মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর অভিযানের নামে সংখ্যালঘু মুসলিম রোহিঙ্গা নির্মূলের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। সেনাবাহিনীর হত্যা, অগ্নিসংযোগ ও ধর্ষণের মুখে রোহিঙ্গারা জীবন বাঁচাতে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। প্রতিদিনই রোহিঙ্গারা আশ্রয় নিতে ছুটে আসছে বাংলাদেশ সীমান্তে।
শনিবার কক্সবাজারের টেকনাফ ও উখিয়া সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশের চেষ্টাকালে রোহিঙ্গা বোঝাই ১১টি নৌকা ফেরৎ পাঠিয়েছে বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়ন (বিজিবি) সদস্যরা। প্রতিটি নৌকায় ১০ থেকে ১৫ জন করে রোহিঙ্গা ছিল। এদিকে জাতিসংঘ জানিয়েছে রাখাইন রাজ্যে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর দমন-পীড়নের মুখে অন্তত ২২ হাজার রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছে।
শুক্রবার এক বিবৃতিতে জাতিসংঘ এই তথ্য দিয়েছে। অন্যদিকে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার আহবানের মুখে আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক বলেছেন, মানবেতর পরিস্থিতির কারণে এখন পর্যন্ত ২ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থীকে জায়গা দেওয়া হয়েছে।
আর রাখাইন রাজ্যে মানবেতর পরিস্থিতি বিরাজ করায় সেখানে রোহিঙ্গাদের জন্য জরুরি মানবিক সাহায্য পৌঁছানোর সুযোগ দিতে মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ১৪টি দেশ। মিয়ানমারে দায়িত্বরত এসব দেশের রাষ্ট্রদূতরা এক যৌথ বিবৃতিতে এ আহ্বান জানিয়েছেন।
মিয়ানমারে অবস্থিত তুরস্ক, অস্ট্রিয়া, বেলিজিয়াম, কানাডা, ডেনমার্ক, ফিনল্যান্ড, ফ্রান্স, গ্রিস, আয়ারল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস, পোল্যান্ড, স্পেন, সুইডেন ও যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস যৌথ বিবৃতিতে বলেছে, মিয়ানমারের বন্ধু দেশ হিসেবে রাখাইনের মানবিক বিপর্যয় নিয়ে তারা উদ্বিগ্ন। সেই সঙ্গে রোহিঙ্গাদের কাছে মানবিক সাহায্য ঢুকতে না দেওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এসব দেশের রাষ্ট্রদূতরা।
নির্যাতিত রোহিঙ্গারা যেন নিজ ঘরে ফিরতে পারে সেজন্য মিয়ানমার সরকারকে চাপ দিতে যুক্তরাজ্যের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ব্রিটিশ এমপি রুশনারা আলী। গত ৭ ডিসেম্বর, পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসনকে লেখা এক চিঠিতে তিনি এই আহ্বান জানান। রোহিঙ্গাদের কাছে পূর্ণ মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর জন্যও মিয়ানমার সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে যুক্তরাজ্যকে আহ্বান জানান তিনি।
No comments:
Post a Comment