গাজীপুর সিটি করপোরেশনের জুগিরচালা এলাকায় একটি পরিত্যক্ত ভবনে রোববার দিবাগত গভীর রাতে জঙ্গি আস্তানায় র্যাবের অভিযানে নিহত দুই ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। র্যাব বলছে, নিহত দুজন নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জামাতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ (জেএমবি) এর সক্রিয় সদস্য ছিল। তাদের কাছে খবর ছিল, জঙ্গিরা পরিত্যক্ত ভবনটিতে গোপন বৈঠক করছিল।
কিন্তু র্যাবের বক্তব্যের সঙ্গে পুলিশের বক্তব্যের মিল খুঁজে পাওয়া যায়নি। জয়দেবপুর থানা পুলিশ বলছে, নিহত দুই ব্যক্তি রোববারই গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন।
রোববার রাত ২টার দিকে র্যাবের পক্ষ থেকে অভিযান নিয়ে তেমন কিছু না বলা হলেও টিভি চ্যানেলগুলোতে সরাসরি দেখানো হচ্ছিল পুরো অভিযান। মাঠের ওপর বিশেষ লাইটিং ইউনিট দিয়ে ব্যবস্থা ছিল পর্যাপ্ত আলোর। ওই ভবনটিতেই জঙ্গিরা আস্তানা গেড়েছিল বলে টিভি চ্যানেলগুলোর সরাসরি প্রতিবেদনে বলা হচ্ছিল।
গাজীপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) হারুন অর রশিদ জানান, রোববারের অভিযানে নিহত দুজনের নাম মিনহাজুল ও মাহবুব। তারা কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কারাগারে বন্দি ছিলেন। রোববার দুপুরে তাদের দুজনের জামিন হয়। তারা কারাগার থেকে জামিনে বের হলে র্যাব-১ এর সদস্যরা তাদেরকে নিজেদের হেফাজতে নেন। কিন্তু রাতের অভিযান বিষয়ে র্যাব তাদের আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানায়নি। জঙ্গি আস্তানায় অভিযানের বিষয়টি তিনি পরে গণমাধ্যমকর্মীদের কাছ থেকে শুনেছেন।
অন্যদিকে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার উপ-পরিচালক মেজর মাকসুদ আলম বলেন, ‘গাজীপুরের বাইপাস চৌরাস্তা থেকে ভোগড়া মোড় সংলগ্ন যোগীতলা গ্রামের একটি পরিত্যক্ত বাড়িতে জঙ্গি আস্তানায় র্যাব সদস্যরা অভিযান চালাতে যায়। এসময় ভবনটির ভেতর থেকে র্যাবকে লক্ষ্য করে বোমা নিক্ষেপ করা হয়। র্যাবও পাল্টা গুলি ছুড়লে এ হতাহতের ঘটনা ঘটে।’
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার মুফতি মাহমুদ খান রাত সোয়া ২টার দিকে আনুষ্ঠানিকভাবে ব্রিফিং করে জানান, জায়গাটি নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জেএমবির একটি আস্তানা। ঘটনাস্থল থেকে চারটি অবিস্ফোরিত হাতে তৈরি গ্রেনেড (ইমপ্রোভাইসড এক্সপেল্টাসিভ ডিভাইস-আইইডি) উদ্ধার করে নিক্রিয় করা হয়েছে। আর জঙ্গিদের বিস্ফোরিত বোমায় দুই র্যাব সদস্য আহত হয়েছেন। জঙ্গিদের কাছে থাকা একটি ব্যাগ থেকে বেশ কিছু বিস্ফোরক, ডেটোনেটরসহ গ্রেনেড তৈরির উপকরণ উদ্ধার করা হয়েছে।
তিনি জানান, সড়কের পাশের পরিত্যক্ত ওই জায়গায় জঙ্গিরা সভা করতো বলে তাদের কাছে খবর ছিল। ঘটনাস্থলে শুধু ওই দুজনই ছিল দাবি করে র্যাবের ওই কর্মকর্তা বলেন, র্যাব সদস্যরা জায়গাটি ঘেরাও করে অভিযান শুরু করে। এখান থেকে কেউ পালাতে পারেনি। তারা নাশকতার পরিকল্পনা করছিল বলে ধারণা মুফতি মাহমুদের।
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment