Social Icons

Saturday, February 9, 2019

‘মানবিক সহায়তা’র নামে ভেনেজুয়েলায় আগ্রাসনের পথ খুঁজছে যুক্তরাষ্ট্র ?

যুক্তরাষ্ট্রের ‘মানবিক সহায়তা’র প্রশ্ন এরইমধ্যে ভেনেজুয়েলায় চলমান সংকটের প্রধান আলোচ্য হয়ে উঠেছে। স্বঘোষিত প্রেসিডেন্ট জুয়ান গুইডোর ডাকে সাড়া দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ত্রাণ পাঠালেও ভেনেজুয়েলার সেনাবাহিনী তা দেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করতে দিচ্ছে না। প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো বলছেন, মানবিক সহায়তার নামে সাম্রাজ্যবাদী হস্তক্ষেপের পায়তারা করছে যুক্তরাষ্ট্র। তার এই দাবিকে অযৌক্তিক মনে করছে না কানাডাভিত্তিক গ্লোবাল রিসার্চ। তাদের এক বিশ্লেষণ অনুযায়ী ত্রাণ পাঠানোর মধ্য দিয়ে ভেনেজুয়েলায় আগ্রাসনের পথ খুঁজছে যুক্তরাষ্ট্র। ওই বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, ব্রাজিল ও কলম্বিয়াকে সঙ্গে নিয়ে প্রেসিডেন্ট মাদুরোকে উৎখাতের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। তাদের উদ্দেশ্য, মানবিক সহায়তার নামে সেনা পাঠিয়ে ভেনেজুয়েলার প্রাকৃতিক সম্পদে দখলদারিত্ব প্রতিষ্ঠা। একই ধরনের ইঙ্গিত মিলেছে টাইম ম্যাগাজিনের এক বিশ্লেষণে। এতে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে, ত্রাণের নামে ভেনেজুয়েলায় প্রবেশ করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। সেনাবাহিনীতে বিভক্তি সৃষ্টি করে বাস্তবায়ন করতে চায় আগ্রাসন বাসনা। এদিকে আটলান্টিক মিডিয়ার সহযোগী প্রতিষ্ঠান ডিফেন্স ওয়ানকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন নিরাপত্তা বিশ্লেষক বলেছেন, আগ্রাসনকে বাস্তব করতে সম্মতি আদায়ের চেষ্টা চালাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।
নির্বাচনি কারচুপির অভিযোগ আর অর্থনৈতিক সংকট ভেনেজুয়েলার জনগণকে তাড়িত করেছে সরকারবিরোধী বিক্ষোভে। বিক্ষোভের সুযোগে ২৩ জানুয়ারি নিজেকে অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করেন বিরোধীদলীয় নেতা জুয়ান গুইদো। সে সময়ই তিনি ঘোষণা দেন, ভেনেজুয়েলাবাসীর সহায়তায় তিনি আন্তর্জাতিক ‘ত্রাণ সহযোগীদের’ নেটওয়ার্ক বানাবেন। যুক্তরাষ্ট্রের দাবি তার অনুরোধেই ভেনেজুয়েলাবাসীর জন্য ত্রাণ পাঠিয়েছে ওয়াশিংটন।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির খবর থেকে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের ত্রাণবাহী ট্রাকগুলো কলম্বিয়ার কুকুতা সীমান্তে পৌঁছলেও তা ভেনেজুয়েলায় ঢুকতে দিচ্ছে না সে দেশের সেনাবাহিনী। কেননা প্রেসিডেন্ট মাদুরো মনে করছেন, ত্রাণের নামে সাম্রাজ্যবাদী হস্তক্ষেপের বাসনা বাস্তবায়ন করতে চায় পশ্চিমারা। গ্লোবাল রিসার্চের বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, কুকুতায় কলম্বিয়ার আধাসামরিক বাহিনী ও পাচারকারী চক্রের সদস্যদের সরব উপস্থিতি রয়েছে। এবং যারা গতবছর মাদুরোকে হত্যা করতে চেয়েছিলো তারা সেখানেই প্রশিক্ষণ নিয়েছিলো।    
দীর্ঘমেয়াদী অর্থনৈতিক যুদ্ধের কবলে পড়ে খাদের কিনারে এসে দাঁড়িয়েছে ভেনেজুয়েলার অর্থনীতি। মার্কিন নিষধাজ্ঞার কবলে পড়ে বছরে হাজার হাজার কোটি ডলার ক্ষতি হয়েছে তাদের। গ্লোবাল রিসার্চের বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, ওই অর্থনৈতিক ক্ষতির কারণে সৃষ্ট মানবিক সংকটকে সামনে এনেই যুদ্ধের পথ সুগম করতে চাইছে ট্রাম্প প্রশাসন। এতে সাহায্য করছে তাদের মিত্র কলম্বিয়া ও ব্রাজিল। বিশ্লেষণে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে, মানবিক সহায়তা দিতে সেনা পাঠিয়ে সেখানে সংঘাত উসকে দেওয়ার চেষ্টা নিতে পারে যুক্তরাষ্ট্র।
সেই ২০১৭ সালের মাঝামাঝি থেকেই ভেনেজুয়েলায় সামরিক আগ্রাসনের বাসনার কথা প্রকাশ্যে বলছেন ট্রাম্প। গ্লোবাল রিসার্চ দাবি করেছে, সে কারণেই পেন্টাগন হোয়াইট হাউস থেকে আগ্রাসন-বিরোধীদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এখন ট্রাম্পের চারপাশে যারা আছেন তারা সবাই তার মতোই মাদুরোকে হটাতে চান। দখলে নিতে চান ওই দেশের প্রাকৃতিক সম্পদের। টাইম ম্যাগাজিনে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে আশঙ্কা জানানো হয়েছে, গুইদোকে সমর্থন না দেওয়া সামরিক বাহিনীতে বিভক্তি সৃষ্টির মধ্য দিয়ে আগ্রাসন বাসনা সফল করার প্রচেষ্টা নিতে পারে যুক্তরাষ্ট্র। ওয়াশিংটন সেনাবাহিনীর ওপর চাপ সৃষ্টি করতে চায় যেন মাদুরো সরকারের ঐক্য ভেঙে পড়ে।  

যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে গুইদোর অনুরোধে মানবিক সহায়তা পাঠানোর কথা বলা হলেও মার্কিন নিরাপত্তা পরামর্শক জন বোল্টন ভেনেজুয়েলায় প্রকাশ্য সামরিক অভ্যুত্থানের ঘোষণা দেন তার আগেই। টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতীয় নিরাপত্তা বিশ্লেষক স্টিভ ভ্লাদেক ডিফেন্স.কমকে বলেছেন, গুইডোকে স্বীকৃতি দেওয়ার মধ্য দিয়ে মাদুরোকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে অকার্যকর করে রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র। জাতিসংঘ নিরপেক্ষতা ক্ষুণ্ন হওয়ার ভয়ে গুইডোকে স্বীকৃতি দেওয়ার প্রক্রিয়ায় সামিল হতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। তবে স্টিভ ভ্লাদেক মনে করছেন, মার্কিন স্বীকৃতি পাওয়া গুইডোকে দিয়ে ভেনেজুয়েলার মাটিতে সামরিক হস্তক্ষেপের অনুমোদন নিতে পারে যুক্তরাষ্ট্র।

No comments:

Post a Comment

 

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি

সম্পাদকীয় কার্যলয়

Rua padre germano mayar, cristo rio -80040-170 Curitiba, Brazil. Contact: +55 41 30583822 email: worldnewsbbr@gmail.com Website: http://worldnewsbbr.blogspot.com.br

সম্পাদক ও প্রকাশক

Jahangir Alom
Email- worldnewsbb2@gmail.com
worldnewsbbbrazil@gmail.com
 
Blogger Templates