অনন্য এক ইতিহাসের সামনে আর্জেন্টিনার ফুটবল জাদুকর লিওলেন মেসি। এবার তিনি দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
এজন্য শতবর্ষী কোপা আমেরিকার ফাইনালে চিলির বিরুদ্ধে নামার চব্বিশ ঘণ্টা আগে বলেছেন, 'এবার ইতিহাসটা বদলে দিতে চাই। চ্যাম্পিয়ন হতে চাই।'
প্রেসব্রিফিংয়ে বার্সেলোনার এই তারকা বলেন, 'আর্জেন্টিনার যা ফুটবল ঐতিহ্য তাতে আমাদের আরও ট্রফি জেতা উচিত। ট্রফি জেতার দিক দিয়ে আমরাও বাকি বড় দেশগুলোর সঙ্গে এক ব্র্যাকেটে থাকতে চাই।'
পরপর দুই বছর ফাইনালে গিয়েও আর্জেন্টিনাকে শূন্যহাতে ফিরতে হয়েছে। এবার শাপমোচনের ফাইনালের আগে সতীর্থদের কাছে সর্বস্ব উজাড় করে খেলার অনুরোধ করেছেন ২৩ বছরের শিরোপা-খরা ঘোচাতে মরিয়া আর্জেন্টিনা অধিনায়ক লিওনেল মেসি।
যুক্তরাষ্ট্রের ইস্ট রাদারফোর্ডে বাংলাদেশ সময় সোমবার সকাল ৬টায় কোপা আমেরিকার শতবর্ষী আসরের ফাইনালে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন চিলির মুখোমুখি হবে আর্জেন্টিনা।
গত বছর ফাইনালে এই চিলির কাছে হেরেই শিরোপা জয়ের স্বপ্ন ভেঙেছিল মেসিদের। আর ২০১৪ সালে ব্রাজিল বিশ্বকাপের ফাইনালে জার্মানির কাছে ১-০ গোলে হেরেছিল তারা।
এবার ইতিহাস বদলাতে চান মেসি, 'এখন অন্য কিছু নিয়ে ভাবার সময় নয়। কারণ, আমরা এখানে যা অর্জন করতে এসেছিলাম তার খুব কাছে চলে এসেছি। গত বছর থেকে আমরা দল হিসেবে অনেক উন্নতি করেছি। আমরা খুব ভালোভাবে এখানে এসেছি। আমরা খুব রোমাঞ্চিত এবং ফাইনালে খেলতে উন্মুখ হয়ে আছি।'
ক্লাব ফুটবলে মেসির অর্জনের ডালিটা বেশ পূর্ণ হলেও জাতীয় দলের হয়ে এখনও তেমন কিছু জেতা হয়নি। ১৯৯৩ সালের কোপা আমেরিকা জয়ের পর আর কোনো শিরোপার মুখ দেখেনি আর্জেন্টিনা।
দেশবাসীর এই আক্ষেপ এবার দূর করতে চান মেসি, 'আমি ইতিহাস বদলাতে চাই এবং জাতীয় দলের হয়েও চ্যাম্পিয়ন হতে চাই।'
তিনি বলেন, 'টুর্নামেন্ট জুড়েই আর্জেন্টিনা খুব নিখুঁত একটি দল ছিল। টানা তৃতীয় ফাইনালে হারাটা হয়তো ব্যর্থতা হবে না, কিন্তু তা হবে বিরাট হতাশার।'
তিনবার ফাইনালে হার। গত দু'বছরের মধ্যে দু'বার। বিশেষজ্ঞদের মতে, এটাই হয়তো মেসির শেষ সুযোগ দেশের হয়ে ট্রফি জেতার।
মেসি নিজেও জানেন, 'জানি না এটাই আমার দেশের হয়ে ট্রফি জেতার শেষ সুযোগ কি না। কিন্তু আমাদের সব কিছু উজাড় করে দিতে হবে শতবর্ষের কোপা জিততে। এই নিয়ে চতুর্থবার কোনো ফাইনাল খেলছি। গল্পটা এ বার পাল্টাতে চাই।'
মেসি ট্রফি জিতে ইতিহাস পাল্টাতে পারবেন কি না সেটা তো সময় বলবে। কিন্তু রাজপুত্রের উপস্থিতি গোটা যুক্তরাষ্ট্রকে যে পাল্টে দিয়েছে তাতে কোনো সন্দেহ নেই।
দেশের হয়ে প্রথম ট্রফি আর মেসির মধ্যে এবারও দাঁড়িয়ে সেই চিলি। শতবর্ষের কোপার প্রথম ম্যাচে আর্জেন্টিনা ২-১ জিতেছিল চিলির বিরুদ্ধে।
কিন্তু টুর্নামেন্ট যত এগিয়েছে, চিলি ফর্ম ফিরে পেয়েছে। আর আর্জেন্টিনা মিনি হাসপাতালে পরিণত হয়েছে। ফাইনালের আগে এখনও অ্যাঞ্জেল দি মারিয়া, নিকোলাস গায়তানের মতো ফুটবলাররা অনিশ্চিত।
এজিকুয়েল লাভেজ্জি আগেই হাত ভেঙে ছিটকে গিয়েছেন। মার্কোস রোহের খেলা নিয়ে রয়েছে যথেষ্ট শংকা।
অন্যদিকে চিলি দলে নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে আর্তুরো ভিদাল ফিরলেও মিডফিল্ডার পাবলো হার্নান্দেজের রয়েছে হাঁটুর চোট। শংকা আছে মার্সেলো দিয়াজকে নিয়েও।
এর মধ্যেও হুংকার দিয়ে রেখেছেন চিলির কোচ। হুয়ান অ্যান্থনিও পিজ্জি বলছেন, 'প্রতিটা ম্যাচ জেতার মানসিকতা নিয়ে খেলতে হয়। আমার দলের ফুটবলাররা দেশের জন্য সব কিছু উজাড় করে দেয়। আমার ছেলেরা সবাই কিন্তু ভাল ফর্মে আছে।'
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment