দক্ষিণ চীন সাগরের বিরোধপূর্ণ একটি দ্বীপের কাছে মার্কিন যুদ্ধজাহাজের অবস্থান নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে চীন। এ ঘটনাকে ‘গুরুতর রাজনৈতিক ও সামরিক উস্কানি’ হিসেবে বর্ণনা করেছে বেইজিং। মার্কিন যুদ্ধজাহাজকে সতর্ক করতে এরই মধ্যে ওই অঞ্চলে সামরিক জাহাজ ও যুদ্ধবিমান পাঠানো হয়েছে।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউএসএস স্টেথেম নামের মার্কিন রণতরীটি চীন অধিকৃত প্যারাসেল দ্বীপের অংশ ট্রাইটনের ১২ নটিক্যাল মাইলের মধ্য দিয়ে গেছে। অপরদিকে এক মার্কিন কর্মকর্তার বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, ইউএসএস স্টেথেম ডেসস্ট্রোয়ারটি বিতর্কিত ট্রিটন দ্বীপের কমপক্ষে ১২ নটিক্যাল মাইল দূর দিয়ে গেছে। জাতিসংঘ নিয়মানুসারে কোনও দ্বীপের উপকূল থেকে ১২ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত এলাকাই শুধু ওই দ্বীপ নিজেদের এলাকা বলে দাবি করতে পারে। ফলে মার্কিন রণতরী যেখানে অবস্থান করেছে সেটা নিয়ে অভিযোগ তোলার অবকাশ নেই চীনের। প্রসঙ্গত, ওই দ্বীপের দাবি নিয়ে চীনকে অনেকদিন ধরেই সতর্ক করে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু চীনের দাবি এটা তাদের সার্বভৌম অধিকার। তবে তাইওয়ান ও ভিয়েতনামও দ্বীপটির মালিকানা দাবি করে আসছে।
দক্ষিণ চীন সাগরে মার্কিন যুদ্ধদজাহাজের এই তৎপরতা চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে নতুন করে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। একে গুরুতর রাজনৈতিক ও সামরিক উষ্কানি হিসেবে উল্লেখ করে নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার স্বার্থে চীন যেকোনো পদক্ষেপ নিতে পারে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লু কাংয়ের দেয়া এক বিবৃতির বরাত দিয়ে দেশটির সরকারি বার্তা সংস্থা সিনহুয়া জানায়, মার্কিন যুদ্ধজাহাজকে সতর্ক করতে এরই মধ্যে বেইজিং ওই অঞ্চলে সামরিক জাহাজ ও যুদ্ধবিমান পাঠিয়েছে। এর ফলে দুই ক্ষমতাধর দেশের মধ্যে আবারো টানাপোড়েনের সৃষ্টি হতে পারে বলে আশংকা করা হচ্ছে।
দক্ষিণ চীন সাগরের প্রায় পুরোটাই নিজেদের বলে দাবি করে থাকে চীন। সংশ্লিষ্ট অন্যান্য দেশও ওই এলকার প্রবাল প্রাচীর ও দ্বীপের মালিকানা দাবি করে থাকে। বেশ কয়েক বছর ধরেই এই অঞ্চলে কৃত্রিম দ্বীপ তৈরি এবং সামরিক স্থাপনা নির্মাণ করে আসছে চীন। অপরদিকে যুক্তরাষ্ট্রের রণতরী ও যুদ্ধজাহাজগুলো দক্ষিণ চীন সাগরে নিয়মিত টহল দিয়ে থাকে। এরকম প্রেক্ষাপটে এ অঞ্চলে সামরিকীকরণ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও চীন দীর্ঘদিন ধরেই পরস্পরকে দোষারোপ করে আসছে। এএফপি ও বিবিসি।
No comments:
Post a Comment