আগামী শনিবারই ৬০ বছরে পা দিতে চলেছেন দাউদ ইব্রাহিম। সংবাদমাধ্যমের একাংশের দাবি, তাঁর শরীরটাও বিশেষ ভাল যাচ্ছে না। তাই এ বার অবসর নেওয়ার কথা ভাবছেন ভারতের ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’। ভারতে অবসরের গড়পড়তা বয়স ৬০। কাজেই এ বার সেই হিসেবেও অবসরের কথা ভাবতেই পারেন ডি কোম্পানি-র কর্ণধার। সংবাদমাধ্যমের দাবি, শনিবার তাঁর জন্মদিনের পার্টিতেই ঘোষণা করা হবে অন্ধকার জগতের বাদশার উত্তরসূরির নাম।
একটি সংবাদপত্রের দাবি, দাউদের উত্তরসূরি হওয়ার দৌড়ে অনেকটাই এগিয়ে রয়েছেন তাঁর ভাই আনিস ইব্রাহিম। ১৯৯৩ সালের মুম্বই বিস্ফোরণ মামলায় অভিযুক্তদের তালিকায় দাউদের পরের সারিতেই রয়েছে আনিসের নাম।
দাউদের এক ভাই নুরুল হক ওরফে নুরার মৃত্যু হয়েছে আগেই। আর এক ভাই ইকবাল কাসকরকে দুবাই থেকে ভারতে নিয়ে আসা হয়েছিল। এখন দাউদের সঙ্গে থাকেন তাঁর তিন ভাই-আনিস, হুমায়ুন এবং মুস্তাকিম। সংবাদমাধ্যমের দাবি, হুমায়ুন এবং মুস্তাকিম ব্যবসার কাজে খুব একটা সক্রিয় নন। অসুস্থতার কারণে মুস্তাকিম বাড়ি থেকেও খুব একটা বের হতে পারেন না। কিন্তু আনিস এখনও দলের কাজে সমান সক্রিয়।
ডি-কোম্পানির শীর্ষ কর্তাদের মধ্যে দাউদের উত্তরসূরি হওয়ার দাবিদার হতে পারত ছোটা শাকিলও। ১৯৯৪ সালে ছোটা রাজন ডি-কোম্পানি ছাড়ার পর থেকেই দাউদের ঘনিষ্ঠ সহযোগী শাকিল। কিন্তু একটি সংবাদপত্র জানাচ্ছে, আনিসের পথে বাধা হয়ে দাঁড়ানোর ভুল সম্ভবত করবে না শাকিল। কারণ, অন্ধকার জগতে রক্তের সম্পর্কের দাম অন্য যে কোনও সম্পর্কের চেয়ে বেশি। গোয়েন্দাদের মতে, এখন শাকিল কার্যত ডি-কোম্পানির সিইও-র কাজ করেন। পরেও সে সেই কাজই করবে বলে দাবি সংবাদমাধ্যমের।
অপরাধ জগতের সূত্র উদ্ধৃত করে একটি সংবাদপত্র জানিয়েছে, শনিবার দাউদের জন্মদিন উপলক্ষে বিশাল পার্টির আয়োজন করেছে ডি কোম্পানি। তাতে ভারতের পাশাপাশি সংযুক্ত আরব আমিরশাহি-সহ বিভিন্ন দেশের অতিথিরা থাকবেন। ভারতীয় গোয়েন্দারা ইতিমধ্যেই আমিরশাহির ৩৫ জন আমন্ত্রিতের তালিকা হাতে পেয়েছেন। তাতে সে দেশের রাজপরিবারের সদস্য ও প্রভাবশালী কূটনীতিকদের নাম রয়েছে।
তবে ঠিক কোথায় এই পার্টি হবে তা আমন্ত্রিতেরাও জানেন না বলে দাবি সংবাদমাধ্যমের। তাঁদের নামে নাকি কেবল করাচির হোটেলে বুকিং করা হয়েছে। আর জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, ঠিক সময়ে গাড়ি এসে নিয়ে যাবে ওই পার্টিতে।
কিন্তু কেন অবসর নিতে চান দাউদ? অপরাধ জগতের সূত্র একটি সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছে, ‘ভাই’-এর শরীর যথেষ্ট অসুস্থ। চিকিৎসার জন্য তাঁকে ছোটাছুটি করতে হচ্ছে। এক সময়ে করাচির এক হাসপাতালের কাছে দাউদের বাংলো ভাড়া নেওয়ার কথাও শোনা গিয়েছিল। সেই সঙ্গে দাউদকে ডি কোম্পানির শীর্ষ পদ থেকে সরে দাঁড়াতে চাপ দিচ্ছেন স্ত্রী মেহজাবিন ও মেয়ে মাহরুখ ও ছেলে মইন। সংবাদপত্রটির দাবি, মাহরুখ ও মইন ডি-কোম্পানির কালো সাম্রাজ্যকে বৈধ সাম্রাজ্যের চেহারা দেওয়ার বিষয়ে মূল ভূমিকা নিচ্ছেন। তাঁদের কথাকে বিশেষ গুরুত্ব দেন দাউদ। মাহরুখের স্বামী পাকিস্তানি ক্রিকেটার জাভেদ মিয়াঁদাদের ছেলে জুনেইদ।
তাছাড়া সময় থাকতেই নিজের ব্যবসা ও সম্পত্তির সঠিক বাঁটোয়ারা চাইছেন দাউদ। না হলে তা নিয়েই শুরু হয়ে যেতে পারে মুম্বইয়ের অন্ধকার জগতে লড়াইয়ের পরবর্তী পর্ব। পরের প্রজন্মের জন্য তাই সব কিছু ঠিক করে রেখে যেতে চান দাউদ। এক জন প্রকৃত ব্যবসায়ীর মতোই।
Friday, December 25, 2015
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment