ব্যর্থতার গ্লানিতে পর্যবসিত ২০১৫ সালটি বাংলাদেশের ফুটবলের জন্য ছিল রিতিমত দুঃস্বপ্ন। আর তাইতো ফুটবলের ওপর থেকে কমতি ভালবাসা আর দর্শকপ্রিয়তা যখনই শূন্যের কোঠায় নামতে বসেছিলো, ঠিক সে সময়ই সব পুরোনোকে, গ্লানিকে মুছে দিতে এল ২০১৬ সাল, সেই সাথে উপরি পাওনা হিসেবে নতুন কোচ, দেশীয় কোচ মারুফুল হক।
আর তাতেই যেন রাতারাতি বদলে গেল বাংলাদেশ ফুটবল। বছরের ১ম আন্তর্জাতিক মানের প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচে শ্রীলংকাকে ৪-২ গোলে উড়িয়ে দারুন একটি বছরেরই যেন আভাস দিলো বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল।
বলের নিয়ন্ত্রণ আর আক্রমণে ঘুরে দাঁড়ানো বাংলাদেশকে দেখা গেল বঙ্গবন্ধু গোল্ড কাপের প্রথম ম্যাচে। তাতে সাফ ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপের ব্যর্থতা কিছুটা হলেও পেছনে ফেলতে পারল মামনুলরা। শ্রীলঙ্কাকে ৪-২ গোলে হারিয়ে বঙ্গবন্ধু গোল্ড কাপে দারুণ সূচনাও পেলো মারুফুল হকের দল।
চতুর্থ বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের উদ্বোধনী ম্যাচে শুক্রবার বিকেল পৌনে তিনটায় যশোরের শামস-উল-হুদা স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হয় স্বাগতিক বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা। পরিবেশ-দর্শক সবই ছিলো মামুনুলদের পক্ষে। ঘরের মাঠের এ সুবিধাটা কাজে লাগিয়ে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপে শুভ সূচনা করে বাংলাদেশ।
যশোরের শামস-উল-হুদা স্টেডিয়ামে শুক্রবার ম্যাচে হেমন্ত ভিনসেন্ট বিশ্বাসকে ছাড়াই সেরা একাদশ সাজান বাংলাদেশ কোচ মারুফুল হক। শুরু থেকেই প্রতিপক্ষের শিবিরে কাঁপন ধরায় মারুফুলের শীষ্যরা। নিজেদের মাঝে দেওয়া-নেওয়ার মধ্যদিয়ে আক্রমণ রচনা করে লাল সবুজরা। ম্যাচের ১৮তম মিনিটে লিড নেয় বাংলাদেশ। শাখাওয়াত হোসেন রনির গোলে এগিয়ে যায় মারুফুল হকের দলটি। তবে, দুই মিনিটের ব্যবধানে সমতায় ফেরে শ্রীলঙ্কা। স্বাগতিকদের রক্ষনের ভুলে পেনাল্টি লাভ করে লঙ্কানরা। তাতে গোল করে সমতায় ফিরলেও দুই মিনিটের মাথায় মামুনুলের কর্ণার থেকে ২২ মিনিটের মাথায় ইয়াসিন খান গোল করেন। ফলে, আরেকবার এগিয়ে যায় লাল সবুজরা।
ম্যাচের ২৮তম মিনিটে বাংলাদেশ তৃতীয় গোলের সম্ভাবনা জাগিয়ে তোলে। তবে, মামুনুলের দুর্বল শটটি ঝাঁপিয়ে পড়ে রুখে দেন লঙ্কান গোলরক্ষক। ৩৩ মিনিটের মাথায় আবারো মাঝমাঠের দারুণ বোঝাপড়ায় গোলের সম্ভাবনা জাগিয়ে তোলে স্বাগতিকরা। নাসিরকে লক্ষ্য করে মাঝমাঠ থেকে লঙ্কানদের ডি-বক্সে বল বাড়ান রনি। তবে, গোলবারের ঠিক আগ মুহূর্তে পৌঁছেও বল নিয়ন্ত্রণে রাখতে না পারায় নাসির গোল বঞ্চিত হন। সঙ্গে গোলবঞ্চিত হয় মারুফুল হকের বাংলাদেশ।
বল নিজেদের আয়ত্বে রেখে আর মাঝমাঠ গুছিয়ে দারুণ খেলতে থাকে বাংলাদেশ। তবে, সঙ্গে নিজেদের রক্ষণভাগও আগলে রাখে। ম্যাচের ৩৯ মিনিটে দর্শকে ভরা স্টেডিয়ামে আবারো উল্লাস দেখা যায়। মাঝমাঠ থেকে মামুনুলের লম্বা পাসে বল পান রনি। সেখানে থেকে আবারো মামুনুলের পা থেকে বল চলে যায় লঙ্কান ডি-বক্সে। জামাল ভূঁইয়া-ওয়ালি ফয়সালের দারুণ বোঝাপড়ায় পুনরায় বল পান রনি। তবে, তার জোরালো শটটি গোলবারের উপর দিয়ে চলে যায়।
