Social Icons

Saturday, July 22, 2017

বিয়ে করার জন্য ঋণ-সুবিধা চালু করলো বাংলাদেশর ৯ টি ব্যাংক। জানুন বিস্তারিত!

ঋণ করে ঘি খাওয়ার প্রবাদটা নিশ্চয় শুনেছেন সবাই। একটা সময় হয়তো ছিল যখন অনেকে ঘি খেতেন ঋণ করে। হয়তো প্রয়োজন না থাকলেও ঋণ করে অনেকে বিলাসিতায় সেই অর্থ ব্যয় করতেন। কিন্তু সময় এখন বদলেছে। অনেকের কাছে ছোটখাটো ঋণও এখন অনেক বেশি দরকারি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ জন্যই মানুষের নানান ধরনের প্রয়োজন, নানান রকমের চাওয়াকে সামনে রেখে ঋণ এখন একটি পণ্য হয়ে উঠেছে। চাহিদা রকমফেরে তাই গ্রাহকের জন্য হরেকরকম ‘ঋণ পণ্য’ সাজিয়েছে ব্যাংকগুলো।
যেমন হতে পারে, আপনার বিয়ের কথাবার্তা পাকাপাকি। খুশির এ আয়োজনে অনেক বড় একটি দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বিয়ের খরচ খরচা। পরিবার-পরিজন, বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়স্বজন—কেউই এ দুশ্চিন্তা দূর করতে এগিয়ে আসছে না বা আসতে পারছে না বা হতে পারে আপনিও তাতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছেন না। তাহলে বিয়ের আয়োজনে কি কাটছাঁট করবেন? টাকার অভাবে বিয়ে পিছিয়ে দিবেন? হয়তো আপনার ভাগ্য এতটা সুপ্রসন্ন নয় যে টাকা ভূতে জুগিয়ে দিবে। এমন হলে সাহস করে পা বাড়াতে পারেন ‘বিয়ের ঋণের’ পথে।বিয়ে-সংক্রান্ত প্রয়োজন মিটাতে দেশের বেশ কয়েকটি বেসরকারি ব্যাংক ‘বিয়ে ঋণ’ চালু করেছে।
তাহলে এবার জেনে নিন কারা দিচ্ছে এ ঋণ।
প্রাইম ব্যাংক ব্যাংক এশিয়া
আইএফআইসি ব্যাংক এইচএসবিসি ব্যাংক
ট্রাস্ট ব্যাংক ডাচ্-বাংলা ব্যাংক
ইস্টার্ন ব্যাংক স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক সিটি ব্যাংক
প্রাইম ব্যাংক: প্রাইম ব্যাংকের বর্ণনা অনুযায়ী, সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বেসরকারি সংস্থা, বিদেশি সংস্থা এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি প্রতিষ্ঠানের চাকুরিজীবী, ব্যবসায়ী, বাড়ির মালিক—সবার জন্য ‘বিয়ের ঋণের’ ব্যবস্থা রয়েছে। ১৫ হাজার থেকে ৩৫ হাজার টাকা মাসিক আয় বা বেতনের যে কেউ এ ঋণ নিতে পারবেন। প্রাইম ব্যাংক গ্রাহক-ভেদে এ ঋণের পরিমাণ সর্বনিম্ন ৫০ হাজার টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত এই ঋণ দিচ্ছে। এই ঋণ মাসিক কিস্তিতে পরিশোধযোগ্য যার মেয়াদ সর্বোচ্চ পাঁচ বছর। ঋণের বার্ষিক সুদের হার ১২% থেকে ১৫%।
