Social Icons

Monday, December 19, 2016

রোনালদোর হ্যাটট্রিকে শিরোপা রিয়ালের

নিজের ছায়া হয়ে ছিলেন অনেকটা সময়। কিন্তু কতক্ষণ আর? একসময় তা থেকে বেরিয়ে হয়ে ওঠেন মহীরুহ।
যাঁর ছায়ার তখন ঢাকা পড়ে যায় বাকি সব কিছু। গাবু শিবাসাকি, কাশিমা অ্যান্টলার্স, ইয়োকোহামা আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামের ৭২ হাজার দর্শকের সিংহভাগ—সব। রিয়াল মাদ্রিদ যে কাল শেষ পর্যন্ত ক্লাব বিশ্বকাপের শিরোপা জেতে তাঁরই বীরত্বে! ক্রিস্তিয়ানো রোনালদোর হ্যাটট্রিকে!
প্রতিপক্ষ কাশিমা অ্যান্টলার্স বলে রিয়ালের জয়টা একরকম প্রত্যাশিত ছিল। ৪-২ ব্যবধানে স্কোরলাইন হয়তো সহজ জয়ের বার্তাই দেবে। ভুল! নির্ধারিত সময়ের খেলা ২-২ গোলে ড্র থাকায় খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। জাপানি ক্লাবটি তখন আত্মবিশ্বাসে ফুটছে টগবগিয়ে। সময়ের সঙ্গে ক্রমশ বিবর্ণ হওয়া রিয়াল মাদ্রিদের সামনে অঘটনের চোখরাঙানি। মাত্রই চতুর্থ বছরের মতো বিশ্বসেরা ফুটবলারের স্বীকৃতি পাওয়া রোনালদোর খেলাতেও রংহীনতার ছাপ। ম্যাচঘড়ির ঘণ্টাখানেকের মাথায় পেনাল্টি থেকে গোল করে রিয়ালকে সমতায় ফিরিয়েছেন ঠিক। কিন্তু এর আগে-পরে ব্যর্থতার সাতকাহন। হেডে সহজ গোল করতে পারেন না, কাশিমা গোলরক্ষককে একা পেয়েও বল পাঠাতে পারেন না জালের প্রার্থিত ঠিকানায়। সেই রোনালদো যে অতিরিক্ত সময়ে গিয়ে অমনভাবে জ্বলে উঠবেন, কে ভেবেছিলেন!
৯৭তম মিনিটে করিম বেনজেমার দুর্দান্ত থ্রু বলে খুলে যায় কাশিমার ডিফেন্স। পর্তুগিজ সম্রাট ডান পায়ের স্পর্শে বল নিয়ে যান বাঁয়ে। এরপর বাঁ পায়ের গড়ানো শটে গোল। কিছুক্ষণ পর ইয়ুকা সুজুকির হেড ক্রসবারে প্রতিহত হলে বিমর্ষ হয়ে যায় জাপানিজরা। তাদের আরো বিষণ্ন করে ১০৪তম মিনিটে রোনালদোর হ্যাটট্রিক পূর্ণ। এবার টোনি ক্রোসের ভলিতে ভাগ্যবশত বল এসে পড়ে তাঁর কাছে। সেই সৌভাগ্যকে দুহাতে বরণ করে নেন বাঁ পায়ের অবিশ্বাস্য নিয়ন্ত্রণে বলকে পোষ মানিয়ে। এরপর ডান পায়ের টোকায় জায়গা করে বাঁ পায়ের উঁচিয়ে মারা শটে গোল। রোনালদোর হ্যাটট্রিক; রিয়াল মাদ্রিদের পঞ্চম ক্লাব বিশ্বকাপ শিরোপা নিশ্চিত।
