পিরিয়ড নারীদের কাছে একটি পরিচিত শব্দ।নারীর পিরিয়ড তাকে প্রতি মাসে গর্ভধারণের জন্য প্রস্তুত করে। পিরিয়ড শুরু হওয়ার আগে ও চলাকালীন নারীদের বিভিন্ন ধরনের শারীরিকি পরিবর্তন দেখা দেয়। পিরিয়ড চলাকালিন সময়ে ও পিরিয়ডের আগে পেট ব্যথা, বমিবমি ভাব হতে পারে। এছাড়া শরীরের হাত-পা, কোমড়, বুক ব্যথা হয়ে থাকে। এই সময়টা অন্য সময়ের চেয়ে একটু বেশি স্বাস্থ্য-সচেতন হতে হয়। কারণ আপনার সামান্য অসাবধানতার কারণে হতে পারে মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি।
পিরিয়ড কী
প্রতি চন্দ্রমাস পরপর হরমোনের প্রভাবে পরিণত মেয়েদের জরায়ু চক্রাকারে যে পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে যায় এবং রক্ত ও জরায়ু নিঃসৃত অংশ যোনিপথে বের হয়ে আসে তাকেই ঋতুচক্র বলে। মাসিক চলাকালীন পেট ব্যথা, পিঠ ব্যথা, বমি বমি ভাব হতে পারে।পিরিয়ডে ভালো মানের ন্যাপকিন ব্যবহার করা জরুরি। এছাড়া কোনোভাবেই একই কাপড় পরিষ্কার করে একাধিকবার ব্যবহার করা যাবে না। পিরিয়ডের সময় শরীর থেকে যে রক্ত প্রবাহিত হয়, তার মধ্যে ব্যাকটেরিয়া থাকে।
পিরিয়ডের ব্যথা খুবই যন্ত্রণাদায়ক। সব নারীদেরই কম বেশি পিরিয়ডের আগে ও পিরিয়ড চলাকালিন সময়ে পেট ব্যথা ও বমি বমি ভাব হয়ে থাকে। পেটের ব্যথার কারণে খুবই অস্বস্তিবোধ হয়। এছাড়া স্বাভাবিক কাজকর্মে ব্যঘাত ঘটে। অনেক ব্যথার সহ্য করতে না পেরে বিভিন্ন ধরনের ওষুধ খেয়ে থাকেন। তবে ওষুধ খাওয়া ছাড়া পিরিয়ডের এই ব্যথার যন্ত্রণা থেকে আপনি প্রশান্তি পেতে পারেন।
তালিকা থেকে কিছু খাবার বাদ দিন :
পিরিয়ড চলাকালীন খাদ্য তালিকা থেকে কিছু খাবার বাদ দিন। বাড়তি লবণ, চা-কফি বা ক্যাফেইন জাতীয় যে কোনো পানীয়, চিনি ও দুগ্ধ জাতীয় খাবার। এতে পিরিয়ডের সময় স্তন ও তলপেট ব্যথা হতে মুক্তি পাবেন।
ব্যায়াম :
অনেক মেয়েরই পিরিয়ডের আগে ও পরে স্তনে ব্যথা হয়। তাই সাবধানে ব্যায়াম করতে করতে হবে। এমন কোনো ব্যায়াম করবেন না যাতে বুকে চাপ পড়ে। এমন ব্যায়াম করুন, যেগুলো শরীরের নিচের অংশে কার্যকর। এক্ষেত্রে সাইকেল চালানো, হাঁটা, ভুল ব্যায়াম পরিস্থিতি আরও খারাপ করে দেবে।
স্তনে ব্যথা কমাবে :
কিছু বিশেষ ধরনের ব্যায়াম আছে, যেগুলো এই স্তনে ব্যথা কমায়।ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলে সেই ব্যায়ামগুলো করতে পারেন। স্তনকে সাপোর্ট দেয়, এমন ব্রা পরিধান করুন। সঠিক মাপের আরামদায়ক ব্রা ব্যথা কমাতে সহায়তা করবে।
ঠাণ্ডা লাগানো যাবে না :
পিরিয়ড চলাকালীন শরীরে ঠাণ্ডা লাগানো যাবে না। এ সময় ঠাণ্ডা লাগলে স্তন, হাত-পা ও কোমরের ব্যথা বেড়ে যাবে। এছাড়া পিরিয়ড চলাকালীন স্তনে কোনো প্রকার চাপ দেবেন না, এতে ব্যথা আরও বাড়বে।
গরম পানির সেক :
পিরিয়ড চলাকালীন তলপেট, স্তন, কোমর, হাত ও পায়ের ব্যথা অতিরিক্ত বেড়ে গেলে গরম পানির সেঁকা দিতে পারেন। তবে হালকা গরম তেল দিয়ে ব্যথায় অংশে ম্যাসেজ পারেন। যদি ব্যথা খুব বাড়ে তবে প্যারাসিটামল বা ব্যথা জাতীয় ওষুধ খেতে পারে। তবে অতিরিক্ত ওষুধ খাওয়া যাবে না।
ভিটামিনসমৃদ্ধ খাবার
পিরিয়ডের ব্যথায় কমাতে ভিটামিন ই এবং বি বেশ উপকারী। পিরিয়ডের সময় যাদের তীব্র ব্যথা হয় তারা ভিটামিন ই, বি১, বি৬, ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডযুক্ত খাবার খেলে উপকার পাবেন। যেমন -চিনা বাদাম, পেস্তা বাদাম, বাঁধাকপি, আম, মাছ, ওটমিল, কলা, ডিম, সবুজ শাকসবজি, গম, ডাল ইত্যাদি খাবারগুলো কেতে পারেন। এই খাবারগুলো পেশির সংকোচনজনিত পিরিয়ডের ব্যথা থেকে স্বস্তি পেতে সহায়তা করবে।
ব্যথা সারাতে মেথি
পিরিয়ডের ব্যথাসহ যে কোনো ব্যথা সারাতে ব্যথা মেথির জুড়ি নেই। মেথি একটি ভেষজ ওষুধ। এক চা চামচ পরিমাণ মেথি ভালো করে ধুয়ে নিন। এবার মেথিটুকু চিবিয়ে খেয়ে ফেলুন। দেখবেন ব্যথা থেকে মুক্তি মিলবে।
ডাক্তারের পরামর্শ:
শরীরে যে কোনো জায়গায় অতিরিক্ত ব্যথা অনুভব করলে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে পারেন।
গাইনি কনসালটেন্ট, বেদৌরা শারমিন।, সেন্ট্রাল হাসপাতাল লিমিটেড।
No comments:
Post a Comment