সড়কপথে যুক্তরাষ্ট্রে ঢোকার লক্ষ্যে এসব তরুণ দক্ষিণ আমেরিকার ব্রাজিল, বলিভিয়া, ইকুয়েডর, কলম্বিয়া হয়ে পানামায় পৌঁছেছেন। এখন পাড়ি দিতে হবে বিশ্বের সবচেয়ে ভয়ংকর জঙ্গলের একটি ড্যারিয়ান গ্যাপ। দুর্গম পথে বিষাক্ত সাপ আর ভয়ংকর প্রাণী তো আছেই, সেই সঙ্গে মাদক ব্যবসায়ী আর গেরিলাদের অভয়ারণ্য পানামা-কলম্বিয়া সীমান্তবর্তী এ বন।
ভয়ংকর পরিস্থিতিতে পড়া এসব বাংলাদেশীর দাবি প্রতারিত হয়েছেন তারা। যে কোনো মূল্যে আমেরিকা যাওয়ার স্বপ্ন থাকলেও জানতেন না এতটা কঠিন পথ পাড়ি দিতে হবে। প্রলোভন দেখিয়ে ড্যারিয়েন গ্যাপে নিয়ে যায় দালালরা। তারপর মারধর করে বিপুল অংকের টাকা আদায়ের অভিযোগ তো আছেই। মনির নামে এক বাংলাদেশী বলেন, কি কারণে এ বনবাসে এসেছি নিজেই জানি না। আরেকজনকে দুর্বল চিত্তে ইয়া আল্লাহ ইয়া আল্লাহ বলতে শোনা যায়। ওই ভিডিও চিত্রে দেখা যায়, দুর্গম জঙ্গল, নদীনালার মধ্যে বাংলাদেশীরা জঙ্গল পাড়ি দিচ্ছেন। খাবারের অভাবে অনেকে ডোবার পানি পান করছেন। তাদের সঙ্গে সম্বল বলতে শুধু একটি ব্যাগ।
পানামার একটি এনজিওর হিসাবে গেল দুই বছরে যেসব অভিবাসী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ড্যারিয়েল গ্যাপ পাড়ি দেন তার মধ্যে তৃতীয় অবস্থানে বাংলাদেশীরা। বিপদসংকুল রুটের নানা জায়গায়, অস্থায়ী আবাসগুলোতে দেখা মেলে বাংলা শব্দের আঁকঝোঁকা। অনিশ্চিত পথে নামার আগে নাম-পরিচয় লিখে যান এসব বাংলাদেশী। শরিফ নামে এক বাংলাদেশী বলেন, আমার বিশ্বাস আল্লাহকে স্মরণ করলে সব বিপদ থেকে উদ্ধার মেলে। ধারণা করা হচ্ছে, প্রতি বছর ড্যারিয়ান গ্যাপ পাড়ি দিতে গিয়ে মৃত্যু হয় অন্তত ১০ হাজার মানুষের। দুর্গম সড়কের রাস্তায় রাস্তায় মানুষের খুলি আর হাড়গোড় পড়ে থাকতে দেখা গেছে। তারপরও এ কঠিন রুট বেছে নেন প্রতি বছর প্রায় ২৫ হাজার অভিবাসী।


No comments:
Post a Comment