ফাইনালের শেষ বাঁশির পর রোনালদোর জয়ধ্বনিই চারদিকে, অথচ কত সহজেই না তা বদলে যেতে পারত কাশিমা অ্যান্টলার্সের ইতিহাসসেরা সাফল্যে। সংশপ্তকের মতো লড়াই করে গেছে তারা অন্তত ৯০ মিনিট। প্রতিপক্ষ প্রবল পরাক্রমশালী হলেও হাল ছাড়েনি। অষ্টম মিনিটে বেনজিমার গোলে পিছিয়ে পড়েছে, তো পরের মিনিটেই কাশিমার প্রচেষ্টায় বল বেরিয়ে যায় ক্রসবারে শিস কেটে। মাথা উঁচু করে যুদ্ধের ফল পায় প্রথমার্ধ শেষ হওয়ার মিনিট দুয়েক আগে। শিবাসাকির ভলিতে ম্যাচে ফেরায় সমতা। তবে চমকের শেষ এখানে নয়। দ্বিতীয়ার্ধের সপ্তম মিনিটে তো এগিয়ে পর্যন্ত যায় জাপানি ক্লাবটি। গোলদাতা সেই শিবাসাকি। এবার রিয়ালের চার খেলোয়াড়ের মাঝেও বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া বাঁ পায়ের দারুণ শটে গোল করেন তিনি। ইয়োকোহামা স্টেডিয়ামের দর্শকরা তখন উল্লাসে উন্মাদপ্রায়।
রিয়াল মাদ্রিদ এরপর ম্যাচে ফেলে প্রবলভাবে। লুকাস ভাসকেস ফাউলের শিকার হওয়ায় পায় পেনাল্টি। যা কাজে লাগাতে ভুল হয় না রোনালদোর। এরপর অবশ্য বারদুয়েক সুযোগ কাজে লাগাতে পারেন না। ৭৩তম মিনিটে বল জালে পাঠালেও তা গোল হয় না অফসাইডের কারণে। ম্যাচ শেষ ১০ মিনিটে ঢুকে গেলে সবার চোখ গিয়ে পড়ে একজন সের্হিয়ো রামোসের দিকে। নাহ্, কাল তিনি ওই শেষ মুহূর্তে গোল দিতে পারেননি। তবু কী প্রবল সৌভাগ্যবান! ৯০তম মিনিটে জঘন্য ফাউল করায় দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার জোগাড়যন্ত্র করে ফেলেছিলেন। জাম্বিয়ার রেফারি জানি সিকাজুয়ি কী বুঝে যেন পকেট থেকে কার্ড বের করেন না। কাশিমা অ্যান্টলার্সের দুর্ভাগ্য আছে আরো। ওই ঘটনার মিনিট তিনেক আগে ৮৭তম মিনিটে জে-লিগ চ্যাম্পিয়নদের বদলি খেলোয়াড় ফাব্রিসিও দোস সান্তোসের দারুণ শট কোনোমতে ফেরান রিয়াল গোলরক্ষক কেইয়ালর নাভাস। আর ইনজুরি সময়ের শেষ মুহূর্তে দ্বিতীয় পোস্টে ফাঁকায় দাঁড়ানো কাশিমার আরেক ফুটবলার একটুর জন্য বলে ছোঁয়া লাগাতে পারেন না।
তাতেই তৈরি হয়ে যায় রোনালদোর বীরত্বের মঞ্চ। ইনজুরি সময়ের জোড়া গোলে নিজের হ্যাটট্রিকের সঙ্গে রিয়াল মাদ্রিদের ট্রফিজয় নিশ্চিত করে সব আলো কেড়ে নেন তিনি। যথারীতি! মার্কা, এএফপি

No comments:

Post a Comment

 

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি

সম্পাদকীয় কার্যলয়

Rua padre germano mayar, cristo rio -80040-170 Curitiba, Brazil. Contact: +55 41 30583822 email: worldnewsbbr@gmail.com Website: http://worldnewsbbr.blogspot.com.br

সম্পাদক ও প্রকাশক

Jahangir Alom
Email- worldnewsbb2@gmail.com
worldnewsbbbrazil@gmail.com
 
Blogger Templates