রিজেন্ট, মালিন্দ্য ও এয়ার এশিয়ার যাত্রীরা বেশি টার্গেট
পর্যটন নগরী ইন্দোনেশিয়ার বালিগামী ‘সন্দেহজনক’ যাত্রীদের ফ্লাইটে ওঠার আগেই হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ইমিগ্রেশনে আটকে দেয়া হচ্ছে (অফলোড)। মানুষ চোরাচালানকারী চক্রের সদস্যদের অপতৎরপরতা ঠেকাতেই ইমিগ্রেশন কর্মকর্তারা এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
এ দিকে প্রতিদিন মালয়েশিয়াগামী রিজেন্ট, মালিন্দ্য, এয়ার এশিয়া ও বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ফাইটের যাত্রীদের দেশটির ইমিগ্রেশন বেশি টাগের্ট করে হয়রানি করছে বলে ভুক্তভোগী ও সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ইমিগ্রেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (এএসপি) গত শনিবার রাতে বলেছেন, সাম্প্রতিক সময়ে মালয়েশিয়াগামী যাত্রীর চাপ কমেছে। তবে এখনো মালয়েশিয়া বিমানবন্দর থেকে শতকরা ১০ ভাগের মতো যাত্রী ফেরত আসছে। যদিও তাদের প্রত্যেকের ডকুমেন্ট ঠিক রয়েছে।
তার মতে, মালয়েশিয়ায় ধরপাকড় অভিযান শুরুর পরপরই যাত্রীর কিছুটা চাপ কমেছে। তবে আন্তর্জাতিক দালাল চক্র মালয়েশিয়ায় অবৈধভাবে লোক পাঠানোর টার্গেট করে প্রথমে যাত্রীদের ইন্দোনেশিয়ার বালির টিকিট কেটে পর্যটন নগরী বালি নিয়ে যাচ্ছে। যাওয়ার পর যাত্রীরা সহজে পোর্ট এন্ট্রির ভিসা পেয়ে যাচ্ছেন। এই সুযোগ নিয়েই দালালেরা সেখান থেকে যাত্রীদের কখনো মালদ্বীপে পাঠাচ্ছে আবার সুযোগ বুঝে কখনো অন্য কোনো দেশ ব্যবহার করে মালয়েশিয়ার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পাঠাচ্ছে।
ওসি বলেন, ইন্দোনেশিয়াগামী বাংলাদেশী যাত্রীদের জন্য দেশটির সরকার পোর্ট এন্ট্রি ভিসার সুযোগ দেয়ায় দালালেরা ওই রুটটি ইদানীং ব্যবহার করতে শুরু করেছে। তিনি বলেন, ইন্দোনেশিয়ায় অনঅ্যারাইভাল ভিসায় বাংলাদেশী পাসপোর্ট হোল্ডাররা প্রিভিলেইজ পাচ্ছেন। তাই বালিগামী যাত্রীদের মধ্যে যারা সন্দেহজনক (ইয়াং জেনারেশন) যাত্রী এবং জবসিকার টাইপের আমাদের কাছে মনে হচ্ছে তাদের আমরা এয়ারপোর্টে ক্ষেত্রবিশেষে অফলোড করছি।
এ দিকে হজরত শাহজালাল ও শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এয়ারলাইন্স অপারেশন সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, প্রতিদিন ঢাকা থেকে মালয়েশিয়ার উদ্দেশে দেশী-বিদেশী মিলিয়ে মোট ছয়টি এয়ারলাইন্সের ফাইট চলাচল করছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি হয়রানির শিকার হচ্ছেন মালিন্দ্য ও এয়ার এশিয়াগামী ফাইটের যাত্রীরা। এরপরই রয়েছে রিজেন্ট ও বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের যাত্রী। সর্বশেষ শনিবার রাতে মালয়েশিয়ার শিপাং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ইমিগ্রেশনের হাতে আটক হওয়া বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ছয়জন যাত্রীকে ফিরতি ফাইটে ফেরত পাঠানো হয়েছে। তবে অন্য এয়ারলাইন্সগুলোর যাত্রী কতজন ফেরত এসেছে সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের সাথে যোগাযোগ করে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
এয়ারলাইন্স সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা গতকাল রোববার এ প্রতিবেদককে বলেন, বর্তমানে ঢাকা-মালয়েশিয়া রুটে চলাচলকারী বাজেট এয়ারলাইন্সগুলো ইমিগ্রেশনের প্রথম টার্গেটে রয়েছে। আর মালয়েশিয়ায় প্রতিদিন ধরপাকড় অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান তিনি।
গত রাতে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন অভিবাসন বিশেষজ্ঞ বলেন, মানুষ চোরাচালান সিন্ডিকেটের সাথে বিমানবন্দরের একাধিক সংস্থার কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ওতপ্রোতভাবে জড়িত আছেন। তাদের আগে চিহ্নিত করা প্রয়োজন। তাহলেই অবৈধভাবে বিদেশ যাওয়ার হার কমে যাবে বলে মনে করেন তিনি।
No comments:
Post a Comment