এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশিদের কাছে বর্তমানে অন্যতম জনপ্রিয় দেশ মালয়েশিয়া।
একসময় শুধু শ্রমিক রপ্তানির জন্যে পছন্দের শীর্ষে থাকলেও পরবর্তীতে পড়াশোনার জন্য শিক্ষার্থীদের কাছেও আগ্রহের দিক থেকে প্রথম সারিতে চলে আসে দেশটি।
বৈধ ও অবৈধভাবে অন্তত ৮ থেকে ১০ লাখের মতো বাংলাদেশি রয়েছে মালয়েশিয়ায়।
মালয়েশিয়ার ১৩টি প্রদেশের সবজায়গাতেই আনাচে- কানাচে রয়েছেন বাংলাদেশিরা। পুরো দেশের প্রায় সবখানেই দেখা মেলে তাদের।
কুয়ালালামপুরের টুইন টাওয়ার, পেনাংয়ের বাতুফিরিঙ্গি সৈকত, তেরেঙ্গানুর মসজিদ, মেলাকার মালয় রেস্তেরা, পাহাঙ্গের চা বাগান, পেরাকের রাবার বাগান, লংকাউই দ্বীপ কোথায় নেই বাংলাদেশিরা?
জীবন ও জীবিকার তাগিদে অর্থ উপার্জন করতে মালয়েশিয়ায় এসেছেন বিপুলসংখ্যক বাংলাদেশি।
এদেশের আসা বাংলাদেশিরা খুব অল্প সময়ে ভাষা ও মালয় সংস্কৃতি আয়ত্ত্ব করে নিতে পারছেন। শ্রমবাজারেও তাদের চাহিদা বেশ। কিন্তু যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও কর্মসংস্থানের হিসাবে পিছিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ।
এর কারণ হিসেবে জানা গেছে, মেধা এবং যোগ্যতায় এগিয়ে থাকলেও নানা-রকম সুযোগের অভাব এবং ভিসা জটিলতার জন্য চাকরির দৌঁড়ে পিছিয়ে পড়ছেন বাংলাদেশিরা।
ফরহাদ মাহবুব। চলতি বছরের জুলাইতে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় নটিংহাম থেকে ব্যবসায় শিক্ষায় স্নাতক সম্পন্ন করেছেন এই বাংলাদেশি তরুণ। এখন চেষ্টা করছেন একটা চাকরির।
ফরহাদ জানান, প্রায় ২শর বেশি কোম্পানিতে আবেদন করেছেন তিনি। তবে সাড়া পাচ্ছেন না। বিদেশি কর্মচারীদের ক্ষেত্রে বাংলাদেশিদের চাহিদা অপেক্ষাকৃত অনেক কম। আসিয়ান দেশগুলোর প্রার্থীদের বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়। জব হান্টিংয়ের দিক থেকে ভারতীয়, কোরিয়ান এবং জাপানিজদের সফলতা বেশি।
বেতন কাঠামোর দিক থেকে কিছুটা এগিয়ে থাকলেও মালয়েশিয়ার রিঙ্গিতের ধসের জন্য তা এখন অনেকটা কম। একজন নতুন স্নাতক সম্পন্ন কর্মচারীদের বেতন কাঠামো শুরু হয় ১৮০০ রিঙ্গিত থেকে ২৭০০ রিঙ্গিতের মধ্যে (৩৬,০০০ টাকা থেকে ৫৪,০০০ টাকা)। এছাড়া অভিজ্ঞতা সম্পন্নদের বেতন কাঠামো ৩০০০ রিঙ্গিত থেকে ৫০০০ রিঙ্গিতের মধ্যে (৬০,০০০ থেকে ১ লাখ টাকা)। তবে বিদেশি কর্মজীবীদের ক্ষেত্রে সরকারি ট্যাক্স দিতে হয় বেতনের ২৬ শতাংশ।
আলাপ হয় এদেশের জনপ্রিয় বীমা কোম্পানিতে কর্মরত সাবরিনা জামালের সঙ্গে। গত ২ বছর ধরে এখানে কর্মরত তিনি।
তিনি জানান, মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশিরা বেশিরভাগ দালান-স্থাপনা, রাবার বাগান অথবা রেস্টুরেন্টে কাজের জন্য সমাদৃত। এরপর আছেন বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা। চাকরির ক্ষেত্রে আমাদের দেশের মানুষের সুযোগটা আসলেই কম। কারণ এখানে বাংলাদেশিরা পরিচিত হয়েছে অন্যভাবে। একজন ভারতীয় হলেই মনে করা হয় তারা আইটি ক্ষেত্রে ভাল হবে। সে ধরনের কোনো ট্রেডমার্ক বাংলাদেশিদের বেলায় নেই।
মালয়েশিয়ায় কর্মরত বাংলাদেশি প্রবাসীরা জানান, আইটি ক্ষেত্রে বাংলাদেশিদের ভালো সুযোগ রয়েছে। আছে শিক্ষকতার সুযোগ। শিক্ষকতার দিক থেকে অনেকেই সফলতা অর্জন করেছেন। সুযোগ কাজে লাগিয়ে ও যোগ্যতা প্রমাণ করে বাংলাদেশি এদেশে সাফল্যের চূড়ায় পৌঁছাবে বলে তাদের প্রত্যাশা।
Wednesday, December 2, 2015
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment