শ্বাসযন্ত্রের ওপরের অংশ তথা নাক থেকে শুরু করে ব্রঙ্কাস পর্যন্ত অংশের সংক্রমণকে স্বল্পমেয়াদি শ্বাসনালির সংক্রমণ বলা হয়। সাধারণত এ জাতীয় সংক্রমণ ৭ দিন পর্যন্ত স্থায়ী হয়ে থাকে। তাই এদের স্বল্পমেয়াদি সংক্রমণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়ে থাকে।
শ্বাসনালি অনেকগুলো অংশের সমন্বয়ে গঠিত। যেমন– নাক, ফ্যারিংস, ল্যারিংস, ট্রাকিয়া, ব্রঙ্কাস। এর সবগুলো স্বল্পমেয়াদি সংক্রমণের আওতায় পড়ে। সংক্রমণজনিত রোগগুলোর মধ্যে সাধারণ সর্দি-কাশি, স্বল্পমেয়াদি ফ্যারিনজাইটিস ও টনসিলাইটিস, ল্যারিনজাইটিস, সাইনোসাইটিস, ব্রঙ্কাইটিস অন্যতম। গঠনগত দিক থেকে এই অংশগুলোর মিল থাকায় সংক্রমণজনিত অংশগুলোর উপসর্গগুলোর মধ্যে অনেকটাই মিল দেখা যায়।
যে কোনো বয়সের নারী বা পুরুষ ব্রঙ্কাইটিস সংক্রমণে আক্রান্ত হতে পারে। তবে শিশু ও বৃদ্ধদের মধ্যে এ জাতীয় সংক্রমণের প্রকোপ সবচেয়ে বেশি।
এ ছাড়া অন্য কোনো রোগে মারাত্মকভাবে অসুস্থ ব্যক্তিও সহজেই এ সংক্রমণে আক্রান্ত হতে পারে। ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস উভয় প্রকার জীবাণু দ্বারাই ব্রঙ্কাইটিস সংক্রমণ হতে পারে। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে ভাইরাসজনিত সংক্রমণই দায়ী। সবচেয়ে বেশি ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস এর জন্য দায়ী।
রোগী সাধারণত হাঁচি, নাক দিয়ে পানি পড়া, নাক বন্ধ হয়ে থাকা, দুর্বলতা বোধ করা, জ্বর জ্বর ভাব বা মাংসপেশির ব্যাথা নিয়ে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে পারে। পরে রোগীর কাশি শুরু হয়। কাশিতে সাধারণত শুস্ক বা অল্প কফ বের হতে পারে।
অনেক সময় কফের সঙ্গে সামান্য রক্ত আসতে পারে, যা রোগীকে অনেক সময় আতঙ্কিত করে তোলে। তবে এ রোগে সাধারণত শ্বাসকষ্ট হয় না। যে কারণে বুক পরীক্ষা করলে তেমন সুনির্দিষ্ট কোনো সমস্যা পাওয়া যায় না।
অধিকাংশ ক্ষেত্রে রোগের লক্ষণগুলো বিচার করে স্বল্পমেয়াদি ব্রঙ্কাইটিস রোগ নির্ণয় করা যায়। অধিকাংশ সময়েই কোনো পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রয়োজন হয় না। তবে কফের সঙ্গে রক্ত গেলে বুকের এক্সরে বা ব্রঙ্কোসকপির সাহায্যে রক্ত যাওয়ার কারণ নির্ণয়ের চেষ্টা করা উচিত।
উপসর্গভিত্তিক চিকিৎসাই এ রোগের জন্য যথেষ্ট। যেমন- নাক দিয়ে পানি পড়া, শুস্ক কাশি, হাঁচি ইত্যাদি উপসর্গের জন্য কোডিন জাতীয় ওষুধ ভালো কাজ করে। বাজারে কফ প্রদায়ী যেসব সিরাপ আছে, সেগুলো এ রোগের চিকিৎসায় তেমন কোনো কাজে আসে না।
তবে কাশির সঙ্গে হলুদ বা হলদেটে কফ গেলে এন্টিবায়োটিকের সাহায্য নেওয়া ভালো। সর্বোপরি চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী রোগীর চিকিৎসা ও ওষুধ সেবন করা উচিত।
No comments:
Post a Comment