Social Icons

Sunday, December 11, 2016

ব্রাজিল ফুটবলে অদ্ভুত তাঁদের জার্সি নম্বর


ব্রাজিল অনেক বছর ধরেই ৯ নম্বর জার্সির যুতসই একজনকে খুঁজছে। এটা শুনেই আপনি চোখ বন্ধ করে বলে দিতে পারবেন, ব্রাজিল আসলে ‘দ্য ফেনোমেনোন—রোনালদো’র যোগ্য উত্তরসূরির খোঁজে আছে। মানে খুব ভালো একজন স্ট্রাইকার দরকার তাদের। ফুটবল যারা অনুসরণ করেন, তারা জার্সি নম্বর দেখে সহজেই একজন খেলোয়াড়ের পজিশন বলে দিতে পারবেন। কারও গায়ে ১০ নম্বর জার্সি দেখলেই তারা বলবেন, খেলোয়াড়টি প্লে-মেকার বা ফরোয়ার্ড। ১১ বা ৭ নম্বর জার্সি দেখলেও তা-ই বলবেন। ৮ নম্বর দেখলে বলবেন মিডফিল্ডার।

কিন্তু এ পৃথিবীতে প্রথাগত বিষয়ের বাইরেও অনেক কিছু থাকে। এমন অনেকে আছেন, যারা আসলে প্রথা ভাঙতে পছন্দ করেন। এই কারণেই ফুটবল বিশ্ব দেখেছে ‘১ ‍+ ৮’ নম্বর জার্সি। একজন প্লে-মেকারকে দেখেছে ৮০ নম্বর জার্সি পরে খেলতে। আবার একজন ডিফেন্ডারের গায়ে দেখেছে ৯ নম্বর জার্সি। ফুটবল বিশ্বে এমন অদ্ভুত নম্বরের জার্সি পরে চমকে দেওয়ার ঘটনা অনেক আছে।
ব্রাজিলের কিংবদন্তি স্ট্রাইকার রোনালদো বার্সেলোনায় এক মৌসুম কাটিয়ে ১৯৯৭ সালে নাম লেখান ইন্টার মিলানে। ইতালির ক্লাবটিতে তখন ৯ নম্বর জার্সি ছিল চিলির স্ট্রাইকার ইভান জামারানোর দখলে। কিন্তু কোচ তাঁর ৯ নম্বর জার্সিটা রোনালদোকে দেন। জামারানো এটা সহজে মেনে নিতে পারেননি। সিদ্ধান্ত নেন ‘১ ‍+ ৮’ নম্বর পরে খেলবেন। যেমন ভাবা তেমন কাজ—ইন্টার মিলানে এরপর এই নম্বরের জার্সি পরেই খেলেন এই চিলিয়ান।
একজন ডিফেন্ডারের ৯ নম্বর জার্সি পরে খেলার ঘটনা অবশ্য বেশি দিন আগের নয়। খালিদ বোলারুজ চেলসিতে নাম লেখান ২০০৬ সালে। স্ট্যামফোর্ড ব্রিজের ক্লাবটিতে ২ নম্বর জার্সিটি খালিই ছিল, যেটা একজন ডিফেন্ডারের সঙ্গে মানানসই। কোচ হোসে মরিনহো অবশ্য ডাচ এই ডিফেন্ডারকে সেটা না দিয়ে ৯ নম্বর জার্সি দিলেন। ক্লাবটিতে দুই বছর এই জার্সি পরেই খেলেন বোলারুজ।
সাবেক আর্সেনাল ডিফেন্ডার উইলিয়াম গালাসও পরতেন ১০ নম্বর জার্সি। কারণটা অবশ্য অদ্ভুত, আর্সেনালে তাঁর আগে ১০ নম্বর জার্সিটা পরতেন ডাচ ফরোয়ার্ড ডেনিস বার্গক্যাম্প। নতুন কোনো ফরোয়ার্ডকে ১০ নম্বর জার্সিটা দেওয়া হলে, ক্লাব কিংবদন্তির সঙ্গে অনাহূত তুলনা শুরু হয়ে যাবে এই ভয়েই গালাসকে জার্সিটা দেন কোচ আর্সেন ওয়েঙ্গার। 
১৯৭৪ বিশ্বকাপে হল্যান্ড দলে কার কী জার্সি ছিল মনে আছে? একটু অদ্ভুত। মিডফিল্ডার রুড জিলস যেমন পেয়েছিলেন ১ নম্বর জার্সি। তিন গোলরক্ষকের ভাগ্যে জুটেছিল ৮, ১৮ ও ২১ নম্বর জার্সি। তবে ইয়োহান ক্রুইফকে তাঁর ট্রেডমার্ক ১৪ নম্বর জার্সিটি পরতে দেওয়া হয়।
