বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেছেন, পৌরসভায় ভোটযুদ্ধে থাকছে বিএনপি।
সোমবার গুলশানে নিজের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
সরকার ও ইসির বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ জানিয়ে আসা বিএনপি পৌর নির্বাচনে এলেও সরে দাঁড়ানোর ‘ছুতো’ খুঁজছে বলে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতারা বলে আসছিলেন। এ পরিপেক্ষিতে সোমবার খালেদা জিয়া বলেন, ‘আমরাও নির্বাচনী যুদ্ধে শেষ পর্যন্ত অবিচল থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
দশম সংসদ নির্বাচন বর্জনের পর এই বছরের এপ্রিলে ঢাকা ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে এলেও কারচুপির অভিযোগ তুলে ভোটগ্রহণের মাঝপথে সরে দাঁড়িয়েছিল।
পৌর নির্বাচনে অংশ নিতে বাধা পাওয়ার অভিযোগ তুলে খালেদা বলেন, নানা ধরনের চাপ ও ভয়ভীতি দেখিয়ে অনেক জায়গায় বিএনপি প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জমা দিতে দেয়া হয়নি, প্রত্যাহারেও বাধ্য করা হয়েছে। সেনা মোতায়েনের দাবি করেছি। নির্বাচনে কমিশন বলেছে, সে ধরনের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়নি। আমরা জানি না, আর কত ভয়াবহ পরিস্থিতি হলে সেনা মোতায়েনের পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে।
নির্দলীয় সরকারের অধীনে না হওয়ায় সংসদ নির্বাচন বর্জনকারী দলটির নেত্রী বলেন, গণতান্ত্রিক আন্দোলনের অংশ হিসেবে আমরা পৌরসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অবতীর্ণ হয়েছি।
আমরা দেশবাসীকে অনুরোধ জানাই, আসন্ন পৌর মেয়র নির্বাচনে আমাদের মনোনীত প্রার্থীদের ধানের শীষে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করবেন। আপনাদের অধিকার ও গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার সংগ্রামে ভূমিকা রাখবেন।
আট মাস পর গুলশানে নিজের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন খালেদা। সিটি করপোরেশন নির্বাচনের আগে সর্বশেষ গত ২৫ এপ্রিল এখানে সংবাদ সম্মেলন করেছিলেন তিনি। তবে এর মাঝে বেশ কয়েকটি অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিলেন তিনি।
বিকাল ৪টা ২৪ মিনিটে শুরু হওয়া সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেয়ার সময়ে খালেদা জিয়ার টেবিলের সামনে ধানের শীষ প্রতীক ছিল। সংবাদ সম্মেলনের পর তিনি সেই প্রতীক হাতে তুলে নেন।
৩০ মিনিটের বক্তব্যে বিএনপি চেয়ারপারসন আসন্ন পৌর নির্বাচন ছাড়াও বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিসহ নানা বিষয়ে কথা বলেন। তবে সাংবাদিকদের কোনো প্রশ্ন নেননি তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ, আ স ম হান্নান শাহ, মুহম্মদ জমিরউদ্দিন সরকার, আবদুল মঈন খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, খালেদা জিয়ার প্রেসসচিব মারুফ কামাল খান, বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস উপস্থিত ছিলেন।
জামায়াতে ইসলামীর আবদুল হালিম, বিজেপির আন্দালিব রহমান পার্থ, জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, ইসলামী ঐক্যজোটের মজিবুর রহমান পেশোয়ারী, জাগপার শফিউল আলম প্রধানসহ ২০ দলীয় জোটের নেতারাও উপস্থিত ছিলেন।
স্থানীয় সরকারের আইন সংশোধনের পর পৌর নির্বাচনে মেয়র প্রার্থীরা দলীয় প্রতীক নিয়ে অংশ নিচ্ছেন। ফলে সাত বছর পর ৩০ ডিসেম্বরের এই ভোটে ব্যালটে ধানের শীষ প্রতীক থাকছে।
২০০৮ সালের সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয়ার পর ২০১৪ সালের নির্বাচন বর্জন করে সংসদ থেকে ছিটকে পড়ে বিএনপি। এরপর এই বছরের শুরুতে সরকার হটানোর আন্দোলন শুরু করলেও ব্যর্থ হওয়ার পর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে গিয়েছিল দলটি।
সোমবারের সংবাদ সম্মেলনের একদিন আগেও খালেদা জিয়া এক অনুষ্ঠানে বলেন, ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে বিএনপির ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থীদেরই জয় হবে, ভরাডুবি হবে ক্ষমতাসীনদের।
No comments:
Post a Comment