বল নিজেদের আয়ত্বে রেখে আর মাঝমাঠ গুছিয়ে দারুণ খেলতে থাকে বাংলাদেশ। তবে, সঙ্গে নিজেদের রক্ষণভাগও আগলে রাখে। ম্যাচের ৩৯ মিনিটে দর্শকে ভরা স্টেডিয়ামে আবারো উল্লাস দেখা যায়। মাঝমাঠ থেকে মামুনুলের লম্বা পাসে বল পান রনি। সেখানে থেকে আবারো মামুনুলের পা থেকে বল চলে যায় লঙ্কান ডি-বক্সে। জামাল ভূঁইয়া-ওয়ালি ফয়সালের দারুণ বোঝাপড়ায় পুনরায় বল পান রনি। তবে, তার জোরালো শটটি গোলবারের উপর দিয়ে চলে যায়।
প্রথমার্ধ শেষ হওয়ার তিন মিনিট আগে সোহেল রানাকে দুরন্ত গতিতে বল নিয়ে ঢুকতে দেখে লঙ্কান রক্ষণের এক ফুটবলার হাত দিয়ে বল থামিয়ে দেন। হলুদ কার্ডও দেখতে হয় তাকে। ফলে, পেনাল্টি বক্সের ঠিক বাইরে থেকে বাংলাদেশ ফ্রি-কিক আদায় করে। সোহেল রানার নেওয়া ফ্রি-কিকে পায়ের আলতো টোকায় শ্রীলঙ্কার জালে বল জড়িয়ে দেন নাবিব জীবন।
শাখাওয়াত হোসেন রনি, ইয়াসিন খান ও নাবিব জীবনের গোলে প্রথমার্ধ শেষে ৩-১ এ এগিয়ে থাকে বাংলাদেশ।
শাখাওয়াত হোসেন রনি, ইয়াসিন খান ও নাবিব জীবনের গোলে প্রথমার্ধ শেষে ৩-১ এ এগিয়ে থাকে বাংলাদেশ।
দ্বিতীয়ার্ধে শ্রীলঙ্কা বেশ গোছানো ফুটবল খেলে। মাঝমাঠে শক্তি বাড়ায় তারা। বাংলাদেশের অ্যাটাকিং মিডফিল্ডারদের ব্লক করার চেষ্টা ছিল চোখে পড়ার মতো। সুফলও পায় দলটি। আউট সাইড মিডফিল্ডে বলের যোগান কমে যায়। বেশ বিপাকে পড়ে বাংলাদেশ।
দ্বিতীয়ার্ধের ষষ্ঠ মিনিটেই ব্যবধান কমায় সাঞ্জিবা। জামাল ভুঁইয়ার কাছ থেকে বল কেড়ে নিয়ে বক্সে ঢুকে পড়েন। অগোছালো রক্ষণভাগের সুযোগ নিয়ে সাঞ্জিবা গোল আদায় করে নেন।
এরপর চলে আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণ। খেলার ৭২ মিনিটে প্রায় সমতায়ই ফিরছিল লঙ্কানরা। সোহেল ঠিক মতো বার ছেড়ে বেরিয়ে এসেও ক্লিয়ার করতে ব্যর্থ হন। ভাগ্য ভালো বল গোলমুখে না এসে সাইড লাইন দিয়ে চলে যায়!
খেলা শেষ হওয়ার পাঁচ মিনিট আগে ব্যবধান বাড়িয়ে নেয় বাংলাদেশ। সোহেলের গোল কিক সরাসরি চলে যায় লঙ্কানদের বক্সে। ওখানে ছিলেন রনি। গোলরক্ষক এগিয়ে এসে বল রিসিভ করতে যান। লঙ্কানদের এক ডিফেন্ডার গোলরক্ষককে না দেখে হেড দিয়ে বল গোলে দেন! ভেবেছিলেন সতীর্থ গোলরক্ষক লাইনে আছেন। রনি ততক্ষণে সেখানে চলে যান। হেসেখেলে বল জালে পাঠান তিনি।
খেলা শেষ হওয়ার পাঁচ মিনিট আগে ব্যবধান বাড়িয়ে নেয় বাংলাদেশ। সোহেলের গোল কিক সরাসরি চলে যায় লঙ্কানদের বক্সে। ওখানে ছিলেন রনি। গোলরক্ষক এগিয়ে এসে বল রিসিভ করতে যান। লঙ্কানদের এক ডিফেন্ডার গোলরক্ষককে না দেখে হেড দিয়ে বল গোলে দেন! ভেবেছিলেন সতীর্থ গোলরক্ষক লাইনে আছেন। রনি ততক্ষণে সেখানে চলে যান। হেসেখেলে বল জালে পাঠান তিনি।
খেলার বাকি সময়টুকু রক্ষণাত্মক খেলে বাংলাদেশ। নির্ধারিত সময় শেষে বাংলাদেশ জয় পায় ৪-২ ব্যবধানে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এটি বাংলাদেশের একাদশতম জয়। গত আসরে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়েই সেমি-ফাইনালে উঠেছিল স্বাগতিকরা।
শুক্রবার (০৮ জানুয়ারি) বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার মধ্যকার প্রথম ম্যাচ ছাড়াও সোমবার (৯ জানুয়ারি) মালয়েশিয়া ও নেপাল, মঙ্গলবার (১০ জানুয়ারি) বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-২৩ ও বাহরাইন এবং বুধবার (১১ জানুয়ারি) মালদ্বীপ ও কম্বোডিয়ার মধ্যকার ম্যাচ যশোরের শামস উল হুদা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে।
No comments:
Post a Comment