মার্কিন প্রেসিডেন্ট পদে ডোনাল্ড ট্রাম্পের শপথ গ্রহণের পর ওয়াশিংটনের সঙ্গে দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলোর জোট মারকোসুরের ভবিষ্যত্ সম্পর্ক অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে। এ অবস্থায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও প্যাসিফিক অ্যালায়েন্সের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক জোরদারের আগ্রহ প্রকাশ করেছে মারকোসুরভুক্ত দেশ ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনা। খবর এএফপি।
এক ফোনালাপে লাতিন আমেরিকার বাণিজ্য বৃদ্ধির লক্ষ্যে আঞ্চলিক সম্পর্ক দৃঢ় করার ব্যাপারে আলোচনা করেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট মিশেল তেমার এবং আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট মোরিসিও মাকরি। চলমান পরিস্থিতি মারকোসুরভুক্ত ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, প্যারাগুয়ে ও উরুগুয়ের (ভেনিজুয়েলা সাময়িকভাবে বরখাস্ত) মধ্যকার পারস্পরিক সহযোগিতা জোরদারের সঠিক সময় বলে মনে করেন তারা। মাকরি বলেন, দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলো যেসব ক্রমবর্ধমান বৈশ্বিক অনিশ্চয়তার মুখোমুখি হচ্ছে তা মোকাবেলায় ঐক্যবদ্ধ হওয়া ছাড়া কোনো বিকল্প নেই।
বর্তমানে নিজেদের স্বার্থ সমুন্নত রাখতে ইইউর সঙ্গে ব্যবসায়িক চুক্তি করা প্রয়োজন বলে মনে করেন মাকরি-তেমার। সেই সঙ্গে মধ্য আমেরিকার চারটি দেশের (চিলি, মেক্সিকো, কলম্বিয়া ও পেরু) বাণিজ্যিক জোট প্যাসিফিক অ্যালায়েন্সের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনের ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেন তেমার। মাকরির সঙ্গে লাতিন আমেরিকার ইতিহাসের সর্বোচ্চ মাত্রার একত্রীকরণের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানান তেমার। তবে আলোচনায় মেক্সিকো ও দক্ষিণ আমেরিকার সম্পর্ক স্থাপনের বিষয়টি অধিক গুরুত্ব পেয়েছে।
এদিকে দায়িত্ব গ্রহণের পর টিপিপি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নাম প্রত্যাহার এবং মেক্সিকো ও কানাডার সঙ্গে নাফটা চুক্তি পুনরালোচনার অভিপ্রায় ব্যক্ত করেন ট্রাম্প। এছাড়া মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল নির্মাণ ও মেক্সিকান পণ্যের ওপর ২০ শতাংশের অধিক করারোপের হুমকি দেন তিনি।
ট্রাম্পের এসব সংরক্ষণবাদী নীতির কারণে মেক্সিকোকে সম্ভাবনাময় অংশীদার হিসেবে দেখছে মারকোসুর। বিশেষজ্ঞরা জানান, মার্কিন নির্ভরশীলতা কমাতে মেক্সিকো দক্ষিণ আমেরিকান দেশগুলোর সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক স্থাপন করলে তা ব্রাজিলের মতো অস্থিতিশীল অর্থনীতির দেশগুলোর জন্য ফলপ্রসূ হবে।
উল্লেখ্য, দেশের ক্ষমতা দীর্ঘদিন বাম নেতাদের হাতে থাকায় বর্তমানে আর্থিক মন্দা কাটাতে উদারপন্থী অর্থনৈতিক সংস্কার কাজে নিয়োজিত আছেন ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার বাজারমুখী প্রেসিডেন্ট তেমার ও মাকরি। ১৯৯১ সালে প্রতিষ্ঠিত মারকোসুরের প্রতিবন্ধকতা দূর করে বাণিজ্য বৃদ্ধির আশা করছেন তারা।
No comments:
Post a Comment