কলম্বিয়ার মোকোয়া শহরে ভয়াবহ ভূমিধসের পর মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৫৪ জনে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে ৪৩ জনই শিশু। রবিবার দেশটির প্রেসিডেন্ট হুয়ান ম্যানুয়েল স্যান্টোস একথা জানান। মৃতের সংখ্যা আরো বাড়ার আশঙ্কা করে তিনি বলেন, দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমাকে বলতে হচ্ছে এটা প্রাথমিক সংখ্যা।
কাজেই এ সংখ্যা আরো যে বাড়তে পারে সে আশঙ্কা আমরা উড়িয়ে দিচ্ছি না। কেননা এখনো অনেকে নিখোঁজ রয়েছেন। দুর্গত এলাকায় ওইদিন ত্রাণ তৎপরতা দেখতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। এদিকে উদ্ধারকর্মীরা এখনো প্রাণপণে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন, যদি কাউকে জীবিত উদ্ধার করা যায়। যদিও সে আশা খুবই ক্ষীণ।
সম্প্রতি ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে পুতুমায়ো প্রদেশের রাজধানী মোকোয়া প্লাবিত হয়ে যায়। বন্যার পানির সঙ্গে আসা কাদা ও পাথরের নিচে শহরের আবাসিক এলাকাগুলোর ঘরবাড়ি চাপা পড়ে। প্রাণ বাঁচাতে তখন অনেকই ঘরবাড়ি ছেড়ে অন্যত্র চলে যেতে বাধ্য হয়। দুর্যোগ মন্ত্রণালয় জানায়, ১৭টি দুর্গত এলাকায় ১১’শ সেনা ও পুলিশ সদস্য উদ্ধার ও ত্রাণ কাজে নিয়োজিত আছে। ভূমিধসের পর দুর্গত এলাকা পরিদর্শনে যাওয়া স্যান্তোস বলেছেন, “শেষ ব্যক্তিটি শনাক্ত না হওয়া পর্যন্ত আমরা থামবো না।”
শনি ও রবিবার সরকারি ছুটির দিন হলেও উদ্ধার কাজ ও ত্রাণ কার্যক্রম অব্যাহত ছিল। প্রেসিডেন্ট জানান, নিহতদের মধ্যে অন্তত ১৭০ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে। বাকিদের খবর এখনো পাওয়া যায়নি।
দেশটির সেনাবাহিনী ২শ জন নিখোঁজ রয়েছেন বলে জানালেও রবিবার বিকালে টুইটে সান্তোস জানিয়েছেন, সরকারিভাবে নিখোঁজ কেউ নেই। উদ্ধারকাজ অব্যাহত থাকায় এ ঘটনায় মোট কতজনের মৃত্যু হয়েছে তা নিশ্চিত করে বলা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্থানীয় কয়েকটি গণমাধ্যমের হিসাবে নিহতের মোট সংখ্যা তিনশ ছাড়িয়ে যাবে। কলম্বিয়া রেডক্রস জানিয়েছে, পরিবারগুলোর সদস্যদের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপনে সহযোগিতা করছে তারা। দেশটির বিমান বাহিনী ত্রাণ সরবরাহ বহন করে নিয়ে আসছে।
বিধ্বস্ত মোকোয়ার পুনর্গঠনে বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রেসিডেন্ট স্যান্তোস বলেছেন, শহরটিকে আগের চেয়েও ভালো অবস্থায় নিয়ে যাওয়া হবে। তবে সমালোচকরা বলছেন, ওই এলাকাটিকে এ ধরনের বিপর্যয় থেকে রক্ষার জন্য আগেই ব্যবস্থা নেওয়া উচিত ছিল। কেননা সেখানে একটু ভারী বৃষ্টিপাত হলেই অস্বাভাবিকভাবে নদনদীর পানি বেড়ে যায়। কলম্বিয়ায় নিযুক্ত জাতিসংঘের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এ দুর্যোগের জন্য আবহাওয়ার পরিবর্তনকে দায়ী করেছেন। অপরদিকে কলম্বিয়ার সাবেক পরিবেশ মন্ত্রী ও সংরক্ষণবাদী আদ্রিয়ানা সোতো এ দুর্যোগের জন্য বন উজাড়ও দায়ী বলে মন্তব্য করেছেন। আল জাজিরা,এএফপি।
No comments:
Post a Comment