ইসলাম ধর্মে আনুষ্ঠানিক বিবাহ বিচ্ছেদকে তালাক বলা হয়। স্বামী সর্বাবস্থায় তালাক দিতে পারেন। তালাকের বিষয়টি সম্পর্কে অনেক নারীরই স্পট ধারণা নেই। অনেকেই প্রশ্ন করে থাকেন নারীরা তালাক দিতে পারেন কিনা। তবে মুসলিম আইনে স্ত্রীর তালাক দেয়ার কোনো ক্ষমতা নেই, যদি না কাবিননামার ১৮তম কলামে স্ত্রীর তালাক দেয়ার ক্ষমতা দেয়া থাকে।
অনেক সময় ১৮তম কলামে স্ত্রীর তালাক দেয়ার ক্ষমতা না থাকলেও কতগুলো মানবিক কারণ বিবেচনা করে তালাকের জন্য আবেদন করতে পারবেন স্ত্রী।
আসুন জেনে নেই কাবিননামায় উল্লেখ না থাকলেও কীভাবে তালাক দেবেন স্ত্রী।
স্ত্রীকে শারীরিক নির্যাতন
কোনো স্ত্রীর প্রতি স্বামী নিষ্ঠুর আচরণ করলে ওই স্ত্রী বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটানোর সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। স্ত্রীকে মারধর বা শারীরিক নির্যাতন ছাড়াও নিষ্ঠুর আচরণ করে স্ত্রীর জীবন দুর্বিষহ করে তুললে স্ত্রী বিবাহ বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।
অন্য নারীর সঙ্গে মেলামেশা
স্বামী যদি এক বা একাধিক নারীর সঙ্গে মেলামেশা করেন বা অনৈতিক জীবনযাপন করেন তাহলে স্ত্রী স্বামীকে তালাক দিতে পারবেন। এছাড়া স্ত্রীকে অনৈতিক জীবনযাপনে বাধ্য করার চেষ্টা করলে স্ত্রী বিবাহ বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।
স্ত্রীর সম্পত্তিতে হস্তক্ষেপ
স্বামী যদি স্ত্রীর সম্পত্তিতে হস্তক্ষেপ করেন বা তার স্ত্রীর সম্পত্তির অধিকারে বাধা প্রদান করেন, তাহলে স্ত্রী তালাকের সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন।
ধর্মকর্ম
স্ত্রীর ধর্মকর্ম পালনে বাধা দিলে এবং একাধিক স্ত্রী থাকলে পবিত্র কোরআনের বিধান মোতাবেক সমভাবে ব্যবহার করতে ব্যর্থ হলে কাবিননামায় তালাকের ক্ষমতা না থাকা সত্ত্বেও স্ত্রী তার স্বামীকে তালাক দিতে পারবেন।
উল্লিখিত যে কোনো একটি কারণে বিবাহ বিচ্ছেদ চাইতে হলে স্ত্রীকে আদালতের মাধ্যমে যেতে হবে। তালাক স্বামী বা স্ত্রী যেই দিক না কেন, স্ত্রী তার প্রাপ্য মোহরানা যে কোনো সময় দাবি করতে পারবেন। এছাড়া তালাক নিবন্ধন বাধ্যতামূলক আর তাই যে এলাকায় তালাক কার্যকর করা হয়েছে সেই এলাকার নিকাহ রেজিস্ট্রার দিয়ে তালাক নিবন্ধন করাতে হবে।
অ্যাডভোকেট সালমা হাই টুনী, বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্ট।
No comments:
Post a Comment