১৯৮২ বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার মিডফিল্ডার অসভালদো খেলেন ১ নম্বর জার্সি পরে।১৯৭৮ ও ১৯৮২ বিশ্বকাপে জার্সির ক্ষেত্রে চমক নিয়ে হাজির হয় আর্জেন্টিনা। দুটি বিশ্বকাপেই দেশটির খেলোয়াড়রা জার্সি পরে বর্ণমালার ক্রমানুসারে। ১ নম্বর জার্সি সাধারণত আমরা কোনো দলের গোলরক্ষককেই পরতে দেখি। কিন্তু আটাত্তরের বিশ্বকাপে জার্সিটি জোটে মিডফিল্ডার নরবার্তো আলোনসোর কপালে। ২ নম্বর জার্সিটি মূলত ডিফেন্ডাররা পরে থাকেন। কিন্তু সেবার আর্জেন্টিনা দলে জার্সিটি পরেন সেন্ট্রাল মিডফিল্ডার অসভালদো আর্দিলেস। গোলরক্ষক হেক্টর বেলির পিঠে ওঠে ৩ নম্বর জার্সি। অপর দুই গোলরক্ষক উবালদো ফিলোল ৫ আর রিকার্ডো লা ভোলপে পরেন ১৩ নম্বর। ১৯৮২ বিশ্বকাপেও আর্জেন্টিনার জার্সি নম্বরগুলো একইভাবে সাজানো হয়। তাতে ১ নম্বর জার্সিটি পান অসভালদো। গোলরক্ষক হেক্টর বেলি পান ২ নম্বর। ডিয়েগো ম্যারাডোনা অবশ্য ১০ নম্বর জার্সি পরেই খেলেন, যেটা পরে তার ট্রেডমার্ক জার্সি হয়ে যায়। ফরোয়ার্ড মারিও কেম্পেস খেলেন ১১ নম্বর পরে।
ডাকনাম ছিল ‘জিরো’। অ্যাবেরডিনে ‘০’ নম্বর জার্সি পরে খেলতেন মরক্কোর স্ট্রাইকার হিশাম।কোচ আরোপিত জার্সি পরার পাশাপাশি জামারানোর মতো খেলোয়াড়দের কেউ কেউ আবার নিজেদের পছন্দ মতো জার্সি নম্বর বেছে নিয়েছেন বা নিচ্ছেন। যার মধ্যে কিছু আপনার কাছে অদ্ভুত মনে হওয়াই স্বাভাবিক। এর মধ্যে কারও কারও ক্ষেত্রে অদ্ভুত এই নম্বর বেছে নেওয়ার ব্যাখ্যা পাওয়া গেছে। কারও কারও ক্ষেত্রে ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি।
মরক্কোর স্ট্রাইকার হিশাম জেরুয়ালি অ্যাবেরডিনে ১৯৯৯ থেকে ২০০২ সালে ‘০’ নম্বর পরে খেলেছেন। জেরুয়ালির ডাকনাম ‘জিরো’, মানে শূন্য। এই কারণে তিনি স্কটিশ প্রোফেশনাল লিগ কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করে এই জার্সি নম্বর নিজের করে নিয়েছিলেন। ২০০৪ সালের ইউরোপিয়ান কাপের ফাইনালে ৯৯ নম্বর জার্সি পরে খেলেছিলেন পোর্তোর গোলরক্ষক ভিতর বাইয়া। এই নম্বর পরে খেলা প্রথম ফুটবলার তিনিই। মেক্সিকোর ঘরোয়া ফুটবলে ১০০ নম্বর পরে খেলতেন গুয়াদালাহারা। তবে ফিফার নিয়মে তিন অঙ্কের জার্সি নম্বর পরে খেলা আইনসিদ্ধ নয় বলে কোপা লিবের্তাদোরেসে ১০০ নম্বর পরে খেলতে পারেননি।
এসি মলানে ৮০ নম্বর জার্সি পরে খেলতেন রোনালদিনহো। এটা তিনি বেছে নিয়েছিলেন নিজের জন্ম সালের সঙ্গে মিল করে।বার্সেলোনা থেকে এসি মিলানে নাম লেখানো রোনালদিনহো বেছে নিয়েছিলেন ৮০ নম্বর জার্সি। ১৯৮০ সালে জন্ম ব্রাজিলের এই প্লে-মেকারের। এর সঙ্গে মিল করেই এই নম্বর বেছে নিয়েছিলেন ২০০২ সালে ব্রাজিলের হয়ে বিশ্বকাপ জেতা এই কিংবদন্তি। বায়ার্ন মিউনিখে বিজেন্তে লিজারাজুর কিছুদিন ৬৯ নম্বর জার্সি পরে খেলার সঙ্গে অনেকে আবার অন্য রকম একটা ব্যাপার খুঁজে পান—ফ্রান্সের এই ডিফেন্ডারের জন্ম ১৯৬৯ সালে, ১৬৯ সেন্টিমিটার লম্বা তিনি সেই সময়ে তাঁর ওজন ছিল ৬৯ কেজি!

No comments:

Post a Comment

 

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি

সম্পাদকীয় কার্যলয়

Rua padre germano mayar, cristo rio -80040-170 Curitiba, Brazil. Contact: +55 41 30583822 email: worldnewsbbr@gmail.com Website: http://worldnewsbbr.blogspot.com.br

সম্পাদক ও প্রকাশক

Jahangir Alom
Email- worldnewsbb2@gmail.com
worldnewsbbbrazil@gmail.com
 
Blogger Templates