Social Icons

Wednesday, December 23, 2015

‘তর্ক করছিল তাই পিষে মেরেছি’

‘ওই সিএনজিচালক আমার সঙ্গে তর্ক করছিল। আমার বাসের সঙ্গে তার অটোরিকশা লাগায় জরিমানা চেয়েছিল। গাড়ির    
সমানে পথ আগলে ছিল। তাই তাকে পিষে দিয়েছি। এভাবেই নির্লিপ্ত ও স্বাভাবিক ভঙ্গিতে সিএনজি অটোরিকশা চালক ফারুককে নিজের বাসের চাকায় পিষে মারার কথা স্বীকার করেছে পাষণ্ড চালক আবদুল মজিদ। ব্যস্ততম রাস্তায় প্রকাশ্য এই খুনের জন্য কোনো অনুশোচনাও নেই তার। বাসচালক ফারুকের উদ্ধৃতি দিয়ে গতকাল বুধবার এসব কথা বলছিলেন ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও ঘাতককে আটককারী উত্তরা পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলী হোসেন খান। তিনি  বলেন, ফারুকের ড্রাইভিং লাইসেন্সও নেই। তেঁতুলিয়া পরিবহনের বাসটির মালিক তার পিতা বলে জানিয়েছে। গত মঙ্গলবার দুপুরের দিকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানাধীন ৩ নম্বর সেক্টরের কবি জসীম উদ্‌দীন মোড়ে বাস চাপায় নৃশংস হত্যার এ ঘটনা ঘটে। ‘সর, নইলে পিষে দেব’ এমন ঘোষণা দিয়েই চালক আব্দুল মজিদ সিএনজি চালক ফারুককে চাপা দিয়ে টেনে হিঁচড়ে ২০-২৫ গজ নিয়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনার পর পুলিশ ও জনতা পালিয়ে যাওয়ার সময় তাকে আটক করে। ঘাতক আব্দুল মজিদের বিরুদ্ধে মঙ্গলবার রাতে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন নিহত ফারুকের ছোট ভাই মো. হারুন। গতকাল আব্দুল মজিদকে আদালতে হাজির করা হয়। পুলিশ তার ৭ দিনের রিমান্ড চাইলে মহানগর হাকিম মাহবুবুর রহমান ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এ ঘটনায় তার ঘাতক বাসটিও আটক করা হয়েছে। উত্তরা পশ্চিম থানার সামনের রাস্তায় গাড়িটি রাখা হয়েছে। ঘাতক বাসচালক মো. আব্দুল মজিদ পাবনা জেলার চাটমোহর থানার বালুচর এলাকার মো. মোকছেদ মিয়ার ছেলে। 
এদিকে গতকাল দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। নিহত ফারুক এই এলাকার মৃত দেলোয়ার হোসেনের পুত্র। তার মা মনোয়ারা বেগম তাদের সঙ্গে ঢাকায় মুগদা থানাধীন উত্তর মান্ডায় ভাড়া বাসায় ছিলেন। 
নিহত ফারুক ৫ ভাই ও ১ বোনের মধ্যে সবার বড় ছিলেন। পাঁচ ভাইয়ের মধ্যে চার ভাই-ই চালক। নিহত ফারুক ছাড়াও তার দ্বিতীয় ভাই হারুন এবং পঞ্চম ভাই নুর মোহাম্মদও ঢাকায় সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালান। ভাড়ায় প্রাইভেট কার চালান চতুর্থ ভাই তৈয়ব। তার অপর ভাই নিরব গ্রামে কৃষিকাজ করেন। 
২০ বছর আগে পরিবার নিয়ে ঢাকায় এসেছিলেন ফারুক। এখন তিন ছেলে নিয়ে অসহায় হয়ে পড়েছেন ফারুকের স্ত্রী পেয়ারা বেগম। তাদের ছেলে মো. পারভেজ (১২) মান্ডায় একটি স্কুলে ষষ্ঠ এবং মো. আরিফ অপর একটি স্কুলে পড়ছে। চার বছরের মো. রাফি এখনও স্কুলে যায়নি। 
নিহত ফারুকের ছোট ভাই ও মামলার বাদী মো. হারুন বলেন, আমার ওই ভাই তার গাড়িতে ধাক্কা দিয়ে ক্ষতি করার প্রতিবাদ ও জরিমানা চেয়েছিল। এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে ইচ্ছে করে ঘোষণা দিয়েই পিষিয়ে মারা হয়েছে। উত্তরা পশ্চিম থানার উপ-পরিদর্শক ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা খগেন্দ্র চন্দ্র সরকার  বলেন, ঘাতক ও প্রত্যক্ষদর্শীদের অনেকের সঙ্গে কথা বলে চালকের ইচ্ছাকৃত হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া গেছে। রিমান্ডে নিয়ে তাকে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

No comments:

Post a Comment

 

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি

সম্পাদকীয় কার্যলয়

Rua padre germano mayar, cristo rio -80040-170 Curitiba, Brazil. Contact: +55 41 30583822 email: worldnewsbbr@gmail.com Website: http://worldnewsbbr.blogspot.com.br

সম্পাদক ও প্রকাশক

Jahangir Alom
Email- worldnewsbb2@gmail.com
worldnewsbbbrazil@gmail.com
 
Blogger Templates