লিবিয়ায় অভিবাসীদের ওপর নির্যাতনের বিষয়টি ইউরোপীয় ইউনিয়নের জ্ঞাতসারে হচ্ছে বলে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল তাদের এক প্রতিবেদনে দাবি করেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশটিতে শরণার্থীদের ওপর যেভাবে অত্যাচার-নির্যাতন করা হয় তা তাদের আগে থেকেই জানা ছিল। অবৈধ অভিবাসীদের স্রোত ঠেকাতে ইইউ এসব বিষয়ে নিশ্চুপ ভূমিকা পালন করছে। এতে আরো বলা হয় যে, লিবিয়া উপকূলে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যারা এভাবে আসছে তাদের ওপর নির্যাতনকে এক অর্থে তারা সমর্থন করে যাচ্ছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, লিবিয়া উপকূলে অবৈধ অভিবাসীদের আসা রুখতে তারা সেখানকার কোস্টগার্ডকে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। শুধু তাই নয়, সেখানে জাহাজ এবং অর্থ দিয়েও সহায়তা করা হচ্ছে। আর ইইউ’র এই কাজ করার পিছনে তাদের স্বার্থ হচ্ছে যে যদি লিবিয়া উপকূলে কড়াকড়ি আরোপ করা হয় তাহলে এসব অভিবাসীর ইউরোপে ঢোকা বন্ধ হয়ে যাবে।
অ্যামনেস্টি বলছে,কোস্টগার্ডের মাঝেও বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে জড়িত হওয়ার প্রমাণ পাওয়া গেছে। তারা একাধারে এই মানবপাচার চক্রের সঙ্গে জড়িত আবার স্বার্থ পূরণ না হলে তারা অমানুষিক নির্যাতনের খেলায় মেতে উঠে। মানবাধিকার সংস্থাটি আরো অভিযোগ করে যে, অভিবাসী বা শরণার্থীদের তারা ইচ্ছেমতো অনির্দিষ্টকালের জন্য আটকে রাখে। তাদেরকে লিবিয়া সরকারের অবৈধ প্রবেশ রুখতে ডিটেনশন সেন্টার ডিসিআইএম’তে পাঠানো হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়,বিভিন্ন আটক কেন্দ্রে এভাবে ২০ হাজার লোককে তারা বন্দী করে রেখেছে। অভিযোগ রয়েছে,এসব অভিবাসীকে নির্যাতন,জোর করে কাজ করানো,বিভিন্নভাবে অর্থ আদায় করা হয়। এমনকি অনেকক্ষেত্রে তারা বিচারবহির্ভূত হত্যারও শিকার হয়। অ্যামনেস্টির ইউরোপীয় অঞ্চলের পরিচালক জন ডালহুইসেন বলেন, হাজার হাজার লোক এসব আটক কেন্দ্রে মানবেতর জীবনযাপন করছে। তারা প্রতিনিয়ত নানা ধরনের নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। বিবিসির সংবাদদাতার কাছে এখানে আটক অনেকে তাদের কষ্টের দিনের কথা উল্লেখ করে বলেছেন, এটি ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। একবাক্যে একে নরকের সঙ্গে তুলনা করা যেতে পারে।
গাম্বিয়া থেকে আসা আরেকজন অভিবাসী জানান, তাকে দিনের পর দিন অনাহারে থাকতে হয়েছে। আর মারধর সেতো প্রতিদিনকার বিষয়। তিনি বলেন, আমাকে তারা মারধর করতো টাকার জন্য। এমনকি তারা আমার দেশের বাড়িতে আমাকে দিয়ে ফোন করিয়েছে যাতে টাকা পাঠানো হয়। অবশেষে আমি তাদের টাকা দিতে বাধ্য হই।
No comments:
Post a Comment