পাহাড়ের চূড়ায় অপরূপ নিদর্শন মাচু-পিচু। ঘটা করে পালন করা হল ইনকা সভ্যতার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রতœতাত্ত্বিক এই নিদর্শনটি আবিষ্কারের ১০০ বছর। এ নিয়ে উৎসবে মেতেছিল দক্ষিণ আমেরিকার দেশ পেরু। ইনকা ঐতিহ্যমোরা পোশাক পরে নৃত্য পরিবেশন করেছিল তারা। সঙ্গে ছিল প্রাচীন নাচ, বাঁশি আর ঢোল। পেরুর কোরা আন্দিজ পর্বতের ওপর প্রায় ৮০০ ফুট উচ্চতার এই দুর্গটি তৈরি হয়েছিল প্রায় ৬০০ বছর আগে। ষোড়শ শতাব্দীতে হঠাৎ এক গুটিবসন্তের মহামারীতে পর্বতচূড়ায় মুখরিত এই দুর্গ জনশূন্য এবং পরিত্যক্ত হয়ে যায়। তারপর ১৯১১ সালে মার্কিন প্রতœতাত্ত্বিক হিরেন বিংহেন আলমিজ পর্বতের ঘন জঙ্গল খুঁজে বের করেন হারিয়ে যাওয়া এই নগরীটি। ইনকা সভ্যতার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রতœতাত্ত্বিক নিদর্শন এই নগরীটিকে নিয়ে রহস্য আর গবেষণার যেন শেষ নেই। অনেকের কাছে এখনও অজানা, কীভাবে এত উঁচুতে এসে নির্মাণ করা হল এই নগরীটি, যার ছিল নিজস্ব সেচব্যবস্থা, আধুনিক স্থাপত্যকলা। কেন এই আধুনিক নগরী ছেড়ে গিয়েছিল ইনকারা তা আজও রহস্যঘেরা। ইনকাদের হারানো এ শহর নিয়ে তৈরি হয়েছে নানা কল্পকাহিনী। তারই খোঁজে বছরে প্রায় ১০ লাখ লোক বেড়াতে আসেন এ দুর্গটিতে। এই পর্যটকরাই পেরুবাসীর আয়ের অন্যতম উৎস। ইউনেস্কো ১৯৮৩ সালে নগরীটি তার ঐতিহ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে। আর সম্প্রতি এটি নির্বাচিত হয়েছে বিশ্বের সপ্তাশ্চর্যের একটি। এ সবকিছুই ব্যাপক গর্বের বিষয় পেরুবাসীর কাছে। তাই ১০০ বছর আগে সেখান থেকে চুরি হয়ে যাওয়া নিদর্শনগুলো ফেরত চান তারা। মতান্তরে বলা হয় এক বছর আগে মার্কিন প্রতœতাত্ত্বিক হিরেল বিংহেন আলমিজ পাহাড়ের ঘনজঙ্গল খুঁজে বের করেছিলেন হারিয়ে যাওয়া এই নগরটিকে। বিশ্ববাসীর কাছে তিনি পরিচয় করে দিয়েছিলেন এই নগরীটিকে। অন্যদিকে মাচু-পিচু থেকে প্রায় ৪৪ হাজার নিদর্শন চুরির দায়ও রয়েছে তার ঘাড়ে। পেরুবাসী চুরি হওয়া প্রায় ৪৪ হাজার নিদর্শনের পুরোটাই ফেরত চায়। সেগুলো এখন সংরক্ষিত আছে যুক্তরাষ্ট্রের ইয়েন বিশ্ববিদ্যালয়ে। তবে সাড়ে তিন শ’র মতো নিদর্শন ফেরত দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। আর বাকিগুলো ফেরত দেওয়ার দাবি তুলেছেন পেরুবাসী এ উৎসব পালনের সময়। এসব বিতর্কের মাঝে ঘটা করে করে পালন করা হল বিশ্বের দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকা মাচু-পিচুর ১০০ বছর। পেরুবাসী তাদের আয়োজন বেশ গর্বের সঙ্গে ভাগ করে নিয়েছে বিশ্ববাসীর সঙ্গে।
Sunday, April 16, 2017
Subscribe to:
Post Comments (Atom)


No comments:
Post a Comment