ব্যাংক এশিয়া: এই ব্যাংকের বিয়ের জন্য সরাসরি কোনো ঋণ-সুবিধা নেই। কিন্তু ব্যক্তিগত ঋণের আওতায় ঋণ নিয়ে তা বিয়ের খরচ হিসেবে ব্যবহার করা যাবে। ব্যাংকটি সর্বনিম্ন ৫০ হাজার টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ দিচ্ছে। ১৫ হাজার টাকা মাসিক আয়ের বিভিন্ন পেশাজীবীদের এ ঋণ দেওয়া হয় থাকে যার বার্ষিক সুদের হার (১২-১৫)%।
আইএফআইসি ব্যাংক: এই ব্যাংকটিও গ্রাহক-ভেদে সর্বোচ্চ তিন লাখ টাকা পর্যন্ত ‘বিয়ের ঋণ’ দিয়ে থাকে। এর ঋণের মেয়াদ সর্বনিম্ন এক থেকে সর্বোচ্চ তিন বছর পর্যন্ত। বার্ষিক সুদের হার সাড়ে ১৬ শতাংশ।
ট্রাস্ট ব্যাংক: ব্যাংকটি ব্যক্তিগত ঋণের আওতায় বিয়ের ঋণ-সুবিধা দেয়। তবে ‘বিয়ের ঋণ’ নামে সরাসরি কোনো ঋণ পণ্য নেই। বিয়ের ঋণ যদি অভিভাবক নিতে চান, তবে তাঁর বয়স ২৫ থেকে ৬০ বছর এবং যিনি বিয়ে করবেন তিনি যদি নিজেই আবেদনকারী হন, তাহলে তাঁর বয়স ২৫ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে হতে হবে। গ্রাহকের চাহিদা-ভেদে সর্বনিম্ন ৫০ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকার ঋণ দেয় এই ব্যাংক। (১-৫) বছর মেয়াদি এর ঋণের সুদের হার দুই ধরনের। সরকারি চাকরিজীবীদের ক্ষেত্রে ন্যূনতম ১৫ হাজার টাকা ও বেসরকারি চাকরিজীবীদের ক্ষেত্রে ন্যূনতম ৩০ হাজার টাকা মাসিক বেতনের ব্যক্তিদের এ ঋণ-সুবিধা দেওয়া হয়। চাকরিজীবীদের জন্য যে ঋণ-সুবিধা দেওয়া হয়, তার বার্ষিক সুদের হার ১৪.৫%। আর ব্যবসায়ীসহ অন্যদের ক্ষেত্রে এই ঋণের বার্ষিক সুদের হার ১৬.৫%।
ইচএসবিসি ব্যাংক: এই ব্যাংকের ঋণ পেতে চাকরিজীবী হলে তাঁর আয় কমপক্ষে ৪০ হাজার টাকা এবং ব্যবসায়ীদের ক্ষেত্রে আয়ের প্রমাণসাপেক্ষে কমপক্ষে ৫০ হাজার টাকা হতে হবে। যদি আবেদনকারী অটো পে অথবা সেপস গ্রাহক হন, তবে মাসিক আয় ১৫ হাজার টাকা হতে হবে। আবেদনকারীর বয়স ২৩ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে হতে হবে। আবেদনকারী অটো পে গ্রাহক হয়ে থাকলে, তবে মাসিক আয়ের ৬(ছয়) গুণ এবং সেপস গ্রাহক হয়ে থাকলে, মাসিক আয়ের ১০ গুণ পর্যন্ত ঋণ নেওয়া যাবে। বার্ষিক সুদের হার ১৯%। প্রতিটি ঋণই মাসিক কিস্তিতে চার বছরের মধ্যে পরিশোধ করতে হয়। কোনো ব্যক্তিগত গ্যারান্টার বা নগদ জামানতের প্রয়োজন হয় না।
ডাচ্-বাংলা ব্যাংক: ডাচ-বাংলা ব্যাংকে ব্যক্তিগত ঋণের সাব-প্রোডাক্ট হলো ‘বিয়ের ঋণ’। ঋণের আবেদনকারী চাকুরীজীবী হলে তাঁর মাসিক আয় কমপক্ষে ১০ হাজার টাকা এবং ব্যবসায়ী হলে তাঁর মাসিক আয় ৩০ হাজার টাকা হতে হবে। বিয়ের আনুষ্ঠানিক খরচের জন্য ব্যাংকটি সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ দেয় যা (১-৫) বছরের মধ্যে পরিশোধ করতে হয়। এবং সুদের হার ১৭.৫%।
