ছোট বেলা থেকেই শান্ত আর লাজুক স্বভাবের মেয়ে রাজিয়া। সব সময় সে ঝগড়া-বিবাদ এড়িয়ে চলতো। মেয়ের সুখের আশায় তিন মাস আগে অনেক ধূমধাম করে বিয়ে দিয়েছি। কিন্তু বিয়ের কিছু দিন পর থেকেই যৌতুকের দাবিতে আমার মেয়েকে নির্যাতন করে আসছিল হুমায়ন। আমার মেয়ে রাজিয়া অত্যন্ত ধৈর্যশীল। সে আত্মহত্যা করতেই পারেনা, তাকে হত্যা করা হয়েছে। যৌতুক লোভী হুমায়ন তাকে নির্যাতন করে হত্যা করেছে। আমি এ হত্যার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।’ কান্না জড়িত কণ্ঠে কথাগুলো বলেন নিহত রাজিয়ার পিতা নাজিমদ্দিন।
গ্রামবাসী ও থানা সূত্রে জানা গেছে, মাত্র ৩ মাস আগে জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার বাগইল গ্রামের হুমায়নের সাথে বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার বড়-বিলঘড়িয়া গ্রামের নাজিম উদ্দিনের মেয়ে রাজিয়া সুলতানার (১৮) বিয়ে হয়। কিছু দিন যেতে না যেতেই দাম্পত্য জীবনে শুরু হয় কলহ। মোটা অংকের যৌতুকের দাবিতে নানা অজুহাতে হুমায়ন মাঝে মধ্যেই রাজিয়াকে মারপিট করতো। এর জের ধরে রবিবার সকালে হুমায়ন নববধূ রাজিয়াকে নিজের ঘরেই লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারপিট করতে থাকে। এক পর্যায়ে ওই নববধূ জ্ঞান হারিয়ে মাটিতে লুটে পরে। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। অবস্থা বেগতিক দেখে স্বামী হুমায়ন রাজিয়ার গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ঘরের চালের সঙ্গে তাকে ঝুলিয়ে রেখে চেঁচামেচি করে জানায়, রাজিয়া গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে।
তার চিৎকারে প্রতিবেশীরা ছুটে আসে। তারা কোন কিছু বুঝে ওঠার আগেই হুমায়ন পালিয়ে গিয়ে গা ঢাকা দেয়।
এতেই গ্রামবাসীর মনে সন্দেহ জন্মে রাজিয়াকে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে। গ্রামবাসী এ খবর কালাই থানার পুলিশকে জানিয়ে দেয় । খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে নববধূর লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্যে মর্গে প্রেরণ করে।
কালাই থানার এসআই ইদ্রিস আলী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। ফরেনসিক রিপোর্টের ভিত্তিতে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
No comments:
Post a Comment