পিরিয়ড হওয়া মানেই স্বাভাবিক জীবনে একটা ছন্দপতন, একটু বেশি শারীরিক ও মানসিক কষ্ট। কিন্তু পিরিয়ড সময়মতো না হওয়াটাও খুবই দুশ্চিন্তার ব্যাপার।
পিরিয়ড অপছন্দ করেন না—এমন নারী পৃথিবীতে খুঁজে পাওয়া যাবে না। পিরিয়ড হওয়া মানেই স্বাভাবিক জীবনে একটা ছন্দপতন, একটু বেশি শারীরিক ও মানসিক কষ্ট। কিন্তু পিরিয়ড সময়মতো না হওয়াটাও খুবই দুশ্চিন্তার ব্যাপার। অনেকেই ভয় পেয়ে ভাবে, পিরিয়ড লেট মানেই তিনি গর্ভধারণ করেছেন। আসলে কিন্তু তা নয়! বেশি কিছু ঘটনার কারণে পিরিয়ড লেট হতে পারে। শারীরিক ও মানসিক উভয় ধরনের কারণেই তা হতে পারে।
আপনার পিরিয়ড যদি দুই-তিন মাস লেট হয়, তাহলে অবশ্যই ডাক্তারকে জানাতে হবে। এ ছাড়া আপনি ক্যালেন্ডার বা পিরিয়ড ট্র্যাকার অ্যাপ ব্যবহার করতে পারেন, তাতে কবে, কখন পিরিয়ড হয়েছে তার হিসেব থাকে ও সমস্যাটির সমাধান করতে ডাক্তারের সুবিধা হয়। পিরিয়ড লেট হওয়ার পেছনে সাধারণ কারণগুলো হলো—
১) জন্ম নিয়ন্ত্রণ
আপনি যদি হরমোনাল বার্থ কন্ট্রোল ব্যবহার করেন (পিল, প্যাচ বা আইইউডি) তাহলে পিরিয়ড লেট হতে পারে, অনিয়মিত হতে পারে বা স্বাভাবিকের চেয়ে কম হতে পারে। বার্থ কন্ট্রোল ব্যবহারে এ ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হওয়াটা স্বাভাবিক।
২) অন্যান্য ওষুধ
থাইরয়েড সমস্যার ওষুধ, স্টেরয়েডস, অ্যান্টিসাইকোটিকস ধরনের ওষুধ পিরিয়ড লেট হওয়ার পেছনে ভূমিকা রাখতে পারে। তাই ওষুধ চলাকালীন পিরিয়ড লেট হলে ভয় পাবেন না, ডাক্তারকে জিজ্ঞেস করে নিন ওষুধের কারণেই এমনটা হচ্ছে কি না।
৩) ভারী ব্যায়াম
ম্যারাথন, ট্রায়াথলন বা কোনো টুর্নামেন্টের জন্য ভারী বায়্যাম শুরু করলে শরীরের ওপর নিঃসন্দেহে এর প্রভাব পড়বে। এই ব্যায়াম শরীরের ওপর যে স্ট্রেস ফেলে, তার কারণে দুটি পিরিয়ডের মাঝে সময় বাড়তে পারে, অর্থাৎ স্বাভাবিকের চেয়ে দেরি হতে পারে পিরিয়ড। তবে তিন মাস টানা পিরিয়ড দেখা না দিলে অবশ্যই চিন্তিত হতে হবে।
৪) স্ট্রেস
ভারী ব্যায়ামের ফলে শরীরে যেমন স্ট্রেস পড়ে, তেমন মানসিক স্ট্রেস যেমন বিবাহ বিচ্ছেদ, ভালোবাসার মানুষের সাথে সম্পর্কে ভাঙন বা প্রিয়জনের মৃত্যু—এসব স্ট্রেস থেকেও পিরিয়ড লেট হতে পারে। এর ধকল সামলে উঠলে পিরিয়ড স্বাভাবিক হয়ে আসবে।
৫) ওজনের অতিরিক্ত পরিবর্তন
পিরিয়ডের ওপর বিশেষ কোনো খাবারের প্রভাব নেই। তবে চট করে ওজন কমে গেলে শরীরে ইস্ট্রোজেন উৎপাদন কমে যায়। এতে পিরিয়ড হালকা হয় বা একেবারে বন্ধ হয়ে যায়। অন্যদিকে শরীরে বেশি মেদ জমলেও ইস্ট্রোজেনের উৎপাদন প্রভাবিত হয়, ফলে পিরিয়ড লেট হয়।
৬) বিদেশ ভ্রমণ
লম্বা বিমান ভ্রমণের পর হওয়া জেট ল্যাগ মানে শুধু ঘুমের সমস্যা নয়। ঘুমের রুটিনে এই পরিবর্তনের কারণে পিরিয়ডও লেট হতে পারে।
৭) ক্রনিক অসুখ
পিরিয়ড মিস হলে বা লেট হলে তা শরীরে বড় কোনো রোগের ইঙ্গিত হতে পারে। এ কারণে ডাক্তারকে জানানো ভালো। কিছু ক্রনিক অসুখে পিরিয়ড লেট বা একেবারে বন্ধ হয়ে থাকে, যেমন পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম বা পিসিওএস, থাইরয়েড ও এ ধরনের হরমোনের অসুখ, এসটিআই বা যৌন রোগ।
সূত্র: গুড হাউজকিপিং
No comments:
Post a Comment