যা হয়। ক্লাশ নাইনে উঠেই বিয়ে, দশম শ্রেণীতে উত্তীর্ণ হয়েই প্রথম বাচ্চা। আল্লাহ চারটি সন্তান দিয়েছেন। আল্লাহ খুব সুখে রেখেছেন। তবে একটি কথা না বললেই নয়, তা হলো , নবম শ্রেণীতে উঠে বি.এ, এম.এ. পাশ পর্যন্ত কোন গ্যাপ বা ফেল নাই। আল্লাহ যদি সুযোগ দেন তাহলে জীবন নিয়ে লিখবো।নাটকে কাজ করা শুরু কবে থেকে জানতে চাইলে
আমাদের সময় গ্রামে যাত্রা পালা অনুষ্ঠিত হতো, ঐ যাত্রা মঞ্চে মানুষকে হাসানো আমার কাজ ছিল, মানে কৌতুক বলতাম। দর্শক খুব হাসতো, আমিও খুব আনন্দ পাইতাম। তখন মনে হইতো সারা জীবন যদি মানুষকে হাসাইতে পারতাম খুব ভালো হতো।
নাটক দৃশ্য ও শ্রব্যকাব্যের সমন্বয়ে রঙ্গমঞ্চের সাহায্যে গতিমান মানবজীবনের প্রতিচ্ছবি আমাদের সম্মুখে মূর্ত্ত করে তোলে। রঙ্গমঞ্চের সাহায্য ব্যতীত নাটকীয় বিষয় পরিস্ফুট হয় না। নাট্যোল্লিখিত কুশীলবগণ তাদের অভিনয়-নৈপুণ্যে নাটকের কঙ্কালদেহে প্রাণসঞ্চার করেন, তাকে বাস্তব রূপৈশ্বর্য্য দান করেন। নাটকে অনেক সময় পাত্র-পাত্রীদের কথায় নাট্যকার নিজের ধ্যান-ধারণার কথাও সংযোগ করে দেন। এইজন্য এটি সম্পূর্ণরূপে বস্তুনিষ্ঠ বা তন্ময় বা অবজেকটিভস্ না-ও হতে পারে। কিন্তু শ্রেষ্ঠ নাট্যকার নিজেকে যথাসাধ্য গোপনে রাখেন এবং তাঁর চরিত্র-সৃষ্টির মধ্যে বিশেষ একটি নির্লিপ্ততা বর্তমান থাকে।
শুরুতেই কিছুটা বলেছি জীবনের শুরু। নিজে চলারই অবস্থা নাই তারপর বউ এবং সন্তান। এস এস সি পাশ করার পর ঢাকাই চলে আসি। এইচ এস সি নাইটে জগন্নাথে ভর্তি হয়। একটা ছোট চাকরী এভাবে চলে না জীবন নামের ঘুড়ি। ১৯৯০ সালের দিকে ততক্ষনে ডিগ্রী শেষ করে এম এ ক্লাশ চলছে তখন পত্রিকায় একটি বিজ্ঞাপন দেখি মঞ্চে অভিনয়ের জন্য নাট্যকর্মীর দরকার, টিএসসি’তে ফরম দেওয়া হচ্ছে। নাট্যদলের নাম ”ঢাকা সুবচন” তিন মাস কর্মশালা শেষ করে। নাটকের মহড়া শুরু হয়ে গেল। সেই ছোট বেলার স্বপ্ন বাস্তবে রুপ পাওয়ার পথ চলতে শুরু করলাম। নাটকটির নাম ‘বিবিসাব’ নাট্যকার জনাব আব্দুল্লাহ আল মামুন, নির্দেশনায় ছিলেন জনাব জামাল উদ্দিন হোসেন। ‘বিবিসাব’ নাটক ৫১তম শো পর্যন্ত করেছি।
আমার প্রথম নাটক বিটিভি’তে প্রচার হয় নাম “শিউলি মালা” বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম এর। প্রযোজক ছিলেন মরহুম জিয়া আনছারী। প্রচার হয় ১৯৯১ সালে।
আমার আসলে কমেডি চরিত্রটাই বেশী পছন্দ। কারণ মানুষের হাজারও দুঃখের মাঝে একটু হাসি ফুটাতে পারার মধ্যেই আমার আনন্দ। নাটকে আমারপছন্দ মততো আর চরিত্র দিবে না। ডিরেক্টর সাহেবদের পছন্দই আমার পছন্দ। উনারা কখনও চাকর, কখনও দাড়োয়ান এই সব চরিত্রেও অভিনয় করান। এসব চরিত্রে অভিনয় করতেও আমার ভাল লাগে।
বর্তমানে দুইটি ধারাবাহিক নাটকে কাজ করছি একটি “নগর আলো” পরিচালক জনাব এম আর মিজান। যদিও এটির শেষ লটের শুটিং শেষ হয়ে গেল । এটি মাছরাঙা টিভিতে মঙ্গল ও বুধবার রাত ০৮ঃ০৫ প্রচার হয়। অন্যটির নাম ” চলিতেছে সার্কাস” রচনা ও পরিচালনাঃ- জনাব মাসুদ সেজান। এটি রবি ও সোমবার রাত ০৯ঃ০৫ প্রচার হয় বাংলাভিশনে।
তিনি প্রায় ৪ টি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। এ বেপারে মোঃ মতিউর রহমান(মতি) বলেন
ইতোমধ্যে চারটিতে অভিনয় করা হয়ে গেছে। প্রথম চলচ্চিত্রর নাম হরিজন। “তারকাটা” চলচ্চিত্র জাতীয় চলচ্চিত্র পুরুস্কাটর পেয়েছে। “সম্রাট দি কিং” মুক্তি পেয়েছে। আমার শেষ চলচ্চিত্র “সোনা বন্ধু” মুক্তির অপেক্ষায় আছে।
No comments:
Post a Comment