ঘূর্ণিঝড় রোয়ানু আঘাত হানতে যাচ্ছে। ভয়াবহ বিপদ নিয়ে আসছে এই ঝড়।
কিন্তু এর নামকরণ রোয়ানু কেন? রোয়ানু শব্দটি মালদ্বীপের। এর অর্থ নারিকেলের ছোবড়ার তৈরি দড়ি। মালদ্বীপই এ নামটি প্রস্তাব করেছিল।
বর্তমানে সব ঝড়েরই নাম দেয়া হয়। সব দেশই নাম দেয়। তারপর পর্যায়ক্রমে ঝড়গুলোর নাম হয়ে থাকে। সেই সূত্র ধরে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সাগর তীরের আট দেশের আবহাওয়া দপ্তর ও বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার দায়িত্বপ্রাপ্ত প্যানেলের তালিকা অনুযায়ী এ ঘূর্ণিঝড়ের নাম দেয়া হয়েছে ‘রোয়ানু’। ঘূর্ণিঝড়ের নাম হয় সহজ, যাতে বিজ্ঞানী থেকে সাধারণ মানুষ- সবাই তা সহজে মনে রাখতে পারে।
বঙ্গোপসাগর কিংবা ভারত মহাসাগরের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে রোয়ানুর পর কোনো ঝড় হলে এর নামকরণ করবে ‘মিয়ানমার’। ইউএনঅ্যাসকাপের একটি প্যানেল এ অঞ্চলের আট দেশের প্রতিনিধি ভারত মহাসাগর থেকে সৃষ্ট ঝড়ের নামকরণ করে থাকে। গতকাল বাংলাদেশে আঘাত হানা ঝড় রোয়ানুর নামকরণ করে দ্বীপ দেশ মালদ্বীপ। রোয়ানুর অর্থ ‘নারকেল ছোবড়ার দড়ি’। এরপর মিয়ানমারের দেয়া ঝড়ের নামটি হবে ‘কিয়ান্ট’ (কুধহঃ). মিয়ানমারের পরের নামটি হবে ওমানের ‘নাদা’ (ঘধফধ). ওমানের পর নামকরণ করবে যথাক্রমে পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড, বাংলাদেশ ও ইন্ডিয়া। এ নামগুলো হবে যথাক্রমে ভারদাহ, মা’রুথা, মোরা, সাগর এবং অক্ষি।
আবহাওয়াবিদেরা জানিয়েছেন, অনেক ঘূর্ণিঝড় সাগরে সৃষ্টি হয়ে আবার সাগরেই দুর্বল হয়ে যায়। সে কারণে এসব ঘূর্ণিঝড়ের নাম তেমন পরিচিতি পায় না। যেমন পরিচিতি পেয়েছিল ২০০৭ সালে বাংলাদেশে আঘাত হানা সিডর অথবা আইলার নাম। সিডর ও আইলা বাগেরহাট অঞ্চলে ব্যাপক ক্ষতি করেছিল। এখনো বাগেরহাট অঞ্চলের মানুষ সিডরের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারেনি। সিডর ও আইলার পর বেশ কিছু ঝড় বয়ে যায়। কিছু ঝড় ভারতে আঘাত হানে আবার কিছু মিয়ানমারে।
২০০৮ সালে মিয়ানমারে আঘাত হানা নার্গিসকে অনেকেই মনে রেখেছে। মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে নার্গিস ব্যাপক ক্ষতি করে। সেনা অধ্যুষিত মিয়ানমারে মিডিয়ার বিচরণ তেমন নেই বলে নার্গিসের ক্ষতির কথা তেমনভাবে প্রকাশিত হয়নি। কিন্তু টেকনাফ অঞ্চলের মানুষ মনে রেখেছে ওই ঝড়টিকে। কারণ টেকনাফের অনেক ব্যবসায়ী মিয়ানমারে ব্যবসার উদ্দেশ্যে যান এবং মিয়ানমারের ব্যবসায়ীরাও এখানে আসেন।
নার্গিস ছাড়াও সাইকোন লায়লা ২০১০ সালে, থেইন ২০১১ সালে, নিলম ২০১২ সালে এবং পাইলিন ২০১৩ সালে আঘাত করে ভাবতে। ২০১৩ সালের মে মাসে মহাসেন বাংলাদেশের চট্টগ্রাম, বরিশাল ও পটুয়াখালী অঞ্চল দিয়ে বয়ে যায়।
No comments:
Post a Comment