সাম্প্রতিক গুম-খুনের সঙ্গে আওয়ামী লীগের লোকজন জড়িত এমন অভিযোগ করে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেছেন, বিদেশী হত্যাসহ বিভিন্ন হত্যাকাণ্ডে জড়িত কাউকে সরকার ধরতে পারেনি। কারণ, লোকগুলো তাদের ছিল।
তিনি বলেন, দেশে-বিদেশকে দেখানের জন্য সাঁড়াশি অভিযান চালানো হয়েছে। কিন্তু এই অভিযানে যারা গ্রেফতার হয়েছে, তাদের বেশির ভাগই অপরাধী ছিল না।
খালেদা জিয়া বলেন, 'আমরা বলবো- এই অভিযান বন্ধ করুন, এরকম এলোপাতাড়ি ধরা বন্ধ করুন। সত্যিকার অপরাধী যারা তাদেরকে ধরুন, আমরা আপনাদের সহযোগিতা করতে চাই।'
মঙ্গলবার রাজধানীর ইস্কাটন লেডিস ক্লাবে ঢাকা মহানগর বিএনপি আয়োজিত ইফতার মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার টার্গেট বিএনপি। তাই বিএনপিকে ধ্বংস করার চেষ্টা করছে। হাসিনা মনে করছে- বিএনপি ধ্বংস হলেও ক্ষমতা পাকাপোক্ত। বিএনপি ধ্বংস করতে পারলেই দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকার বন্দোবস্ত হয়ে যাবে।'
তিনি বলেন, দেশে গণতন্ত্র, সুশাসন, আইনের শাসন ও নিরাপত্তা নেই। যে কোন সময়ে যে কোন স্থানে ঘটনা ঘটতে পারে। কোনো মানুষের জীবন নিরাপদ নয়।
খালেদা জিয়া বলেন, 'আজকে দেশের কোনো মানুষের জান-মালের কোনো নিরাপত্তা নাই। কিন্তু জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয়, স্বঘোষিত প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা নিয়ে সবাই উদ্বিগ্ন।'
তার দাবি, 'আজকে মসজিদের মাইকে আজান পর্যন্ত কাউকে দিতে দেয়া হয় না। এর কী কারণ? আমরা দেখেছি- মসজিদে আজান হবে, আমরা আজানের অপেক্ষায় বসে থাকি। আজান শুনে আমরা নামাজ পড়ব, মানুষ সেই অপেক্ষায় বসে থাকে। কিন্তু হাসিনার নিরাপত্তার ব্যাপারে নাকি মসজিদের মাইকে আজান দেয়া যাবে না। এ হলো অবস্থা। কাজেই দেশটা আমরা কোথায় নিয়ে যাচ্ছি?'
বিএনপি চেয়ারপারসন আরও বলেন, 'কয়েকদিন আগে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ প্রতিবাদ করেছে যে তাদের বাড়ি-ঘর, জমি-জমা ও মন্দির ক্ষমতাসীনরা দখল করে নিয়েছে। তাদের ওপর অত্যাচার-জুলুম চলছে। প্রতিনিয়ত তাদের মেয়েরা অত্যাচারিত হচ্ছে, নির্যাতিত হচ্ছে। তারা প্রতিবাদ পর্যন্ত করছে, কিন্তু কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। কেনে? ছাত্রলীগের লোকজন এসব ঘটনা ঘটাচ্ছে, তাদের ধরা হচ্ছে না।'
সাংবাদিক শফিক রেহমানের গ্রেফতারের সমালোচনা করে খালেদা জিয়া বলেন, 'শফিক রেহমান একজন সাংবাদিক, রাজনীতি করেন না, কোনো দলের সঙ্গে সেভাবে সম্পৃক্ত নন। আমাদের সঙ্গে একটু জানাশুনা আছে, মোটামুটি। তার দোষটা কি?'
'হাসিনার ছেলে জয় (সজীব ওয়াজেদ জয়) যে, তিনশ' মিলিয়ন প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা লোপাট করেছে এবং এটা নিয়ে তদন্ত চলছে আমেরিকায়- এই কাগজগুলো তার (শফিক রেহমান) কাছে ছিলে, তার কাছে রেখেছিলেন। এই অপরাধে তাকে জেল খাটতে হচ্ছে। এই হলো বিচার!' বলেন তিনি।
ইফতার মাহফিলে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া, মির্জা আব্বাস ও গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, কেন্দ্রীয় নেতা চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ, এনাম আহমেদ চৌধুরী, অ্যাডভোকেট আহমেদ আজম খান ও আবদুল আউয়াল মিন্টু, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকনসহ বিএনপি ও ২০ দলীয় জোটের নেতারা অংশ নেন।
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment