বাংলাদেশের বৃহৎ জনশক্তি রপ্তানির বাজার মধ্য প্রাচ্যের দেশ সৌদি আরব।চলতি বছরে দেশটিতে পাঁচ লাখেরও বেশি শ্রমিক প্রবেশ করেছে।মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, কাতার, ওমানসহ অন্যান্য দেশে যে পরিমাণ শ্রমিক গেছেন, সেই একই সংখ্যক শ্রমিক এবার কাজের প্রতিশ্রুতি পেয়ে সৌদি আরবে যাচ্ছেন । এদের মধ্যে অনেকেই ভালো আছেন। আবার অনেকে মানবেতর দিন কাটাচ্ছেন।
অভিযোগ রয়েছে, লাখ লাখ টাকা খরচ করে যাওয়ার পরও চুক্তি মোতাবেক অনেকেই নিজ নিজ কোম্পানিতে কাজ পাননি। পাননি ইকামাও, যার কারণে জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর বহির্গমন ছাড়পত্র নিয়ে যাওয়ার পরও তারা স্বাধীনভাবে কাজ ও চলাফেরা করতে পারছেন না বলে অভিযোগ রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে সৌদি আরবের রিয়াদ, জেদ্দা ও দাম্মামসহ বিভিন্ন অঞ্চলে ইকামা ছাড়া অবস্থানকারী বাংলাদেশি শ্রমিকেরা পুলিশি ধরপাকড় অভিযানের কারণে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। উপায় না দেখে কেউ কেউ পালিয়ে রিক্রুটিং এজেন্সির মালিক, দালালের নাম, ঠিকানা উল্লেখ করে দূতাবাসে লিখিত অভিযোগ করছেন। তারপরও দূতাবাস সংশ্লিষ্টরা অসহায় কর্মীদের সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করে যখন ব্যর্থ হচ্ছেন।অভিযোগের সঠিক কোন সুরাহা মিলছে না ভুক্তোভোগি শ্রমিকদের কাছে।
জিএমজি অ্যাসোসিয়েশন এজেন্সির মাধ্যমে সৌদি আরবে গমন করা জসিম উদ্দিন, আব্দুর রহিম ও খোকন হালদার। তারা জানান, সৌদিতে ফ্রি ভিসা,ভালো কাজ আর ইকামা দেওয়ার্ কথা বলে আমাদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা নেয় জিএমজির মালিক রিয়াদুল ইসলাম। তারপর সৌদিতে পাঠিয়ে রিয়াদুল আর আমাদের সাথে যোগাযোগ করেনি। ফোন দিলেও ফোন ধরেনি।ইতোমধ্যে এই শ্রমিকরা দূতাবাসে রিয়াদুলের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। প্রতারিত শ্রমিক রহিম বলেন, আমি এখন কী করব? পুলিশ এখানে প্রতিদিন কোনো না কোনো এলাকায় তল্লাসি চালাচ্ছে।
যেকোনো সময় পুলিশের হাতে ধরা পড়ে যেতে পারি। তাহলে আমি যে ১১ লাখ টাকা খরচ করে এসেছি সেই টাকা কিভাবে শোধ করব? তিনি আরও বলেন, ‘আমার মতো শত শত শ্রমিক এ দেশে এসে এখন কাজ না পেয়ে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছে। পরিস্থিতি খুব খারাপ। আবার আমার মতো যাদের ইকামা নেই তারাতো পুলিশের ভয়ে ঘর থেকে বের হচ্ছে না। প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ১১ ডিসেম্বর সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত গোলাম মসীহ্ রিক্রুটিং এজেন্সি জিএমজি অ্যাসোসিয়েটস লিমিটেডের (আরএল নম্বর-১১৪৩) মাধ্যমে পাঠানো তিন শ্রমিকের সাথে ‘ফ্রি ভিসার’ নামে কিভাবে প্রতারণা করা হয়েছে তার ফিরিস্তি মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিবের কাছে পাঠিয়েছেন।
এসব অভিযোগ প্রসঙ্গে রিক্রুটিং এজেন্সি জিএমজি অ্যাসোসিয়েটসের স্বত্ত্বাধিকারী গোলাম মাওলার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি সৌদি আরব থেকে এ প্রতিবেদককে বলেন, আমার এজেন্সি থেকে যদি তিন হাজার লোক এসে থাকে, তাহলে সেই তুলনায় মাত্র ৩ জন শ্রমিক সমস্যর কথা জানিয়ে দূতাবাসে অভিযোগ দিয়েছে। এটা কি কোনো অভিযোগের মধ্যে পড়ে?
No comments:
Post a Comment