ইস্টার্ন ব্যাংক: এই ব্যাংক সরাসরি বিয়ের জন্য ঋণ দেয় না। এর ব্যক্তিগত ঋণের এনি পারপাসের আওতায় যে ঋণ দেওয়া হয়, তাতে আবেদন ফরম পূরণের সময় বিয়ের উদ্দেশ্যে ঋণ নেওয়া হচ্ছে, তা উল্লেখ করতে হবে। ঋণ আবেদনকারীর বয়স ২২ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে হতে হবে। আবেদনকারী চাকুরীজীবী হলে তাঁর আয় ১৫ হাজার এবং ব্যবসায়ী হলে তাঁর আয় ২৫ হাজার টাকা হতে হবে। সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত এ ঋণ দেওয়া হয়ে থাকে যার সুদের হার ১৫%। ঋণ পরিশোধের মেয়াদ (১-৫)বছর পর্যন্ত।
সিটি ব্যাংক: এই ব্যাংক থেকে বিয়ের উদ্দেশ্যে ঋণ নেওয়া যাবে ‘সিটি সলিউশনের’ মাধ্যমে। সর্বোচ্চ তিন লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ নেওয়া যাবে কোনো গ্যারান্টার ছাড়াই। ৫০ হাজার থেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ পাওয়া যাবে। ঋণ পরিশোধ করতে হবে ১২ থেকে ৬০ মাসের মধ্যেই। প্রসেসিং ফি ১.৫%।
আবেদনকারী যদি চাকুরীজীবী হয় তবে তাঁর মাসিক আয় ১৫ হাজার টাকা, আত্মকর্ম-সংস্থানকারী হলে তাঁর মাসিক আয় ২৫ হাজার টাকা এবং ব্যবসায়ী হলে তাঁর মাসিক আয় ৩০ হাজার টাকা হতে হবে।
স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক: পারসোনাল লোনের আওতায় এ ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়া যাবে। তবে আবেদন ফরমে বিয়ের উদ্দেশ্যে ঋণ নেওয়া হচ্ছে উল্লেখ করতে হবে। সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত এ ঋণ দেওয়া হয়ে থাকে এই ব্যাংক থেকে। (১-৫) বছরের মধ্যে ঋণ পরিশোধ করতে হয়। সুদের হার পরিবর্তনশীল। প্রসেসিং ফি ঋণের পরিমাণের ২%। আবেদনকারীর আয় সর্বনিম্ন ১৫ হাজার টাকা হতে হবে।
প্রতিটি মানুষের জীবনে বিয়ে একটি অতি আনন্দের বিষয় যার আয়োজন করা সহজ কথা নয়। আবার ধুমধাম করে বিয়ে করার শখটা তো টাকার অভাবে জলাঞ্জলি দেওয়া যায় না। তাই পরিশোধ করার সামর্থ্য থাকলে ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে বিয়ের আয়োজন করতে পারেন। জীবনের একমাত্র এই একটি মুহূর্তকে স্মরণীয় করে রাখতে না হয় করলেন ঋণ করে ঘি খাওয়ার আয়োজন।

No comments:

Post a Comment

 

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি

সম্পাদকীয় কার্যলয়

Rua padre germano mayar, cristo rio -80040-170 Curitiba, Brazil. Contact: +55 41 30583822 email: worldnewsbbr@gmail.com Website: http://worldnewsbbr.blogspot.com.br

সম্পাদক ও প্রকাশক

Jahangir Alom
Email- worldnewsbb2@gmail.com
worldnewsbbbrazil@gmail.com
 
Blogger Templates