অস্ট্রেলিয়া মিশ্র সংস্কৃতির দেশ হিসেব বিশ্বে পরিচিত। ১৯৯০ সাল থেকে ব্যাপক হারে বাংলাদেশি আসতে শুরু করে অস্ট্রেলিয়ায়। বাংলাদেশিদের বড় অংশ এখানে পাড়ি জমিয়েছেন ছাত্র কিংবা পেশাজীবী হিসেবে। ২০০১ সাল পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ায় অভিবাসী বাংলাদেশির সংখ্যা ছিলো মাত্র ৯ হাজার ৭৮ জন। সংখ্যাটা খুব কম হলেও ১৬ বছর পর তা এসে দাঁড়িয়েছে প্রায় ষাট থেকে সত্তর লাখে।
বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় অষ্ট্রেলিয়ায় অনেক ভালো অবস্থায় আছে প্রবাসী বাংলাদেশিরা। কিন্তু এ প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে অনেকেই অবৈধভাবে প্রবেশ করেছে অষ্ট্রেলিয়ায়। যার কারণে সুনাম ক্ষুণ্ন হচ্ছে বৈধ প্রবাসি বাংলাদেশিদের। অবৈধ প্রবাসীদের বিষয়ে অস্ট্রেলিয়ার বাংলাদেশি অনলাইন নিউজ পোর্টালের সম্পাদক মো. আবুল কালাম আজাদের সাথে কথা হয় ভয়েস বাংলার। তিনি জানান মূলত নৌপথে ও স্টুডেন্ট ভিসায় এসে নিয়ম অনুযায়ী টিউশন ফি না দিয়ে বাংলাদেশিরা অবৈধ ভাবে থেকে যাচ্ছে অষ্ট্রেলিয়ায়।
আবুল কালাম আজাদ বলেন, মালয়েশিয়া থেকে দালালদের মাধ্যমে প্রথমে ইন্দোনেশিয়া পড়ে সেই দেশ থেকে সমুদ্রপথে অষ্ট্রেলিয়ার উদ্দেশ্যে অবৈধভাবে পাড়ি জমাচ্ছে বাংলাদেশিরা। যদিও বর্তমানে এই পদ্ধতিতে প্রবেশ শিথিল করেছে অস্ট্রেলিয়ার সরকার। তবে তিনি জানান, যারা নৌ পথে অস্ট্রেলিয়ায় প্রবেশ করে তাদের অস্ট্রেলিয়ান নৌবাহিনী আটক করে শরণার্থী ক্যাম্পে নিয়ে যায়। সেখানে তাদের নিদির্ষ্ট পরিমাণ ভাতা দেয় অস্ট্রেলিয়ান সরকার। তবে নিকটতম আত্মীয়-স্বজন থাকলে কিছুদিনের মধ্যেই শরণার্থী ক্যাম্পগুলোতে ছাড় পায় প্রবাসীরা। কিন্তু সাধারণ ভাবে দুই-তিন বছর লেগে যায় ক্যাম্পে থেকে ছাড়া পেতে।
এইসব আটক বাংলাদেশি শরণার্থীরা রাজনৈতিক আশ্রয়ে অস্ট্রেলিয়ায় থাকার কোনো সুযোগ আছে কিনা এই বিষয়ে আবুল কালাম আজাদ বলেন, কোন দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি খারাপ হলে শুধুমাত্র তাদেরই রাজনৈতিক আশ্রয় দেয় অস্ট্রেলিয়া। এই দিক বিবেচনা করলে বাংলাদেশিরা কেউ রাজনৈতিক আশ্রয় পায় না অন্যদিকে স্টুডেন্ট ভিসায় অনেক বাংলাদেশি অস্ট্রেলিয়ায় আসলেও সময় মত টিউশন ফি না দিয়ে অবৈধ হয়ে যাচ্ছে ।
আবুল কালাম আজাদ বলেন, বর্তমান তথ্য প্রযুক্তির যুগে কোনে ছাত্র সময়মত টিউশন ফি না দিলে খুব দ্রুত তাদের বিষয়ে তথ্য চলে যাচ্ছে অস্ট্রেলিয়ান পুলিশের কাছে। এই ধরনের তথ্য পেলে সেই ছাত্রকে এক সপ্তাহের মধ্যেই আটক করার হয়। তাই এভাবে অবৈধ হওয়া প্রবাসী বাংলাদেশিরা পুলিশের থেকে লুকিয়ে নানা ভাবে অস্ট্রেলিয়ায় থাকে।
অস্ট্রেলিয়ায় অবৈধ নয় বৈধভাবে প্রবেশে অনুরোধ জানান এই অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী আবুল কালাম আজাদ। তিনি বলেন, অস্ট্রেলিয়া অন্য দেশের জনগনকে তাদের সকল কাযক্রম করতে বাধা দেয় না। এই অবস্থায় অবৈধভাবে এ দেশে প্রবেশ করে বৈধ প্রবাসী ও বাংলাদেশের সুনাম নষ্ট না করার জন্য আহব্বান জানান তিনি।
No comments:
Post a Comment